যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর গোল্ডেন গেট ব্রিজের চেয়েও বড় একটি গ্রহাণু আগামী ৫ জুন পৃথিবীর কাছ দিয়ে অতিক্রম করবে। এর নাম ২০০৮ ডিজি৫ (2008 DG5)। বিজ্ঞানীদের হিসাবে, এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১,০১৭ থেকে ২,২৬৪ ফুটের মধ্যে, যা ৯৭ শতাংশ গ্রহাণুর চেয়েও বড়। আকারের দিক দিয়ে এটি শীর্ষ ৩ শতাংশ গ্রহাণুর মধ্যে পড়ে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই গ্রহাণুটি পৃথিবী থেকে আনুমানিক ৩৪.৯ লাখ কিলোমিটার দূর দিয়ে অতিক্রম করবে। এটি পৃথিবীর জন্য সরাসরি কোনো হুমকি নয়। কারণ এটি চাঁদের দূরত্বের প্রায় ৯ গুণ দূর দিয়ে যাবে। চাঁদ সাধারণত পৃথিবী থেকে গড়ে ৩.৮৪ লাখ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করে।
তবে, নাসা (NASA) এটিকে ‘সম্ভাব্য বিপজ্জনক বস্তু’ হিসেবে বিবেচনা করেছে এর দুটি বৈশিষ্ট্যের কারণে—আকার ও দূরত্ব। নাসা বলেছে, যেকোনো বস্তু যার দৈর্ঘ্য ৫০০ মিটারের বেশি এবং পৃথিবী থেকে ৭৫ লাখ কিলোমিটারের মধ্যে দিয়ে অতিক্রম করে, সেটি সম্ভাব্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
যদিও ২০০৮ ডিজি৫ বর্তমানে কোনো ঝুঁকি তৈরি করছে না। তবে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এ ধরনের বিশাল গ্রহাণু পৃথিবীতে আঘাত হানলে তা ভয়াবহ আঞ্চলিক ক্ষতি করতে পারে। যদি এটি পানিতে আঘাত করে, তবে বড় ধরণের সুনামি সৃষ্টি হতে পারে।
বিগত সময়েও এমন ঘটনা ঘটেছে। ২০০৮ সালে সাইবেরিয়ার টুংগুস্কা অঞ্চলে একটি মাত্র ১৩০ ফুট দৈর্ঘ্যের গ্রহাণু আকাশেই বিস্ফোরিত হয়ে বিশাল অগ্নিকাণ্ড ঘটায় এবং প্রায় ৮ কোটিরও বেশি গাছপালা ধ্বংস করে।
অন্যদিকে, ডাইনোসরদের বিলুপ্তির জন্য দায়ী বলে ধারণা করা চিকসুলুব (Chicxulub) গ্রহাণুর দৈর্ঘ্য ছিল ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটারের মতো।
উল্লেখ্য, ২০০৮ ডিজি-৫ হলো অ্যাপোলো শ্রেণির গ্রহাণু, যেগুলো পৃথিবীর কক্ষপথের মধ্য দিয়েই চলাচল করে। এটি প্রথম আবিষ্কৃত হয় ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনার কাছাকাছি নাসার ক্যাটালিনা স্কাই সার্ভের মাধ্যমে। এটি সূর্যকে কেন্দ্র করে প্রতি ৫১৪ দিনে একবার প্রদক্ষিণ করে। আগামীবার এটি পৃথিবীর কাছাকাছি আসবে ২০৩২ সালে।
নাসা আরও জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যাচু অব লিবার্টির আকারের সমান ২০২৪ ওয়াইআর৪ (2024 YR4) নামের আরেকটি গ্রহাণু পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসতে পারে। এটি যদি আঘাত হানলে হিরোশিমা পারমাণবিক বোমার চেয়ে ১০০ গুণ বেশি শক্তি নির্গত হতে পারে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল