কাস্টমারের দেনা-পাওনাসহ সার্বিক তথ্য দেওয়ার জন্য ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠান ইভ্যালিকে তিন সপ্তাহ সময় বেধে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গতকাল বুধবার (১১ আগস্ট) বিকালে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির প্রথম বৈঠক শেষে এ কথা জানান মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) হাফিজুর রহমান।
এদিকে যেসব কাস্টমারকে ইভ্যালি রিফান্ড চেক দিয়েছিল, তাদের চেকগুলো ক্যাশ করা যাচ্ছে না। টেলিগ্রাম, হোয়াটঅ্যাপ ও ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারসহ বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ায় গ্রাহকদের একাধিক গ্রুপ রয়েছে। ইভ্যালির কর্মকর্তাদের চেক ছেঁড়ার প্রস্তাব দেওয়ার মোবাইল কথোপকথনের রেকর্ড অনেক ক্রেতা এসব গ্রুপে শেয়ার করছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন গণমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে খবর প্রকাশ করা হয়েছে।
এ অবস্থায় অগ্রিম টাকা নেওয়ার পর দীর্ঘসময়েও যেসব গ্রাহককে পণ্য না দিয়ে রিফান্ড চেক দিয়েছিল ইভ্যালি, তাদের অনেকের মোবাইল ফোনে কল করে চেকগুলো ছিঁড়ে ফেলে ছেঁড়ার ভিডিও পাঠাতে বলেছেন ইভ্যালির কর্মকর্তারা। তারা বলেছেন, যারা চেক ছিঁড়ে ভিডিও পাঠাবে, তাদের ব্যাংক একাউন্টে রিফান্ডের টাকা ডিপোজিট করা হবে।
গ্রুপগুলোতে ক্রেতারা অভিযোগ করে বলেছেন, গত জানুয়ারি থেকে সাইক্লোন অফারে বাইক অর্ডার করে এখন পর্যন্ত ডেলিভারি না পাওয়া গ্রাহকদের অগ্রিম তারিখ উল্লেখ করে দ্য সিটি ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের রিফান্ড চেক দিয়েছিল ইভ্যালি। নির্ধারিত তারিখে ক্রেতারা যেন চেকগুলো ব্যাংকে জমা না দেন; সেজন্য গতমাসে ফোন করে তাদের অনুরোধ করা হয়েছিল। তারপরও যেসব কাস্টমার চেক জমা দিয়েছে, তাদের বড় অংশই বাউন্স ও স্টপ পেমেন্ট হয়েছে বলে অনেক ক্রেতা অভিযোগ করছেন।
ব্যাংকাররা জানান, সাধারণত, অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত ব্যালেন্স না থাকলে এবং একাউন্ট হোল্ডারের স্বাক্ষরে গড়মিল হলে চেকগুলো বাউন্স বা রিজেক্ট করা হয়। আর কারও নামে একাউন্টহোল্ডার চেক ইস্যু করার পর ওই চেক নম্বর ব্যাংকে পাঠিয়ে যখন পেমেন্ট করতে নিষেধ করা হয়, তখন ওই চেক জমা দিলেও ব্যাংক টাকা দেয় না। এটাকে স্টপ পেমেন্ট বলা হয়।
ক্রেতারা জানান, গত সোমবার থেকে ইভ্যালির কর্মকর্তারা কাস্টমারদের মোবাইল ফোনে কল করে তাদের নামে ইস্যু হওয়া চেক ছিঁড়ে- তার স্পষ্ট ভিডিও পাঠাতে বলেছে নির্ধারিত কিছু হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে। যারা চেক ছিঁড়ে ভিডিও পাঠাবে, তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাওনা টাকা জমা দেওয়া হবে বলে জানাচ্ছেন তারা। যারা চেক ছিঁড়ে ভিডিও পাঠাবে না, তাদের পাওনা নিয়ে জটিলতা হবে বলেও সতর্ক করেছেন ইভ্যালির কর্মকর্তারা।
ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল কাস্টমারদের চেক ছিঁড়ে ভিডিও পাঠাতে বলার কথা গণমাধ্যমকে স্বীকার করে বলেছেন, আমাদের মিডল্যান্ড ব্যাংকের একাউন্ট অফ আছে। তাই চেক রিপ্লেস না করে আরটিজিএস (রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট) করছি। যেসব কাস্টমার চেক ছিঁড়ে ভিডিও পাঠিয়েছে, আমরা তাদের সবাইকে রিফান্ড দিয়েছি। ভবিষ্যতে আগে কাস্টমারদের ব্যাংক একাউন্টে টাকা ডিপোজিট করব, পরে চেক ছেঁড়ার ভিডিও পাঠাতে বলব।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ