সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার নতুন শপথের মাধ্যমে ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে রবিবার) যথাযোগ্য মর্যাদায় ৫৩তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হয়েছে।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে দূতাবাসের বিস্তারিত কর্মসূচির মধ্যে ছিল সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন। এসময় মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
দিবসটি উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ.কে. আবদুল মোমেন এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহরিয়ার আলম প্রদত্ত বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। ডেপুটি চীফ অব মিশন ফেরদৌসী শাহরিয়ার, মিনিস্টার (কনস্যুলার) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, কাউন্সেলর (পাবলিক ডিপ্লোমেসি) আরিফা রহমান রুমা এবং কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান এই বাণী পাঠ করে শোনান। পরে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে রাষ্ট্রদূত ইমরান মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসকে বাংলাদেশের সবচেয়ে গৌরবময় ও স্মরণীয় দিন হিসেবে অভিহিত করেন এবং এ উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত সকল বাঙালিকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।
তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী ত্রিশ লাখ শহীদদের প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা জানান। রাষ্ট্রদূত ইমরান বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ঢাকায় নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি সামরিক জান্তার বর্বরোচিত হামলার পরিপ্রেক্ষিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, জাতির পিতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে এ দেশের মুক্তিকামী জনতা মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং বঙ্গবন্ধুর অবিসংবাদিত নেতৃত্বে বাংলাদেশ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দীর্ঘ প্রতিক্ষীত স্বাধীনতা অর্জন করে।
তিনি বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধে শহিদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। রাষ্ট্রদূত ইমরান গত ১৪ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্জিত বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও অগ্রগতি বিদেশের মাটিতে তুলে ধরার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি অনুরোধ জানান।
ডিফেন্স অ্যাটাচে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ শাহেদুল ইসলামও আলোচনায় অংশ নেন এবং মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে সশস্ত্র বাহিনীর বীর সেনানীদের গুরত্বপূর্ণ অবদান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। পরে জাতির পিতা ও মুক্তিযুদ্ধে জীবনদানকারী সকল শহিদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এক বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। কর্মসূচি পরিচালনা করেন ফার্স্ট সেক্রেটারি মোঃ আতাউর রহমান।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন