অলিম্পিকতো বটেই এশিয়ান গেমসেও বাংলাদেশের স্বর্ণপদক জেতাটা স্বপ্নই ছিল। ২০১০ সালে চীনে প্রথমবারের মতো ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর বাংলাদেশের ভাগ্য খুলে যায়। সেবার টি-২০'র মাধ্যমে এশিয়ান গেমসে ক্রিকেটের অভিষেক ঘটে। শুরুতেই আশরাফুলের নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেমস ইতিহাসে প্রথমবারের মতো স্বর্ণ জেতার কৃতিত্ব অর্জন করে বাংলাদেশ। দেশ স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ এশিয়ান গেমসে প্রথম অংশগ্রহণ করে ১৯৭৪ সালে। সেবার অবশ্য কোনো প্রতিযোগী ছিলেন না। দুই সদস্যের দল গিয়ে গেমসে জাতীয় পতাকা নিয়ে মার্চ পাস্টে মাঠ প্রশিক্ষণ করেন। ১৯৭৮ সালে ব্যাংকক এশিয়ান গেমস থেকে মূলত প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছেন। অন্য খেলার পদক জেতার সম্ভাবনা না থাকলেও কাবাডিই ছিল মূল ভরসা। ভারত ছাড়া কাবাডিতে তখন শক্তিশালী দল বলতে বাংলাদেশকেই বুঝাতো। তাই স্বর্ণ না হোক রৌপ্য জয় করাটা কঠিন কোনো কাজ ছিল না। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এশিয়ান গেমসে ভারতের মতো শক্তিশালী দলকে টপকিয়ে পাকিস্তানের স্বর্ণ জেতার রেকর্ড থাকলেও বাংলাদেশের পক্ষে রৌপ্য জেতাটা কঠিন হয়ে পড়েছে।
আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ায় ১৭তম এশিয়ান গেমসের পর্দা উঠবে। বেশ ক'টি ইভেন্টে অংশ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। এর মধ্যে কাবাডি ইভেন্ট অন্যতম। দলগত এ বিভাগে পুরুষ ও মহিলারা অংশ নেবেন। কাবাডিতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা কি এ ব্যাপারে ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামের সঙ্গে আলাপ করা হলে তিনি বলেন, উভয় বিভাগে পদক জয়ের আশা করছি। পদকটা স্বর্ণ, রৌপ্য না তামা তা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, চেষ্টাতো করব স্বর্ণ বা রৌপ্য জিততেই। যাক নজরুল বললেও বাস্তবে বাংলাদেশের রৌপ্য জেতাটা অনিশ্চিত বলা যায়। সাধারণ সম্পাদক নিজেই স্বীকার করেছেন ভারত, পাকিস্তানতো আছেই কাবাডিতে এখন ইরান ও জাপান যথেষ্ট শক্তিশালী দলে পরিণত হয়েছে। তবে পুরুষ বিভাগে ভারতের স্বর্ণ জেতার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। বাকি দুই পদকের জন্য তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। সত্যি বলতে কি এক্ষেত্রে বাংলাদেশ যদি উভয় বিভাগে তামাও জিতে তা বড় সাফল্য বলে ধরে নিতে হবে। নজরুল বলেন, সাফল্য পেতে যে প্রস্তুতি দরকার তা অর্থের কারণে সম্ভব হচ্ছে না। দক্ষিণ কোরিয়া গেমসের জন্য ফেডারেশন সিলেকশন কমিটির মাধ্যমে প্রশিক্ষণের জন্য ১৬ সদস্যের টিম ঠিক করে রেখেছে। আশা করা যাচ্ছে ১৫ মে থেকে গেমসের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাবে। পুরুষ ও মহিলাতে চূড়ান্তভাবে ১২ জন করে খেলোয়াড় বাছাই হবে। এরাই গেমসে অংশ নেবেন। তিনি বলেন, প্রস্তুতির পাশাপাশি আমি চাচ্ছি গেমসের আগে প্রীতিম্যাচ খেলতে। ইরান মহিলা দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ভারতীয় কাবাডি ফেডারেশনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে প্রীতিম্যাচের জন্য। অর্থাৎ প্রস্তুতিটা যেন ভালো হয় সেদিকে আমরা জোর নজর দিচ্ছি। পদক জেতার ব্যাপারে অবশ্যই আমি আশাবাদী। কিন্তু প্রতিপক্ষরাও সাফল্য পেতে উন্নতমানের প্রশিক্ষণ নিয়েই দক্ষিণ কোরিয়া যাবে। সুতরাং এখানে নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়।