করোনায় বেকার ভাতার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৩১ জুলাই। করোনার তাণ্ডব অব্যাহত থাকায় এখনও মোট কর্মশক্তির ১১% বেকার রয়েছে। এজন্যে তাদের ভাতা অব্যাহত রাখা জরুরি হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে একমত হলেও রিপাবলিকান ও ডেমক্র্যাটদের মধ্যে সাপ্তাহিক ভাতার পরিমাণ নিয়ে তুমুল বিতর্ক চলছে।
হোয়াইট হাউজ এবং রিপাবলিকানরা চাচ্ছেন, মার্চ থেকে প্রতি সপ্তাহে একেকজন ৬০০ ডলার (ফেডারেল থেকে) করে পেলেও আগস্ট থেকে সেটি ৩০০ ডলারের মধ্যে থাকতে হবে।
অপরদিকে, ১৫ মে ডেমক্র্যাট-শাসিত প্রতিনিধি পরিষদের পাশ হওয়া ‘হিরোজ এ্যাক্ট’ (হেলথ এ্যান্ড ইকনোমিক রিকভারি ওমনিবাস ইমার্জেন্সি সল্যুশন এ্যাক্ট) অনুযায়ী ৬০০ ডলার করেই অব্যাহত রাখার কথা।
বেকার ভাতা নিয়ে মতদ্বৈততা চললেও মাথাপিছু এককালিন ১২০০ ডলার করে প্রদানে উভয় পক্ষই একমত হয়েছে। বেকার ভাতা সপ্তাহে ৬০০ ডলারের কম দেয়া হলে করোনায় বিপর্যস্ত আমেরিকানরা মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার কংগ্রেসওম্যান ন্যান্সি পেলোসি। এজন্যেই আড়াই মাস আগেই তারা ‘হিরোজ এ্যাক্ট’ বিল পাশ করেছেন বলেও উল্লেখ করেন।
অপরদিকে, রিপাবলিকানরা যুক্তির অবতারণা করেছেন যে, ফেডারেল থেকে ৬০০ ডলারের সাথে যোগ হচ্ছে স্টেটের হিস্যা। অর্থাৎ একেকজন কমপক্ষে ৮০০ ডলার করে পাচ্ছেন বেকার ভাতা হিসেবে, যা তাদের প্রকৃত আয়ের চেয়ে বেশি হওয়ায় অনেকেই কাজে যোগদানের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন বলে ট্রাম্পের উপদেষ্টারা অভিমত পোষণ করেছেন। এমন অবস্থায় চলমান বেকার ভাতা অব্যাহত রাখতে খুব দ্রুত অর্থের পরিমাণ নিয়ে উদ্ভূত বিতর্কের অবসান ঘটাতে হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মুনুচিন এবং হোয়াইট হাউজের চিফ অব স্টাফ মার্ক মিডোজ। তারা বলেছেন, মাথাপিছ ১২০০ ডলারের চেক সরাসরি আমেরিকানদের একাউন্টে অথবা ডাকযোকে বাসায় পাঠিয়ে দেয়ার পাশাপাশি সাপ্তাহিক বেকার ভাতার পরিমাণ ধার্য করার বিল কংগ্রেসে দ্রুত পাশের বিকল্প নেই।
এরপর করোনায় বিধ্বস্ত অর্থনীতি চাঙ্গা করার অপর পদক্ষেপসমূহের বিল (স্কুল, হাসপাতাল, স্টেট ও সিটির জন্যে ভর্তুকি, রেস্টুরেন্টসহ ক্ষুদ্র ব্যবসার ট্যাক্স মওকুফ এবং নামমাত্র সুদে ঋণ) পাশ করলে তেমন সমস্যা হবে না।
বেকার ভাতা বন্ধ করা হলে অথবা পরিমাণ ৩০০ ডলার করা হলে ২ কোটি আমেরিকানকে পরিবার পরিজন নিয়ে চরম সংকটে পড়তে হবে বলে বিজ্ঞজনেরা মন্তব্য করছেন। কারণ, বাসা ভাড়া প্রদানের চাপও বাড়বে বাড়ির মালিকদের পক্ষ থেকে।
উল্লেখ্য, করোনার প্রকোপ শুরু হলে মধ্যমার্চে গোটা আমেরিকান লকডাউনে যায় এবং মার্চের শেষ সপ্তাহে কংগ্রেসে ২.২ ট্রিলিয়ন ডলারের ‘করোনা ভাইরাস এইড, রিলিফ এ্যান্ড ইকনোমিক সিকিউরিটি এ্যাক্ট’ তথা কেয়ারস এ্যাক্ট পাশ হয় উভয় পার্টির সমঝোতায়।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা