মোহাম্মদ আশরাফুল, মাহাবুবুল আলম রবিন, মোশাররফ রুবেলসহ ৯ ক্রিকেটারকে বিপিএলের দ্বিতীয় আসরে সরাসরি ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার কথা জানিয়েছিল আইসিসির তদন্ত কমিটি আকসু। দীর্ঘদিন তদন্ত করে এই অভিযোগ প্রমাণ করেছিল আকসু। অভিযুক্তদের পুরোপুরি দোষী সাব্যস্ত করতে তিন সদস্যের একটি ট্রাইব্যুনাল কমিটি গঠন করে ক্রিকেট বোর্ড। সেই কমিটি গত ২৬ ফেব্রুয়ারি একটি সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণা করেছিল ট্রাইবুন্যাল কমিটি। গতকাল রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষদের (অভিযুক্ত ক্রিকেটার, কর্মকর্তা, বিসিবি ও আইসিসি) কাছে মেইল করেছেন ট্রাইবুন্যাল কমিটি। অভিযুক্তদের স্যাংশন হেয়ারিং হবে আগামী ১৮ কিংবা ১৯ জুন। এরপর অভিযুক্তদের শাস্তি ঘোষণা করা হবে। কাল এমনটাই জানিয়েছেন বিসিবির ভারপ্রাপ্ত সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন।
গত ফেব্রুয়ারির সংক্ষিপ্ত রায়ে অভিযুক্ত ৯ ক্রিকেটারের মধ্যে মোশাররফ রুবেল ও রবিনকে নির্দোষ ঘোষণা করে ট্রাইবুন্যাল কমিটি। ট্রাইবুন্যালের ওই রায়ে সন্তুষ্ট হয়নি আইসিসি ও বিসিবি। পুনঃতদন্তের কথা বলেছিল দুটি সংস্থা। কাল কমিটি ই-মেইলে অভিযুক্তদের কেন শাস্তি দেওয়া হলো এবং কেন নির্দোষ করা হলো, সে সব বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ কারণ দর্শীয়ে রায় পাঠিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। এ বিষয়ে বিসিবির ভারপ্রাপ্ত সিইও বলেন, 'অভিযুক্তদের কেন দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, কেন নির্দোষ ঘোষণা করা হয়েছে, এসব ব্যাখ্যা করে পূর্ণাঙ্গ রায় পাঠিয়েছে ট্রাইবুন্যাল কমিটি। এরপর আগামী ১৮ কিংবা ১৯ জুন স্যাংশন হেয়ারিং করা হবে। সেখানেই রায় ঘোষণা করা হতে পারে। অভিযুক্তরা এরপর আপিল করতে পারেন।' পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি কাল পাঠানো হয়েছে ঠিকই। কিন্তু অভিযুক্তদের শাস্তির কথা উল্লেখ করা হয়নি। এ প্রসঙ্গে বিসিবির সিইও বলেন, 'সত্যি বলতে আমরা এখনো বিষয়টি দেখার সুযোগ পাইনি। আমাদের সংশ্লিষ্ট আইন কর্মকর্তারা বিষয়টি দেখবেন। এর বেশি আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়।'
বিপিএলের দ্বিতীয় আসরে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের পক্ষে দুটি ম্যাচ পাতানোর কথা স্বীকার করেছিলেন টেস্ট ক্রিকেটের সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান আশরাফুল। এরফলে তাকে সব ধরনের ক্রিকেটে নিষিদ্ধ করে বিসিবি। ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন নিউজিল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার ল্যু ভিনসেন্ট। যার নাম আকসুর খাতায় ছিল না। এছাড়া শ্রীলঙ্কার কৌশল্য লোকুরাচ্চিও স্বীকার করেন অভিযোগ। সংক্ষিপ্ত রায়ে ঢাকা গ্ল্যাডিয়টর্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিহাব চৌধুরীকেও অভিযুক্ত করা হয়। স্যাংশন হেয়ারিংয়ে অভিযুক্তরা সবাই আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পারবেন। অবশ্য আশরাফুলসহ তিন ক্রিকেটার ইতিমধ্যেই শাস্তি মওকুফের জন্য লিখিত আবেদন করেছেন। সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণার সময় ট্রাইবুন্যাল কমিটি জানিয়েছিল, তিন সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত রায় জানানো হবে। কিন্তু সেটা জানানো হয়েছে সাড়ে তিন মাস পর।