ক্রিকেটে জাতীয় দলের কোচ শেন জার্গেনসেন স্বেচ্ছায় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন অনুরোধ করার পরও অস্ট্রেলিয়ান এ কোচ সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের রাজি হননি। ক্রিকেট বোর্ড তাই নতুন কোচের সন্ধানে নেমেছে। প্রশ্ন উঠেছে ফুটবলের দুই ডাচ কোচকে ঘিরে। চার মাসের বেতন না পাওয়াতে ক্রুইফ ও কোস্টার দায়িত্ব থেকে সরে যাচ্ছেন_ এ গুঞ্জনও উঠেছে ক্রীড়াঙ্গনে। অনেক চেষ্টার পর বাফুফে দুই ডাচ কোচ লোডডিক ক্রুইফ ও রেনে কোস্টারকে খুঁজে পায়। সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ডাচ কোচের দেখা মিলে। অনেকের আশা ছিল দুই ডাচ কোচের যোগ্য প্রশিক্ষণে বাংলাদেশের ফুটবল নতুনভাবে জেগে উঠবে। চুক্তি হওয়ার আগে দুজনার প্রশিক্ষণে বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ কাপে অংশ নেয়। কিন্তু ফলাফল সুখকর ছিল না। এরপরই বাফুফে ক্রুইফকে মূল ও কোস্টারকে সহযোগী কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয়। প্রথম অ্যাসাইমেন্ট ছিল সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ। দেশবাসীর অনেক প্রত্যাশা থাকলেও গ্রুপ পর্ব খেলে বাংলাদেশ বিদায় নেয়।
যাক দুই কোচের শুরুটা ভালো না হলেও সালাউদ্দিনের চিন্তা ছিল তাদেরকে রেখেই বাংলাদেশ প্রস্তুতি নেমে। সালাউদ্দিনের চিন্তাও সঠিক ছিল। কেননা অল্প সময়ে কেউ মানের পরিবর্তন ঘটাতে পারবেন না। এ নিয়ে আবার তিনি সমালোচনার সম্মুখীনও হন। কেননা সাফের পর দুই কোচের তেমন কাজও ছিল না। অনেকটা বসে বসেই দুই কোচ মোটা অঙ্কের বেতন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা ভোগ করবে বলে বাফুফের নির্বাহী কমিটির অনেক কর্মকর্তা বলেন, অযথা এত টাকা খরচ করা হচ্ছে। সত্যি বলতে কি ক্রুইফ ও কোস্টার কত টাকার বেতনে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তা বাফুফে এখনো পরিষ্কার করেনি। তবে ধারণা করা হচ্ছে বেতন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধাসহ প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয় হচ্ছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে মোটা অঙ্ক হলেও বাফুফে তাদের বেতন মেটানোর অর্থই খুঁজে পাচ্ছে না। চার মাস দুই কোচের বেতন বকেয়া পড়ে গেছে। সুতরাং ক্রুইফ ও কোস্টার দায়িত্ব পালন করবেন কিনা এ নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এ ব্যাপারে গতকাল বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ বলেন, আমরা তাদের বেতন পরিশোধের আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছি। ফান্ড সংগ্রহে স্পন্সরশিপ নিয়েও আলোচনা চলছে। আশা রাখি ব্যবস্থা হয়ে যাবে। সোহাগ বলেন, দুই কোচের বেতন বাকি থাকলেও তারা কিন্তু কখনো বলেননি থাকবেন না। এখন দুজনার ছুটিতে আছেন। আশা রাখছি চলতি মাসেই তারা ঢাকা ফিরবেন। ক্রুইফ ও কোস্টার আসার পর তাদের কাজ হবে কি? সোহাগ বলেন, ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় এশিয়ান গেমস শুরু হচ্ছে। ফুটবল ইভেন্টে বাংলাদেশ অংশ নেবে। খেলোয়াড় বাছাই ও প্রস্তুতি দুই ডাচ কোচ আসার পরই শুরু করব। সুতরাং ঢাকায় আসার পর দুইজনকে ব্যস্ত সময় কাটাতে হবে। অবশ্য কোনো কারণে তারা যদি থাকতে না চান তা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। এক্ষেত্রে ফেডারেশনকে তখন বিকল্প চিন্তা করতে হবে। এদিকে বাফুফের নির্বাহী কমিটির এক সদস্য জানান, কোচের ব্যাপারটি সভাপতিই দেখা শোনা করছেন। তবে এতটুকু জানি দুই কোচ সালাউদ্দিন ভাইকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন আগে পুরো বেতন না পাওয়া পর্যন্ত নতুন কোনো অ্যাসাইনমেন্টে হাত দেবেন না। ঢাকায় ফিরে বিষয়টি নিয়ে তারা চূড়ান্ত আলাপ করবেন। আলোচনা সন্তোষজনক না হলে তারা দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন। অর্থাৎ ঢাকা ফেরার পর চূড়ান্ত হয়ে যাবে ক্রুইফ ও কোস্টার থাকবেন কিনা। কেউ কেউ আবার বলছেন, ভেতরে ভেতরে বাফুফে নতুন কোচের সন্ধানও করছে।