উনিশ শতকের বিখ্যাত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন ডিজরাঈলি তার 'দি ইয়াং ডিউক' উপন্যাসে প্রথমবারের মতো 'ডার্ক হর্স' শব্দটি ব্যবহার করেন। ডিউক অব সেন্ট জেমস এমন এক রেসে অংশ নিয়েছিলেন, যেখানে অবিশ্বাস্যভাবে তার ঘোড়া বিজয়ী হয়েছিল। সে থেকে 'ডার্ক হর্স' একটা প্রবাদের মতো হয়ে যায়। এ এমন এক ঘোড়া যে আড়াল থেকে বেরিয়ে এসে রেসের সব তাজাদম ঘোড়াকে হারিয়ে দেয়। 'অন্ধকারের ঘোড়া' এরপর বহুভাবেই ব্যবহৃত হয়েছে। খেলার ময়দান থেকে এই 'টার্ম' পৌঁছে গেছে রাজনীতিতেও। রেসের ময়দান ছেড়ে এই শব্দ যুগলের সঙ্গে পরিচিত হয়েছে ফুটবল থেকে শুরু করে পৃথিবীর নামিদামি সব খেলায়।
ফুটবলে 'ডার্ক হর্সে'র কথা বহু আগেই প্রচলিত হয়েছে। বিশ্বকাপে অনেক সময়ই দেখা যায়, ফেবারিট দলগুলোকে ভোগান্তি উপহার দিয়ে অযাচিত কোনো দল সফলতার মুখ দেখে ফেলে। ১৯৯০ সালে ক্যামেরুন হারিয়েছিল ফেবারিট আর্জেন্টিনাকে (১-০)। ১৯৮২ বিশ্বকাপে আলজেরিয়া ২-১ গোলে অবিশ্বাস্যভাবে হারিয়েছিল পশ্চিম জার্মানিকে। ব্রাজিল বিশ্বকাপে 'ডার্ক হর্স' হতে যাচ্ছে কে? প্রশ্নের উত্তরটা এরই মধ্যে ফুটবলবোদ্ধারা দিয়েছেন। বেলজিয়াম।
বেলজিয়াম এমন এক দল যারা ইউরোপীয়ান ফুটবলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ময়দান পেরিয়েও ১২বার বিশ্বকাপ খেলেছে। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে খেলেছে সেমিফাইনাল। তারপরও তাদেরকে ফেবারিট হিসেবে কেউ কখনো উল্লেখ করেনি। কিন্তু গত কয়েকটা বছরে ইউরোপীয়ান ফুটবলে কেবল নয়, বিশ্ব ফুটবলেই বেলজিয়াম নিজেদের সম্পর্কে ধারণাটা পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। ২০১২ সাল থেকে বেলজিয়াম ২০ ম্যাচ খেলে মাত্র তিনটা ম্যাচ হেরেছে। সুইডেন, ফ্রান্স এবং ক্রোয়েশিয়ার মতো দলগুলোর সঙ্গেও বেলজিয়াম ছিল সফল। এ সময়ের মধ্যেই ইতিহাসের সর্বোচ্চ র্যার্ঙ্কিংয়ে তারা পৌঁছে ২০১৩ সালে (৫)।
বেলজিয়ামকে 'ডার্ক হর্স' মানতেই হচ্ছে। তবে এই অন্ধকারের ঘোড়ার রাইডার (চালক) কে? এর উত্তরটাও বোধ হয় সবার জানা। বেশ কয়েকজন তরুণ তারকা বেলজিয়ামের স্বপ্ন সারথি হিসেবে ব্রাজিল যাচ্ছেন। তবে ২৩ বছরের এক তরুণ কেড়ে নিয়েছেন ভক্তদের সব মনোযোগ। হয়ে উঠেছেন আশা-আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রবিন্দু। 'ডার্ক হর্সে'র রাইডার হিসেবে এরই মধ্যে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে নাম ডাক।
ইংলিশ ক্লাব চেলসির মধ্য মাঠের ফুটবলার ইডেন হ্যাজার্ড। বেলজিয়ান ফুটবলার দম্পতি কেয়ার্নে-থিয়েরির সংসারে হ্যাজার্ড জন্ম নিয়েছেন ১৯৯১ সালের ৭ জানুয়ারি।