আফ্রিকা মহাদেশের প্রথম দেশ হিসেবে বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্বকাপ আয়োজন করে অন্য উচ্চতায় জায়গা ঠাঁই নিয়েছিল মাদিবার (নেলসন ম্যান্ডেলা) দেশ। ২০১০ সালের ওই আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল স্পেন। যা স্পেনের প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা। বিশ্বসেরা হওয়ায় স্পেনিশ ফুটবল ইতিহাসে সোনার অক্ষরে লেখা থাকবে দক্ষিণ আফ্রিকার নাম। ওই আসরটি আবার ফুটবলপ্রেমীদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে আরও একটি কারণে। ভুভুজেলা! লম্বা আকৃতির বাঁশি, যার আওয়াজে আওয়াজে গুরু ডুম্বুর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছিল আফ্রিকাজুড়ে। বিশ্বকাপের পর সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল ভুভুজেলা। অনেকেই মনে করেছিলেন ব্রাজিল বিশ্বকাপেও দেখা মিলবে ভুভুজেলার। কিন্তু ফিফা কঠোর। আওয়াজে অতিষ্ঠ ফিফা নিষিদ্ধ করে বাঁশিটিকে। ভুভুজেলা নিষিদ্ধ। তাই বলে থেমে ছিলেন না ব্রাজিলিয়ানরা। ভুভুজেলার আদলে তৈরি করে কাক্সিরালা। কিন্তু দুর্ভাগ্য। সেটাও নিষিদ্ধ করে ফিফা। শুধু কাক্সিরালাই নয়, মোট ২৪টি জিনিসের উপর জারি করা হয় নিষেধাজ্ঞা। যা নিয়ে বিশ্বকাপের খেলাগুলো দেখতে মাঠে প্রবেশ করতে পারবেন না দর্শকেরা।
২০১০ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকায় ভুভুজেলা নতুন একটা আমেজ তৈরি করেছিল। বাঁশিটির আওয়াজে কানে তালা লেগে যেত। সারাক্ষণ ভোঁ ভোঁ শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে যেতেন দর্শকরা। শুধুই কি খেলায়? হোটেল কিংবা বাড়িতে ফেরার পরও সেই শব্দ কানে লেগে থাকত। টানা আওয়াজে দর্শকেরা যেমন বিরক্ত হতেন, তেমনি কাজ করতে সমস্যা হতো রেফারি, সহকারী রেফারিদের। তাদের কথাবার্তায় অসুবিধার সৃষ্টি হতো প্রচণ্ড শব্দে। এসব ভেবেই ফিফা ভুভুজেলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। শুধুই কি ভুভুজেলা? ফিফা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, ড্রাম, বিউগল, নানান ধরনের বাঁশি নিয়ে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করা যাবে না দর্শকদের। ফিফার নিষেধাজ্ঞায় অনেকেই বিরক্ত হয়েছেন। অনেকে আবার খুশিও হয়েছেন।
অনেকে ভাবছেন, ফিফার নিষেধাজ্ঞায় নিত্যই নতুন নতুন গান শুনতে পারবেন তারা।
ভুভুজেলার আদলে কাক্সিরালা তৈরি করেন কার্লিনহোস ব্রাউস। এই শব্দ যন্ত্রটির আওয়াজ ভুভুজেলার মতো বিরক্তিকর ছিল না। কিন্তু ফিফা চাইচ্ছে না কোনো ধরনের আওয়াজ। তাই নিষিদ্ধের তালিকায় পড়েছে কাঙ্েিরালও। বাদ্যযন্ত্র, শব্দযন্ত্র ছাড়াও নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে লেজার থেকে শুরু করে বড় বড় পোষ্টার, কাপড়, ছাতা, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট।