বিজ্ঞানীরা গুরুতর বিষণ্নতা নিরাময়ে স্নায়ু উদ্দীপনার একটি যুগান্তকারী পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। এই পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট স্নায়ুকে উদ্দীপিত করে বিষণ্নতার লক্ষণ কমানো সম্ভব হয়েছে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, স্নায়ুর উদ্দীপনার মাধ্যমে মস্তিষ্কের মেজাজ নিয়ন্ত্রণকারী অংশে বিদ্যুৎ তরঙ্গ পাঠিয়ে বিষণ্নতা দূর করা যায়।
গবেষণাটি যুক্তরাষ্ট্রের ৮৪টি স্থানে ৫০০ অংশগ্রহণকারীর ওপর পরিচালিত হয়। অংশগ্রহণকারীরা গুরুতর বিষণ্নতায় ভুগছিলেন এবং পূর্বের কোনো চিকিৎসায় সাফল্য পাননি। গবেষণার অংশ হিসেবে তাদের বুকে ত্বকের নিচে পেসমেকারের মতো একটি যন্ত্র প্রতিস্থাপন করা হয়, যা বাম ভেগাস স্নায়ুকে উদ্দীপিত করে।
এই চিকিৎসার ফলাফল অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। অনেক অংশগ্রহণকারীর বিষণ্নতার লক্ষণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। স্ট্যান্ডার্ড ডিপ্রেশন স্কেল এবং স্ব-প্রতিবেদনমূলক মেজাজ ডায়েরির মাধ্যমে তাদের উন্নতির মাত্রা পরিমাপ করা হয়। কিছু অংশগ্রহণকারী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন, যেখানে তাদের বিষণ্নতার লক্ষণ আর চিকিৎসার প্রয়োজনীয় পর্যায়ে ছিল না।
গবেষণার সহলেখক চার্লস কনওয়ে বলেন, অত্যন্ত দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা থাকা সত্ত্বেও বিষণ্নতার লক্ষণ, জীবনের মান এবং কার্যকারিতা উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ভেগাস স্নায়ু উদ্দীপনা পদ্ধতির বিশেষ সুবিধা হলো, এটি রোগীর ওপর কার্যকর হলে এর প্রভাব স্থায়ী হয়।
যদিও এই পদ্ধতির ফলাফল উৎসাহব্যঞ্জক, এটি সাধারণ মানুষের জন্য সহজলভ্য হওয়া এখনও সম্ভব নয়। যন্ত্রটি স্থাপন এবং এর সার্জারির খরচ অনেক বেশি, যা বেশিরভাগ ব্যক্তির জন্য দুঃসাধ্য। অধিকাংশ বীমা পরিকল্পনায় এই পদ্ধতির খরচ অন্তর্ভুক্ত নয়।
তবে গবেষকরা এই পদ্ধতির গুরুত্ব বোঝাতে মেডিকেয়ার ও মেডিকেড সেবাদানকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের আশা, এই পদ্ধতির খরচ যদি বীমার আওতায় আনা যায়, তবে এটি অনেকের জন্য সহজলভ্য হবে এবং বিষণ্নতার চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল