শনিবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

ইফতেখার ঝড়ে সাকিবদের দাপট

ক্রীড়া প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম থেকে

ইফতেখার ঝড়ে সাকিবদের দাপট

ফরচুন বরিশাল ইনিংসের ১৭ ওভার শেষ। দলীয় সংগ্রহ ৫ উইকেট হারিয়ে ১৫১ রান। শেষ তিন ওভারে ভালো ব্যাটিং করলেও ১৮০ রানের কাছাকাছি কিছু হতে পারে! কিন্তু ধারণাটা বদলে দিলেন ইফতিখার আহমেদ। সে সময় তিনি ১৩ বলে ১০ রান করে উইকেটে টিকে ছিলেন। পরের তিনটা ওভারে ইফতিখারের বিস্ফোরক ব্যাটিং দেখল সাগরিকার দর্শকরা। ২৬ বলে ৫টি ছক্কা ও ৩টি চারের মারে করলেন ৫৭ রান। ফরচুন বরিশালের সংগ্রহ দাঁড়াল ২০২। এই রানের পাহাড়েই চাপা পড়ল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। ইনিংসের প্রথমে ও শেষের দিকে ঝড়ো গতির ব্যাটিং করেও সাকিব আল হাসানদের ছুড়ে দেওয়া লক্ষ্য স্পর্শ করতে পারেনি চট্টগ্রাম। ১৭৬ রানে শেষ হয় তাদের ইনিংস। ২৬ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সাকিব আল হাসানের ফরচুন বরিশাল। এই জয়ে তিন ম্যাচে ৪ পয়েন্ট সংগ্রহ করে দুই নম্বরে উঠে এলো তারা। এক ম্যাচ বেশি খেলে ৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে সিলেট স্ট্রাইকার্স।

রানের বন্যায় শুরু হলো বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চট্টগ্রাম পর্ব। গতকাল সাগরিকার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও ফরচুন বরিশাল। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ২০২ রান সংগ্রহ করেন সাকিব আল হাসানরা। জবাবে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স করে ১৭৬ রান। দুই দলের রানের যোগফল ৩৭৮। চলতি বিপিএলে এটা এক ম্যাচে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। এর আগে ফরচুন বরিশাল (১৯৪) ও সিলেট স্ট্রাইকার্স (১৯৬) ম্যাচে হয়েছিল ৩৯০ রান।

চট্টগ্রামের দর্শকরা বিপুল উৎসাহ নিয়ে মাঠে এসেছিলেন গতকাল। সঙ্গে ছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিশালাকারের ব্যানার। তবে তাদের হতাশ হয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে। ফরচুন বরিশালের ২০২ রানের জবাবে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ইনিংস শেষ হয় ১৭৬ রানে। পরাজয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে চট্টগ্রামের সমর্থকদের।

প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ঝড়ো গতিতে রান তোলে ফরচুন বরিশাল। নিয়মিত উইকেট হারালেও রানের গতি হারায়নি তারা। এনামুল হক ২১ বলে ৩০, মেহেদী হাসান ১২ বলে ২৪, সাকিব ৩ বলে ৮, ইব্রাহিম জাডরান ৩৩ বলে ৪৮, মাহমুদুল্লাহ ১৭ বলে ২৫ রান করেন। সবার লক্ষ্যই ছিল ঝড়ো গতিতে রান তোলা। শেষদিকে ইফতিখার ২৬ বলে ৫৭ রান করে রানের পাহাড় গড়ে দেন। ম্যাচসেরার পুরস্কারও জেতেন তিনি। ২০৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটা দারুণ করেছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। উসমান খান (১৯ বলে ৩৬) ও ম্যাক্স ও’ডাউড ঝড়ো গতিতে রান তুলছিলেন। পাঁচ ওভারে রান ছিল ৪৮। তবে উসমান খান আউট হতেই রানের গতি থেমে যায়। শেষদিকে ফের জিয়াউর রহমান ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন। তিনি ২৫ বলে করেন ৪৭ রান। তবে ততক্ষণে বড্ড দেরি হয়ে গেছে। লড়াই থেকে ছিটকে গেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। জিয়ার ঝড়ো ব্যাটিং কেবল তাদের পরাজয়ের ব্যবধানটাই কমাতে পেরেছে। তিন ম্যাচ খেলে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স এক জয়ে দুই পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে। তারা পঞ্চমে অবস্থান করছে। খুলনা ও কুমিল্লা এখনো কোনো পয়েন্ট সংগ্রহ করতে পারেনি।

গতকাল দিনের প্রথম ম্যাচের দুই ইনিংসেই ২ শতাধিক রান দেখা যেত। অন্তত ফরচুন বরিশালের ২০২ রানের পর চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের শুরুর দিকের ঝড়ো ব্যাটিং তারই ইঙ্গিত দিচ্ছিল। তবে তা আর হয়নি। বিপিএলে এর আগে এক ম্যাচের দুই ইনিংসেই ২ শ’র বেশি রান দেখা গেছে কেবল চারবার। এর মধ্যে আগে ২০০ রান পাড়ি দেওয়া দলই জয় পেয়েছে তিনবার। একবার ২০০ রানের বেশি টপকে জিতেছে খুলনা টাইগার্স (২০২০ সালের ১১ জানুয়ারি)।

সর্বশেষ খবর