আমরা কী একা? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে এবার এক ধাপ এগোলেন বিজ্ঞানীরা। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড্যানিয়েল আপাইয়ের নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী এমন একটি নতুন মডেল তৈরি করেছেন, যা অন্য গ্রহে প্রাণ থাকার সম্ভাবনা মূল্যায়নে সহায়ক হবে।
আগে শুধুমাত্র পানি থাকলেই কোনো গ্রহকে ‘বাসযোগ্য’ বলা হতো। কিন্তু এই গবেষণায় বলা হচ্ছে, প্রাণ ধারণের জন্য শুধু পানি নয়, প্রয়োজন আরও কিছু উপযুক্ত পরিবেশ। যেমন, সঠিক তাপমাত্রা ও জীবের বিপাক প্রক্রিয়া (metabolism) চালিয়ে যাওয়ার উপযোগী পরিবেশ থাকাও জরুরি।
এই নতুন পদ্ধতির মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, কোনো নির্দিষ্ট জীব একেক রকম পরিবেশে টিকে থাকতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, উট ঠাণ্ডা মেরু অঞ্চলে বাঁচতে পারে না, আবার পেঙ্গুইন মরুভূমিতে টিকতে পারে না। তাই গবেষণাটি শুধু পানি খুঁজে থেমে না গিয়ে এখন প্রাণধারী জীবের চাহিদা ও গ্রহটির পরিবেশ – এই দুইয়ের তুলনা করে সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করে।
এই গবেষণা ‘Alien Earths’ নামে নাসার একটি প্রকল্পের অংশ। এর উদ্দেশ্য হলো কাছাকাছি অবস্থান করা সম্ভাব্য বাসযোগ্য গ্রহগুলোকে চিহ্নিত করা এবং ভবিষ্যতের মিশনগুলোকে সঠিক পথে পরিচালিত করা।
এই মডেল পরীক্ষামূলকভাবে TRAPPIST-1e নামক এক্সোপ্ল্যানেটের মতো একটি গ্রহে প্রয়োগ করা হয়। সেখানে মিথেনজেন নামের এক ধরনের প্রাচীন ব্যাকটেরিয়ার টিকে থাকার সম্ভাব্যতা পাওয়া গেছে প্রায় ৬৯%। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, এমন গ্রহগুলোতে সহজাত প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে।
গবেষণাটি বলছে, এই নতুন মডেল একদিকে যেমন প্রাণের খোঁজে নতুন দিক উন্মোচন করছে, অন্যদিকে বিজ্ঞানীদের দীর্ঘদিনের প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়ার পথে এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবেও কাজ করছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল