জাতিসংঘ পরিকল্পনা মন্ত্রী মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ (এসডিজি) এর বাস্তবায়ন অগ্রগতির তথ্য তুলে ধরেছেন। প্রতিষ্ঠানটির সদর দপ্তরে চলতি ‘কার্যকর উন্নয়ন সহযোগিতার জন্য বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব (জিপিইডিসি)’ এর সিনিয়র-লেভেল মিটিংয়ে তিনি এ তথ্য উপস্থাপন করেন। এতে মন্ত্রী ফোরামটির কো-চেয়ার হিসেবে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। এসময় স্পিকার ড. শিরিন শারমীন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এসডিজি ও কার্যকর উন্নয়ন অংশীদারিত্ব উভয় বিষয়েই দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক দৃশ্যপট অনুযায়ী এসডিজি অর্জনে বাংলাদেশ দারুন সফলতার সাথে এগুচ্ছে। আমরা দারিদ্র্য হার ২১.৮ শতাংশে এ নামিয়ে আনতে পেরেছি যা ২০০৫ সালে ছিল ৪০ শতাংশ। টেকসই প্রবৃদ্ধি ও এর উচ্চ ধারা অব্যাহত রাখতে আমরা ব্যাপক কর্মসংস্থান, অসমতা দূর, লিঙ্গসমতা নিশ্চিত ও সমগ্র সমাজ দৃষ্টিভঙ্গির মতো কৌশলসমূহ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। পাশাপাশি উন্নয়ন অংশীদারদের সাথে কার্যকর অংশীদারিত্ব সৃষ্টি করেছি।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কো-চেয়ার হিসেবে জিপিইইডসি-কে একটি কার্যকর প্লাটফর্মে পরিণত করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্ঠা গ্রহণ করেছে যাতে জিপিইডিসি-এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহ বাস্তবায়িত হয়। তিনি এসডিজি অর্জনের ক্ষেত্রে জিপিইডিসি ও এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় ও অব্যাহত প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। জিপিইডিসি’র মতো একটি অনন্য প্লাটফর্মকে এগিয়ে নিতে জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্রসহ জিপিইডিসি’র সকল অংশীজনদের প্রতি জোর আহ্বান জানান পরিকল্পনা মন্ত্রী।
সিনিয়র-লেভেল মিটিং-এর এই উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জাতিসংঘের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল আমিনা জে. মোহাম্মদ, জাতিসংঘের অর্থনৈতিক সম্পর্ক ও উন্নয়ন বিভাগের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল জেফ্রে চলাজেনহফ এবং ইউএনডিপি’র পরিচালক মিজ্ উলরিকা মুডার এবং দ্যা রিয়েলিটি অব এইড আফ্রিকার প্রতিনিধি ভিটালাইচ মেজা। অনুষ্ঠানটির মডারেটর ছিলেন কেনিয়ার উদ্যোক্তা ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মিজ্ জুলি গিকহুরু।
এসডিজি ও জিপিইডিসি-এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহ অর্জনে সম্মিলিত প্রচেষ্টা গ্রহণ এবং কার্যকর আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন মর্মে উল্লেখ করেন উচ্চ পর্যায়ের এ সভার বক্তাগণ। তারা আশা প্রকাশ করেন জাতীয় পর্যায়ে ও বৈশ্বিকভাবে এসডিজি’র বাস্তবায়নকে ত্বরান্বিত করতে এই সিনিয়র লেভেল মিটিং সরকার, সিভিল সোসাইটি ও অন্যান্য অংশীজনদের চলমান গতিকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিবে। সদস্য দেশসমূহের প্রতিনিধিবর্গের পাশাপাশি সিভিল সোসাইটি, বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি খাত ও ট্রেড ইউনিয়নের বিপুল সংখ্যক প্রতিনিধি এ সভায় অংশগ্রহণ করেন। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খান এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মনোয়ার আহমেদ।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা