মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ইতিহাস গড়ার পরও হেরে গেছে তার দল ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোন। জিতেই ফাইনাল নিশ্চিত করল বিসিবি নর্থ জোন। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে শুক্রবার বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) ফাইনালে প্রাইম ব্যাংকের মুখোমুখি হবে নাসির হোসেনের নর্থ জোন।
টানা চার বলে চার উইকেট, তারপর অপরাজিত সেঞ্চুরি -মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের রেকর্ডটি বাংলাদেশেই ক্রিকেটাতিহাসে তো অবশ্যই প্রথম ঘটনা, বিশ্বে এমন ঘটনা ঘটেছে আর মাত্র একবারই। ১৯৯৬ সালে ইংল্যান্ডের এক অখ্যাত ক্রিকেটার কেভান জেমস এমন কাণ্ড প্রথম ঘটিয়ে ছিলেন। তবে এক ম্যাচে হ্যাটট্রিক এবং সেঞ্চুরি রয়েছে আরও। মাহমুদুল্লাহর এটি ১৫তম ঘটনা। বাংলাদেশের সোহাগ গাজীই তো দুই দুইবার হ্যাটট্রিক এবং সেঞ্চুরির ঘটনা ঘটিয়েছেন। একবার ঘরোয়া লিগে, আরেকবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে -নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে, চট্টগ্রাম টেস্টে।
মাহমুদুল্লাহ প্রথম ইনিংসের শেষ দুই বলে দুই উইকেট এবং দ্বিতীয় ইনিংসে প্রথম দুই বলেই দুই উইকেট নিয়েছেন। ঘটনাটি দুই ইনিংসে মিলে হওয়ায় অনেকের দৃষ্টি এড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু মাহমুদুল্লাহর এমন কীর্তির পরও জিততে পারেনি তার দল। হেরে যায় ৫১ রানে। তৃতীয় রাউন্ডে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে থেকেও ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হয় ওয়াল্টন সেন্ট্রাল জোন। কীর্তিময় ম্যাচেও শাস্তি পেতে হয়েছে মাহমুদুল্লাহকে। সেঞ্চুরির পর অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির জন্য দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছেন সেন্ট্রাল জোনের অধিনায়ক, সঙ্গে কেটে নেওয়া হয়েছে ম্যাচ ফি পুরোটাই।
বিসিবি নর্থ জোন জয় পেয়েছে মূলত স্পিনার তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণি জাদুতে। রাজশাহীর এই বোলার দুই ইনিংস মিলে নিয়েছেন ১১ উইকেট। বলতে গেলে, বোলিংয়ে নর্থ জোনের এক প্রান্ত ছিল তার দখলেই। তাইজুল প্রথম ইনিংসে একাই বোলিং করেছেন ৩৩ ওভার (৮৮-র মধ্যে), দ্বিতীয় ইনিংসে ২২ ওভার (৫৪-র মধ্যে)। প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট, দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছেন ৫ উইকেট। একাই ধসিয়ে দিয়েছেন সেন্ট্রাল জোনকে। দুর্দান্ত বোলিংয়ের পুরস্কারস্বরূপ ম্যাচ সেরাও হয়েছেন তিনি। তাইজুল ইসলাম তিন ম্যাচেই নিয়েছেন ২৭ উইকেট। এখন পর্যন্ত বিসিএসের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার তিনি।
বিসিবি নর্থ জোনের দরকার ছিল ড্র। কিন্তু সেন্ট্রাল জোনের জয় ছাড়া উপায় ছিল না। শেষ দিনে তাদের লক্ষ্য ছিল ২৬৫ রান। হাতে ছিল ৯ উইকেট। কিন্তু মাহমুদুল্লাহর ২১৫ রানেই অলআউট হয়ে যায়। একমাত্র ইলিয়াস সানি ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যানই সুবিধা করতে পারেননি। পাঁচটি বাউন্ডারি এবং দুই ছক্কায় ৬০ রান করেন সানি। আগের ইনিংসের অপরাজিত সেঞ্চুরিয়ন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ আউট হয়ে যান ১৭ রান করে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৬ রান এসেছে শামসুর রহমানের ব্যাট থেকে। কাল বিসিএলে চলতি আসরে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে চার শতাধিক রান করেন সেন্ট্রাল জোনের এই ব্যাটসম্যান। তিন ম্যাচে শামসুরের মোট রান ৪২৫।