বাংলাদেশ প্রতিদিন : আপনাদের এসি বা এয়ারকুলারের কী বৈশিষ্ট্য ও সুবিধা আছে, আপনাদের এসি/এয়ারকুলার ক্রেতা কেন কিনবেন?
মো. নুরুল আফছার : গ্রী এসি/এয়ারকুলার বিশ্বের নম্বর ওয়ান ব্র্যান্ড। বাংলাদেশেও দীর্ঘদিন ধরে নম্বর ওয়ানে আছে গ্রী এসি। আমরা প্রতিনিয়ত নিত্য নতুন প্রযুক্তি সংযোজন করছি। আমাদের আরঅ্যান্ডডি চায়নার সঙ্গে যৌথ প্রযুক্তি শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে। অনেকেই জানেন না ঘরের বাইরে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি হলে কমফোর্টেবল টেম্পারেচার আসলে কত হবে। ফলে কখনো ১৬, কখনো ১৮, কখনো ২০ তাপমাত্রা সেট করে। যদি আই ফিল অপশনটি চালু থাকে সে ক্ষেত্রে এসি অটোমেটিক রুমে টেম্পারেচার কমফোর্ট করে দেবে। বিশ্বের সর্বপ্রথম জি-বুস্ট ইনভার্টার কম্প্রেসার এসির স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করার সঙ্গে সর্বোচ্চ লেভেলের ইলেকট্রিসিটি সেভিং করে। জি বুস্ট ইনভার্টার কম্প্রেসার গ্রী এসি ৬৮ ডিগ্রি টেম্পারেচারেও নরমালভাবে চলবে। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ফিচার কোল্ড প্লাজমা প্লাস এবং হিউমিডিটি কন্ট্রোলার। এর মাধ্যমে রুমের ভিতরের বাতাসে যে ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু থাকে সেগুলোকে ৯৯.৯৯% পর্যন্ত ডিঅ্যাকটিভ করে এবং হিউমিডিটি ব্যালান্স করে। যার ফলে লং টাইম এসির মধ্যে থাকলেও শরীরের স্ক্রিন শুষ্কতা থেকে রক্ষা করে, হাঁচি-কাশি জনিত সমস্যা বা কোল্ড অ্যালার্জি জাতীয় সমস্যা হয় না।
যাদের এসি কেনার সামর্থ্য নেই, তারা এয়ারকুলার কিনছেন, এই দাবদাহে কি এয়ারকুলারের চাহিদা বেড়েছে?
-সবাই চায় তীব্র দাবদাহে পরিবারকে একটু স্বস্তি দিতে। তাই সামর্থ্য অনুযায়ী বিকল্প অনুসন্ধান করে। তবে এয়ারকুলার কখনো এসির বিকল্প হতে পারে না। এয়ারকুলারের সুবিধা হচ্ছে এটি পোর্টেবল এবং দামও ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে। ফলে সাময়িক সুবিধা, তীব্র দাবদাহে একটু শীতল পরশ ও প্রশান্তি এবং সাশ্রয়ী মূল্যের কারণে অনেকে এয়ারকুলার ক্রয় করছেন।
এসি কি আমাদের দেশে উৎপাদন হচ্ছে, নাকি আমদানি করতে হয়?
- বর্তমানে এসি চাহিদার প্রায় ৮০-৮৫ শতাংশ দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে। তবে ৮০-৯০ শতাংশ কাঁচামাল আমদানিনির্ভর। এ খাতকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে আমদানি পর্যায়ে ব্যাপক সহযোগিতা পেলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব।
দেশে কোন ধরনের এসি ও এয়ারকুলারের চাহিদা বেশি?
গ্রী এসি এবং এয়ারকুলারের চাহিদা বাণিজ্যিক ভবন এবং বাসাবাড়ি দুই জায়গায়ই অনেক বেশি। বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের জন্য আমাদের ১ থেকে ৫ টনের আরএসি, ভিআরএফ, চিলার পণ্যও রয়েছে। সবাই এখন স্মার্ট প্রযুক্তি চায়, দিনদিন ইনভার্টার এসির চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আপনাদের বিক্রয়োত্তর সেবার প্রক্রিয়া কী?
-এসি ক্রয়ের এক বছরের মধ্যে একটি ফ্রি সার্ভিস দিয়ে থাকি। এছাড়াও আমাদের কল সেন্টার ১৬৬৪৯ নম্বরে কল করলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। গ্রাহকদের সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা নিশ্চিত করতে প্রায় ৪৫০০ দক্ষ টেকনিশিয়ান কাজ করছেন। ইনভার্টার এসির কমপ্রেসারে ১০ বছরের এবং নন-ইনভার্টার এসির কমপ্রেসারে ৫ বছরের ওয়ারেন্টি দিচ্ছে গ্রী।
এসি/এয়ারকুলার শিল্পের বিকাশে সরকারের কাছে আপনাদের দাবিগুলো কী?
-আমরা চাই দীর্ঘমেয়াদি কর অব্যাহতি। তাহলে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে পারব। সরকার যদি জানিয়ে দেয়, আগামী ১০ বছর কর হার এই হবে, কাস্টমস এই নীতিতে চলবে, আমদানি-রপ্তানি নীতিতে এতটুকু ছাড় দেওয়া হবে; এ সময়ে কোনো পরিবর্তন হবে না। তাহলে আমরাও ১০ বছরের বিনিয়োগ এবং ব্যবসায়ের পরিকল্পনা করতে পারব। বাড়তি অর্থ বিনিয়োগ ও সময় অপচয় হবে না। হয়রানিও থাকবে না, ঝুঁকিও কমবে।
দিন যাচ্ছে প্রযুক্তি বদলাচ্ছে- উদ্ভাবনী প্রযুক্তির প্রয়োগে আপনারা কী ভাবছেন?
-দেশের আবহাওয়া এবং গ্রাহকদের প্রয়োজন বিবেচনায় গ্রী এসিতে সর্বাধুনিক উদ্ভাবনী প্রযুক্তি সংযোজন করা হয়। আমরা গ্রী চায়নার সঙ্গে জয়েন্ট ভেঞ্চারে প্রযুক্তি শেয়ার করছি, বিদেশের মতোই আমাদের দেশে উৎপাদিত এসিগুলো সর্বাধুনিক উদ্ভাবনী প্রযুক্তি এবং সারা বিশ্বে যে গ্রী এসি দেখছেন সেই একই রকম যন্ত্রাংশ দিয়ে তৈরি হচ্ছে। এয়ারকন্ডিশনারের জন্য প্রযোজ্য নিত্য নতুন প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত আমরা নিজেদের পণ্যে সম্পৃক্ত করছি। ফলে দেশের পরিবেশ বিবেচনায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ গ্রী এসিগুলো তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি ভালো। বর্তমানে বাংলাদেশে উৎপাদিত গ্রী এসি বিশ্বমানের এবং বিশ্বের ২০০টিরও অধিক দেশে সমাদৃত।
এসি নিয়ে আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
আমাদের আরঅ্যান্ডডি সার্বক্ষণিক এসির প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা করছে। বর্তমান ওয়েদার এবং মানুষের প্রয়োজনের সঙ্গে ব্যালান্স করে এআই প্রযুক্তিসমৃদ্ধ করে নতুন নতুন টেকনোলজি আমরা অ্যাডাপ্ট করছি এবং ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি।