রবিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা
পেশাজীবীদের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক

আন্দোলন সফলে বাড়াতে হবে জনসম্পৃক্ততা

নিজস্ব প্রতিবেদক

আন্দোলন সফল করতে বিএনপিকে আরও জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা। তারা বলেছেন, শুধু দলীয় নেতা-কর্মী দিয়ে আন্দোলন সফল হয় না। আন্দোলনে সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণ থাকতে হবে। আর সে লক্ষ্যে বিএনপিকে এখন থেকেই কাজ করার পরামর্শ দেন নেতারা। গতকাল গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মতবিনিময় সভায় পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা এসব কথা বলেন। এতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভাপতিত্ব করেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে দুই দফা সভার পর পেশাজীবী সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভা শেষ করেছে বিএনপি। শুক্র ও শনিবার পেশাজীবীদের সঙ্গে এ সভা হয়। এ দুই দিনে ৩২টি পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা অংশ নেন।

বেলা সাড়ে ৩টায় শুরু হওয়া শেষ দিনের মতবিনিময় সভায় সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, জাতীয় প্রেস ক্লাব, ইউট্যাব, বিএফইউজে, ডিইউজে, ডিআরইউ, জিয়া পরিষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম, জি-৯, জিয়া পরিষদ, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্তত ৩২টি পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা অংশ নেন।

শুরুতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের দলের নেতারা মতামত দিয়েছেন। আমরা পেশাজীবীদের মতামত নিচ্ছি। বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া সম্পূর্ণ মিথ্যা ও সাজানো মামলায় দীর্ঘদিন ধরে কারাবন্দী। আজকে দেশে গণতন্ত্রের যে সংকট, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এ থেকে উত্তরণে সবার মতামত আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ইকবাল মাহমুদ টুকু, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রিয়াজুদ্দিন নসু, সহদফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মনির হোসেন, বেলাল আহমেদ এবং চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার।

পেশাজীবী সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ড. মাহবুব উল্লাহ, শওকত মাহমুদ, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, কামাল উদ্দিন সবুজ, আবদাল আহমেদ, অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, আবদুল লতিফ মাসুম, ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান, অ্যাডভোকেট আসাদুজামান আসাদ, কাদের গণি চৌধুরী, খোরশেদ আলম, শফিউল আলম দোলন, বাছির জামাল, মাহমুদ হাসান, রাশেদুল হক, মাহমুদা হাবিবা, ডা. ফাইজুল ইসলাম ফারুকী, গাজী আবদুল হক, দিদারুল আলম, এস এম ফজলুল হক, শামসুল আলম, এম জে আবেদীন, অধ্যাপক তোফাজ্জেল হোসেন, অধ্যাপক এ কে এম মতিনুর রহমন, মাসুদা কামাল, ইদ্রিস আলী প্রমুখ।

ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘আমি বলার চেষ্টা করেছি, মানুষের মধ্যে ক্ষোভ, হতাশা, দুঃখ আছে। রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যেও আছে।

কিন্তু আপনারা (বিএনপি) সাংগঠনিকভাবে কতটা প্রস্তুত। এখন তো আন্দোলন করার অধিকার যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি কঠিন। কাজেই সেদিকটাও মনে রাখতে হবে। কোনোরকম হঠকারী সিদ্ধান্তের অবকাশ নেই। আন্দোলন-সংগ্রাম করা গণতান্ত্রিক দেশের অধিকার। মানুষের স্বাভাবিক যে আকাক্সক্ষা তা প্রকাশ গণতান্ত্রিক অধিকার। সেই সঙ্গে যারা আন্দোলন করবেন তারা মনে রাখবেন, আন্দোলন যেন সহিংস না হয়। সাধারণ জনগণ অংশগ্রহণ করতে যেন ভয় না পায়।’

তিনি বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ থাকলেই আন্দোলন সফল হয়। আর তা যদি না থাকে, শুধু ক্যাডার দিয়ে আন্দোলন হয় না। আমরা ঊনসত্তরের আন্দোলন করেছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে জানি, কীভাবে মানুষ ঢেউয়ের মতো এগিয়ে আসে। এখন অনেক কিছু পরিবর্তন হয়ে গেছে। সেই সংস্কৃতি যদি ফিরিয়ে আনা না যায়, তাহলে গণতন্ত্রের জন্য তা মঙ্গলজনক হবে না।’ সূত্র জানায়, সভায় নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের এক দফা দাবিতে আন্দোলনের পরামর্শ দেন পেশাজীবী নেতারা।

সর্বশেষ খবর