২১ জুলাই, ২০২১ ২২:৫৯

গরুর নাড়ি-ভুঁড়ি রপ্তানি করে বছরে ৩২০ কোটি টাকা আয়

অনলাইন ডেস্ক

গরুর নাড়ি-ভুঁড়ি রপ্তানি করে বছরে ৩২০ কোটি টাকা আয়

এক সময় গরুর নাড়ি-ভুঁড়ি (ওমাসম) ও পেনিস (পিজল) উচ্ছিষ্ট হিসেবে ফেলে দেয়া হতো। কিন্তু বর্হিবিশ্বে গরুর এসব উচ্ছিষ্টের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। করোনা সংকটেও অপ্রচলিত এ পণ্যের রপ্তানি অর্ধেকে নেমে এলেও টাকার অংকে ৩২০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। করোনা সংকট না থাকলে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা ছাড়াতো এর রপ্তানি আয়।  

বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর ৩২০ কোটি টাকার সমমূল্যের ওমাসম বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এসব পণ্যের সিংহভাগই রপ্তানি হচ্ছে প্রধানত চীন, হংকং, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে। রপ্তানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ খাতের রপ্তানিকারকরা মিলে বাংলাদেশ নাড়িভুঁড়ি ও জনকেন্দ্রিয় রপ্তানিকারক সমিতি নামে নতুন একটি সমিতি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন। কোরবানির পর সংশ্লিষ্টরা ওমাসম ও পিজল সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

Bangladesh Pratidin
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কোরবানির ঈদের ওমাসম সংগ্রহের অন্যতম সময়। বর্তমানে এক টন ওমাসম আট হাজার ডলারে রপ্তানি হচ্ছে। ফলে প্রতি ডলার সমান ৮৫ টাকা ধরে এক টন ওমাসম বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬ লাখ ৮০ হাজার। এক কনটেইনারে ২৮ টন ওমাসম বিদেশে রপ্তানি হয়। গড়ে প্রতি মাসে ১৪ কনটেইনার ওমসাম বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এর ফলে বছরে এখন ১৬৮ কনটেইনার ওমাসম বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। ফলে ১৬৮টি কনটেইনার ওমাসমের মূল্য ৩১৯ কোটি ৮৭ লাখ ২০ হাজার টাকা।
আড়ৎদাররা কসাই বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রতি পিস কাঁচা (লবণযুক্ত) পিজল কিনেন ৫০ থেকে ৭০ টাকা দামে। যা প্রক্রিয়াজাত শেষে প্রতিকেজি রপ্তানিকারকের কাছে বিক্রি করেন ৫৫০-৬৫০ টাকা দামে। আড়ৎদার থেকে রপ্তানিকারক পর্যায়ে প্রতিকেজি প্রক্রিয়াজাত ওমাসম বিক্রি হয় ৫০০-৬৫০ টাকা। প্রক্রিয়াজাত ছাড় প্রতিকেজি কাঁচা (লবণেযুক্ত) ওমাসম বিক্রি হয় ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়।

রপ্তানির পর বিশ্ব বাজারে প্রতি টন ওমাসম বিক্রি হয় আট হাজার ডলার। রপ্তানি শেষে প্রতি টন পিজল বিক্রি হয় আট থেকে সাড়ে আট হাজার ডলার।

বাংলাদেশ ওমাসম এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘করোনা সংকটের কারণে ওমাসম রপ্তানি অর্ধেকে নেমে এসেছে। এখন গড়ে প্রতি মাসে ১৪টি কনটেইনার ওমাসম বিদেশে রপ্তানি হয়। দেশের ওমাসমের চাহিদা অনেক। আমার পরামর্শ, গরু-মহিষ জবাইয়ের পরে ওমাসম ও পিজল লবণ দিয়ে সংগ্রহ করা দরকার। এর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পাশাপাশি কর্মসংস্থানও বাড়বে।’

জানা গেছে, বর্তমানে চট্টগ্রামের ১০ জনসহ সারাদেশের ৪০ জন ব্যবসায়ী গরুর ওমাসম ও পিজল রপ্তানি করছেন। প্রত্যন্ত অঞ্চলে লোক ঠিক করে বছরজুড়েই তারা ওমাসম ও পিজল সংগ্রহ করেন। কোরবানির সময় ওমাসম ও পিজল সংগ্রহ করা হয় বছরের মোট চাহিদার এক তৃতীয়াংশ। তারপর প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে নাড়ি-ভুঁড়ি থেকে চর্বি বের করে ফেলা হয়।

করোনা সংকটে এখন চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে মাসে ১৪টি কনটেইনার ওমাসম রপ্তানি হয় এবং একেকটি কনটেইনারে ৬০ থেকে ৭০ হাজার পিস ওমাসম থাকে বলে জানান প্রস্তাবিত সমিতির সদস্যরা।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্র জানায়, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১১৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকা মূল্যের ওমাসম রপ্তানি হয়। অবশ্য ওমাসম রপ্তানি সমিতির দাবি হচ্ছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তা ১৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে বিশ্বে ৩২ হাজার কোটি টাকার ওমাসমের বাজার রয়েছে বলে সমিতির কাছে তথ্য রয়েছে। তারপরও করোনা সংকটেও ৩২০ কোটি টাকার ওমাসম বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হচ্ছে।

সূত্র: বাংলানিউজ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর