শিরোনাম
শুক্রবার, ১৪ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা
গল্প

হেলা, অবহেলার গল্প

মাকিদ হায়দার

হেলা, অবহেলার গল্প

অপেক্ষার শেষ নেই জেনেও তবু আমাকে অপেক্ষা করতে হলো। আজ যার জন্য অপেক্ষা সে আমাকে হেলায়, নাকি অবহেলায় বলেছিল অপেক্ষাই সুন্দর। সেই সুন্দরের হাতে যেন দেখতে পাই- পরের কথায় না গিয়ে, মৃদু হেসে তাকালেন, কলেজ রোডের একটি নতুন বাড়ির বিশাল দেয়ালের দিকে। দেয়ালজুড়ে কে বা কারা বড়ো বড়ো হরফে লিখেছে, ‘আবার দেখা হবে; সুখে না থেকে, থেকো দুঃখে’ তখন সময় দুপুর, সবে গরমকাল শুরু হয়েছে। বসন্তের শেষ, তবু আকাশের গায়ে নীল আভার চেয়ে ফ্যাকাশে আভার আকাশ আজ বিষণœ মনে যেন তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে।

আমি আকাশকে, আকাশের চন্দ্র এবং চন্দ্রগ্রহণকে মনে-প্রাণে অপছন্দ করি। বেশ কয়েক বছর আগে ‘নিশি’ রোগ পেয়ে বসেছিল আমাকে। সারা রাত জেগে থেকে কারও মুখ, কারও কথা, কারও হেলা, অবহেলা, সবগুলোকে একের এক পাশাপাশি সাজিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলতে বলতেই দেখতাম, রাতের অবসানে দিনের প্রথমে, আমার ভাড়া বাসার চিলেকোঠায় রোদ পড়ার আগেই গিয়ে পড়েছে শামীমার বাবার পাঁচতলার চিলেকোঠায়। রাগে অভিমানে নিজের পায়ের দিকে তাকিয়ে দেখি সেই যে আমার বাইশ বছর বয়সের এক অদৃশ্য আয়নায় কেন যে মুক্তিযুদ্ধে গিয়ে ডান পাটি না হারিয়ে হারিয়ে ছিলাম বাম হাতের দুটি তিনটি আঙ্গুল। সৌভাগ্য আমাকে নিয়ে দূরে সরিয়ে না দিলে হয়তো আজ আমাকে এখানে এই ভেজা রোদে কিছুতেই অপেক্ষা করতে হতো না। অবহেলার জন্য।

আমি যে শুধু একাই অপেক্ষমাণ সেটি যেমন বলা অন্যায় তার চেয়ে অধিক অন্যায় আমারই হয়েছিল। শামীমার মতো একজনকে দেখলাম রাস্তার উল্টো দিকে। হয়তো তিনিও অপেক্ষা করছেন হয়তোবা কারও জন্য। যেদিন লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে স্থির করেছিলাম রাজনীতিবিদ হব। আজীবন আমাদের পাড়ার মন্টুদার মতো অকৃতদার থেকে একদিন স্বজনবিহীন শ্রাবণের অকালবর্ষণে পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি অনন্তের দিকে। আমিও তাই করব মন্টুদা, ব্রিটিশদের এদেশ থেকে উচ্ছেদের জন্যই এডওয়ার্ড কলেজে বিএসসির ছাত্র থাকাকালীন অবস্থায় নিজে গিয়ে নাম লিখিয়ে ছিলেন, পাবনা শহরের পশ্চিমের হেমায়েত গ্রামের অনুকূল ঠাকুরের আশ্রমে। মন্ত্রপূত হয়ে ফিরে এসে কলেজের দরজায় পা না রেখে পা দিয়েছিলেন মধু মজুমদারের গৃহের দ্বারে, চন্দ্রিমা কুঠিরে। যদিও নামে কুঠির হলেও বিশাল দোতলা ভবনের মাটির তলায় লুকিয়ে রাখা অস্ত্র, বোমাসহ অনেক কিছুই ছিল। মধুদা ছিলেন ঠাকুরের অন্যতম শিষ্য। স্বরাজ পার্টির সদস্য হওয়ার প্রথম দিনেই শপথ নিতে হয়েছিল ব্রিটিশ তাড়ানোর পরে ঘর সংসার যদি হয় হতে পারে। তার আগে অকৃতদার মন্টুদা ব্রিটিশ তাড়ানোর পরেও ছিলেন অকৃতদারের নাম-ঠিকানায়। সবই আমার শোনা কথা। তবে মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার আগেই যে মেয়েটি আমার চোখের মাথা খেয়েছিল তাকে আর পরে দেখিনি। যেহেতু প্রেমে অন্ধ ছিলাম বলেই তাকে দেখতে পাইনি। তবে শ্রুতিতে এসেছিল কে বা কারা ওকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল এবং যথারীতি ফিরেও এসেছিল। অসুস্থবস্থাই সামাজিক তাড়নায় পালিয়ে সে যে কোথায় এসে শেষ আশ্রয় হয়েছিল সে কথা কেউই জানে না। এমনকি আমিও না। আর তখনই স্থির করেছিলাম আমাদের মন্টুদার মতো কোনো এক সন্ধ্যায় অথবা শ্রাবণের অজস্র বৃষ্টি ধারায় কিংবা পরের টুকু ভাবতেই দেখি আমার সামনে একটি দু’পাঅলা সাপ। তাকিয়ে আছে এক দৃষ্টিতে এবং ভড়কে গিয়েছিলাম, এভাবে এর আগে কেউই আমাকে নিমেষহীন দেখেনি। এমনকি চোখের পলক না ফেলে এক পা-দু পা করে যে পথে এসেছিলেন সেই পথেই তার ফিরে যাওয়া-নাকি অন্য কোনো গন্তব্যে যাবেন তিনি। আমি না জানলেও আমার ঠিক এখনই মনে হয়েছিল মেয়েটি কি সে-ই যাকে একদিন মুহূর্তের ভিতরেই আমাকে আঁকড়ে ধরল নস্টালজিয়া। অন্ধের মতো হাতড়াতে হাতড়াতে অনেকগুলো মুখ অনেকগুলো হেলা, অবহেলা-ওরা আমাকে সঙ্গে নিয়ে খেলতে শুরু করায় আমার ভালোই হলো। নিশি কোনদিক দিয়ে এলো, কখন পালিয়ে গেল আমাকে কিছু না জানিয়ে, ভাবতে খুবই কষ্ট হলো। বিশেষত সেই নামহীন, গোত্রহীন, মেয়েটির মুখের চাহনির কার্য ভেবে।

প্রথম অবহেলা যিনি আমাকে উপহার দিয়েছিলেন, তিনি অবহেলা উপহার দিলেও তার অনুজা হেলায় আমাকে কাছে ডেকে একদিন বলেছিলেন, আপনার সারল্য এবং বুদ্ধিহীনতা আমাকে মুগ্ধ করলেও শামীমা নির্বুদ্ধিতার পরিচয় কেন যে সেদিন দিলেন আমি দরজার পেছনে দাঁড়িয়ে সব কথা শুনলাম। শুনে তখনই আমার মনে হলো আপনি নিশ্চয়ই কবিতা লেখেন আরও মনে হলো কবি মাত্রই সহজ-সরল। হেলা কি যেন ভাবলেন। আমার মনে হলো তার একটি দীর্ঘশ্বাস আকাশে-বাতাসে জড়িয়ে পড়ল উষ্ণ হয়ে, সেই উষ্ণতার ভিতরে যেন আমিও অবগাহন করলাম। আর তখনই মনে হলো পৃথিবী সত্যিই সুন্দর।

সেই সুন্দরের ভিতরে হেলা আর আমি হাঁটতে হাঁটতে যেদিন পৃথিবীর প্রায় শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছি, ঠিক তখনই শুনলাম বাতাসে ভেসে এলো কবি তোমাকে মুক্তিযুদ্ধে যেতে হবে, যেহেতু তোমার এখন উৎকৃষ্ট সময় যুদ্ধে যাবার। যেহেতু তুমি এখন ২২/২৩ বছরে দুরন্ত যুবক। তোমাকে এবং তোমার হেলাকে অনন্তকাল অপেক্ষা করতে হবে, যদি নিঃসর্গের ভিতরে আজীবন থাকতে চাও। বাতাস আরও কিছু মন্ত্র দিয়েছিল আমার কর্ণকুহরে। সেই মুহূর্তেই হেলা কি যেন বলেছিল আমাকে পৃথিবীর শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে। আমি যেন অনন্তকালের জন্য বধির হয়ে গিয়েছিলাম। বাতাসে ভেসে আসা আরও একটি ভারী কণ্ঠের নির্দেশনায়। ঠিক আগের মতো হেলা কি যেন বলতে চেয়েছিল, হয়তো বলেছিল শামীমা তোমাকে অবহেলা উপহার দিলেও আমি কবিকে জড়িয়ে রাখব আজীবন মধ্যহৃদে। আমার সমস্ত সুন্দর দিয়ে।

আমি বধিরতার গভীরে আচ্ছন্ন ছিলাম। তাই হেলার সব কথাটুকু শ্রুতিতে প্রবেশ করেনি। শুধু করেছিল ‘মধ্যহৃদে’। কিন্তু ওই একই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারই অগ্রজা। আর তখনই আমি স্থির বিশ্বাসের নৌকোতে পা রেখে সাতপাঁচ কিছু না ভেবে একদিন পড়ন্ত সন্ধ্যায় জনাকয়েক বন্ধুর হাত ধরে পাড়ি দিয়েছিলাম কেচুয়াডাঙ্গার ক্যাম্পে। কেচুয়াডাঙ্গার টেনিং ক্যাম্পে, কারণে এবং অকারণে হেলা এবং অবহেলা আমাকে কী যেন বলত। ওই দুই সহোদরার একটি কথাও সেদিন আমার কর্ণকুহরে পৌঁছায়নি। যেহেতু ছিলাম বধির এবং অন্ধ এক ভদ্রমহিলার প্রেমে। সেই প্রেমিকা বোবা অথচ তার ভাষা, তার চাওয়া-পাওয়া। তিনি সব সময়ই বুঝিয়ে দিতেন। তার বোবা ভাষার গভীরতায়। সেই প্রেমিক যে আবার ওনার মা  সে কথা আমি বলিনি। তার লক্ষ্য ছিল তার প্রেমিক ছেলেগুলো যেন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে তাকে শৃঙ্খল থেকে মুক্তি এনে দেয়। তাকে যেন নতুন নামে তার লাখ লাখ ছেলেমেয়ে বলতে পারে। মা তুমি আজ থেকে শৃঙ্খলমুক্ত। দস্যুদের বেড়াজাল থেকে।

তখন সবাই তারুণ্যে ছিলাম। আমার সেই বোবা মায়ের নিঃশব্দ নির্দেশে আমরা কখন যে কেচুয়াডাঙ্গা থেকে একদিন রাতের গভীরে এসে উঠেছিলাম বেলুনিয়ায়। সেখান থেকে কেউ কেউ ভৈরব ব্রিজের নদীর এপার-ওপার। মায়ের নিঃশব্দ নির্দেশে ভৈরব ব্রিজ উড়িয়ে দেওয়ার ইচ্ছায় বোমা মারতে গিয়ে আমার আর জনকয়েক সঙ্গী-সাথী চিরতরে হারিয়ে গিয়েছিল অনন্তে। শুধু আমি প্রাণে রক্ষা পেলেও হারিয়েছিলাম বামহাতের কয়েকটি আঙ্গুল। সেই হারিয়ে যাওয়া আঙ্গুল দেখেই শামীমা অবহেলায় উপহার দিয়েছিল ঘৃণা। তারই পিতার মতো ঘৃণায়। অবহেলার পিতা পালিয়ে গিয়েছিলেন তার প্রাণপ্রিয় দেশটি হারানোর শোকে। বক্তৃতা, বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিলেন জিন্না সাহেবেবর দেশ ভাঙতে দেওয়া যাবে না। পিতার স্বপক্ষে কথা বলেছিল অবহেলা। আর তারই সহোদরা আমাকে জানিয়েছিল মধ্যহৃদে রাখব তোমাকে। হেলা আরও বলেছিল তারই নিকটাত্মীয় ওসমান গণি। তিনি তো একটি পা হারিয়ে এখন হুইলচেয়ারে। সেই হুইল চেয়ারকে পছন্দ করেছিলেন গণি মামী। মামী আমার মাকে বলেছিলেন আমি গণিকে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনেই পছন্দ করেছিলাম। সেই পছন্দ সেই যে মধ্যহৃদে আসন গেড়ে বসেছিল তাকে আমি অবহেলা করিনি। বরং দিয়েছিলাম সম্মান। সেই সম্মানের ফসল আজ আমার হুইলচেয়ার। শামীমা তার মামীর কথা শুনে শুধু তাচ্ছিল্যভরে বলেছিলেন- আমি হলে কোনো দিনই ওই পদহীন মানুষকে-কিছুটা পরে বলেছিল আমার মধ্যহৃদ থেকে ঝেটিয়ে বিদায় করতাম। নূলো খোড়াদের ওই যেমন বিদায় করেছি আরেক নূলো খোড়াকে যে নাকি একদিন তার মায়ের নির্দেশে রাগে এবং গম্ভীর গলায় আরও বলেছিল দেশের লাখ লাখ ছেলেমেয়ে নাকি ছিল সেই হতভাগী মায়ের সন্তান-সন্তাতি। তাই সেদিন আমাদের পিতা রাগে-ক্ষোভে সেই মায়ের মুখের ওপর দু পা দিয়ে সেই যে হারিয়ে গেলেন কোন সুদূরে। তিনি আর ফিরে এলেন না। সেই থেকে আমার অবহেলা। অবহেলা আরও দৃঢ় হলো। সেই নখহীন, দন্তহীন, আঙ্গুলহীন এক চুক্তিযোদ্ধাকে দেখে তিনি নাকি আবার কবিতা লেখেন তাকে আমি একদিন মধ্যহৃদ থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে ফেলে দিয়েছি অবহেলায়। ডাস্টবিনে।

হেলা একদিন জানিয়ে ছিল- অবহেলার আরও হাজার কথা। হেলা হাজার হাজার কথার শেষে হঠাৎ সেদিন বলেছিল, আমি একটি অস্ত্রের ঘর বানাতে চাই। মেঘের মতো যেমন মেঘ ভাসতে ভাসতে এখান থেকে সেখানে যেতে পারে এবং বৃষ্টিতে ভিজিয়ে দিতে পারে। আমিও মেঘ হয়ে একদিন বৃষ্টিতে ভিজিয়ে দিতে চাই। আঙ্গুলবিহীন এক কবিকে। হেলার সুশ্রী, সুন্দর ইচ্ছার বাণী শুনে মনে হয়েছিল, হেলা কেন মেঘ হতে চায়। সে কেন মেঘদের মতো বাড়ি বানাতে চায়। নিশ্চয়ই সে একদিন বোকাসোকা কবিকে মধ্যহৃদ থেকে বের করে বৃষ্টিতে ভিজিয়ে দিয়ে ভেসে যাবে দেশ-দেশান্তরে।

হেলা কথা রেখেছিল তিনিও একদিন মেঘদের ভেলায় ভাসতে ভাসতে সাতসাগর পাড়ি দিয়ে, সাতসাগর পাড়ের নীল নয়নের একজোড়া চোখের গভীরে নিজেকে সমর্পিত করেছিলেন। নীল নয়ন হেলাকে একদিন ভেলায় ভাসিয়ে দিয়ে নিজেকে সমর্পিত করেছিল। কোনো এক নীল নয়নার মধ্যহৃদে।

আমার বাম হাতের ছিন্নভিন্ন ব্যথা। প্রায়শ মধ্যযামে জগিয়ে দেয়, হাতের ভিতরের অনুভবের সঙ্গে স্পষ্ট বুঝতে পারি, আজ রাত আমাকে নিদ্রাহীন কাটাতে হবে। তখনই চেষ্টা করি কারও উপন্যাস, কবিতা, গল্প পাঠান্তে উদ্ধার করতে চাই ঔপন্যাসিক। কবি এবং গল্পকার কে কী বলতে চেয়েছেন, তেমনি এক গল্পকার নাম সম্ভবত বেশ কিছুক্ষণ চিন্তার শেষপ্রান্তে এসে উদ্ধার করতে পারলেন গল্পকারের নাম আন্দালিব রাশদী। গল্প পাঠান্তে জানলাম তাকেও একদিন জানতে হয়েছিল, আবু ইউসুফের ইচ্ছা-অনিচ্ছার কথা। আবু ইউসুফকে সব কিছু হারাতে হয়েছিল তার বিরক্তিকর ইচ্ছার কাছে। মাথানত করেছিল, জনসমক্ষে। এক্ষুনি আমার মনে হলো, সব আবু ইউসুফের জীবন থেকে হারিয়ে যায় অনেকগুলো হেলা। শুধু হারিয়ে যায় না অবহেলা। এ কথা বলা যাবে না কাউকে। মাঝে মাঝে দুয়ারে এসে দাঁড়িয়ে বলে, আমরা দুজনই ফিরে এসেছি আমাদের দুই সহোদরাকে নিয়ে। বিবাহের এবং বিচ্ছেদের কবিতা তোমাকে লিখতেই হবে। শুধু প্রেমের কবিতা তুমি লিখতে পারবে না। ব্যর্থ প্রেমিকারই শুধু ব্যর্থ প্রেমের কবিতা লিখে। তুমি তো ব্যর্থ ছিলে না। ছিল না শুধু তোমার বাম হাতের কয়েকটি আঙ্গুল। কথা না বাড়িয়ে অবহেলা নিজে থেমে গিয়ে কী সব সাতপাঁচ ভেবে কোনো কথা না বলে পা বাড়াল তার গন্তব্যের দিকে।

হেলা এতক্ষণ দাঁড়িয়ে নিষ্পলক চোখে তাকিয়ে দেখছিল আমার ভাড়াবাড়ির দেয়ালের দিকে। হেলার দেখাদেখি আমিও তাকালাম স্নিগ্ধশুভ্র দেয়ালের দিকে। হেলা লক্ষ না করলেও আমি লক্ষ করলাম শৃঙ্খলাবদ্ধ, সারিবদ্ধ একদল কালো পিঁপড়ে ক্রমাগত উপরের দিকে দ্রুত লয়ে উঠে যাচ্ছে। যেন পৃথিবীর যাবতীয় দায় তাদের কাঁধে। নাকি বাড়িওলার দোতলা তিনতলায় কোনো মৃত মানুষের সন্ধান পেয়েছে কালো পিঁপড়ের সারিবদ্ধ দল। যেমন পেয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের বছরে। অথচ সাদা পিঁপড়ের দল শুধু মিষ্টি খাবারের গন্ধ পেলেই দ্রুতলয়ে সারিবদ্ধভাবে ছুটে যায় দূর-দুরান্তে। অথচ হেলা সারিবদ্ধভাবে না গিয়ে গিয়েছিল নীল নয়নের কাছে। হেলা নিশ্চুপ ছিল অনেকক্ষণ। তিনি কীভাবে আমার কাছ থেকে জানতে চাইলেন যদি তোমার ওই বাম হাতের আঙ্গুলবিহীন শূন্যতার ভিতরে যদি একটি ফুল গাছ লাগিয়ে দেই কেমন হবে? হেলার সে প্রশ্নের উত্তর দেইনি। দেব কিনা ভাবছি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর