ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বের হওয়ার পর ব্রিটেনের অর্থনীতির ব্যাপক পতন ঘটে। রাতারাতি ডলারের বিপরীতে পাউন্ডের দর পড়তে থাকে। মন্দা অর্থনীতির কারণে ধাক্কা লেগেছে বাংলাদেশের পাঠানো রেমিটেন্সে। পাউন্ডের বিপরীতে টাকার দর ১১৮ টাকা থেকে ১৩ থেকে ১৫ টাকা কমে ১০৩ টাকা হওয়ায় প্রবাসীরা পড়েছেন বিপাকে। এর প্রভাব আসন্ন কুরবানী ঈদেও পড়বে বলে আশংকা করা হচ্ছে। ব্রিটেনে কর্মরত বাংলাদেশি সাংবাদিক জুয়েল রাজ প্রতিমাসে বাংলাদেশে পরিবারকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পাঠান। তবে ব্রেক্সিট হওয়ার পর মন্দার কারণে সেই একই পরিমাণ টাকার জন্য এখন পাউন্ড গুণতে হচ্ছে বেশি।
ব্রেক্সিট হওয়ার আগেরদিন ২৩ জুন যেখানে ১ লক্ষ টাকা বাংলাদেশে পাঠাতে ৮৫০ পাউন্ড খরচ হতো বর্তমানে সেই একই পরিমাণ টাকা পাঠাতে ৯৭০ পাউন্ডের বেশি গুণতে হচ্ছে। এতে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর হার ২৬ শতাংশ কমে এসেছে বলে জানালেন ব্যাংক এশিয়া এক্সচেঞ্জ-এর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার এবিএম কামরুল হুদা আজাদ। পাউন্ডের দর পড়ে যাওয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের জীবনযাত্রায় ইতোমধ্যে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাংকার। তিনি বলেন, এখন বাংলাদেশ থেকে শাকসব্জি, মাছ আমদানি খরচ বেড়ে যাবে। সেই সাথে এখানেও জিনিসের দাম বাড়বে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পাউন্ডের দর কমে যাওয়ায় আসন্ন কুরবানীর ঈদেও তার প্রভাব পড়বে প্রবাসি বাংলাদেশিদের ওপর। পরিবারের খরচ বাবদ একই পরিমান টাকার জন্য তাদেরকে পাঠাতে হবে অধিক পাউন্ড। রুমেল রহমান নামের বাংলাদেশি তরুণ বলেন, পাউন্ডের দর যেভাবে কমছে তাতে কুরবানীর জন্য আমাকে এক্সট্রা ৭০ পাউন্ড (প্রায় সাত হাজার টাকা) বেশি দিতে হবে পরিবারকে। কিন্তু পাউন্ডের দরপতনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের আয় তো বাড়েনি। উল্টো ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা দেখা দিয়েছে।
২০০৮ সালে যখন বিশ্বমন্দা শুরু হয় তখন পাউন্ডের দর ১৪০ টাকা থেকে ৮৮ টাকা পর্যন্ত নেমে আসে। ২০১১ সালে সেই অবস্থা থেকে পাউন্ডের উন্নতি হলেও চলতি বছরের জুন মাসে ব্রেক্সিটের পরদিনই পাউন্ডের দর আবারও বিশ্ব বাজারে ধাক্কা খায়।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৪ আগস্ট, ২০১৬/ আফরোজ/এস আহমেদ