গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে গ্রেফতার মুফতি কাজী ইব্রাহিমকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বুধবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমান শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এবং টাকা আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগে মোহাম্মদপুর থানায় দু'টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এর আগে, মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তার বিরুদ্ধে দশ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই হাসানুজ্জামান। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম আবু সুফিয়ান নোমান তার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড শুনানির সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মুফতি ইব্রাহীম একজন হাদিসবিশারদ। তিনি কোনো রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। তিনি কোরআন ও হাদিসের আলোকে বক্তব্য দেন। তিনি দেশ ও সরকারের নামে কোনো উসকানিমূলক কথা বলেননি। তার কথায় সরকারের পতন হয়ে যাবে, সরকার এতটা দুর্বল নয়। হয়রানিমূলকভাবে তার বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাকে দুই দিন ডিবি হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাই রিমান্ডের কোনো যৌক্তিকতা নেই।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন বলেন, মুফতি ইব্রাহীম একজন ইসলামী বক্তা। আমি নিজেও মাঝে মাঝে ওনার বক্তব্য শুনি। কিন্তু সম্প্রতি মুফতি ইব্রাহীম বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছেন। এর পেছনে কারা জড়িত তা বের করতে তদন্ত কর্মকর্তার প্রার্থিত ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের আর্জি জানাচ্ছি।
এ সময় কাজী ইব্রাহীম কান্না জড়িত কণ্ঠে আদালতকে বলেন, আমি দেশ, সরকার ও বঙ্গবন্ধুর পক্ষে কথা বলেছি। আমি তাদের বিরুদ্ধে কথা বলিনি। এই সোনার বাংলাদেশ ৩০ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি। এ দেশের ক্ষতি আমরা চাই না। আমি সরকার বা শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য দিইনি, বরং তাদের পক্ষেই কথা বলেছি।
এরপর আদালত কাজী ইব্রাহিমের উদ্দেশে বলেন, রিমান্ড মানে আপনাকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জিজ্ঞাসা করবে। আপনাকে যা জিজ্ঞাসাবাদ করে, ঠিকমতো উত্তর দেবেন। রিমান্ড মানে অন্য কিছু না যে মারধর করবে। এ বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা আছে। রিমান্ড মানে ভয়-ভীতির কিছু না।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক