বোলিং অ্যাকশন নিয়ে কম ঝামেলায় পড়তে হয়নি মুত্তিয়া মুরালীধরনকে। অস্ট্রেলিয়ান আম্পায়ার ড্যারেল হার্পার একসময় প্রতিপক্ষই হয়ে উঠেছিলেন মুরালীধরনের। স্বাভাবিক বোলিং করেন, আর দুসরা করেন, হার্পার যখন-তখন 'নো' বলে চিৎকার করে উঠতেন হার্পার। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে উঠেছিল, এক ম্যাচে দল নিয়ে মাঠ ছেড়ে দিতেও চেয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার তৎকালীন অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা। মুরালীধরন এখন অবসরে। এই লঙ্কান স্পিনারের অবসরের পর অফ স্পিন যে একটা শিল্প! সেটা ভুলেই যেতে বসেছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। কিন্তু ক্রিকেট মঞ্চে সাঈদ আজমলের আবির্ভাবের পর আবারও অফ স্পিনকে শিল্পের চোখে দেখতে থাকেন সবাই। এখন সেটাও বন্ধ হয়ে গেল। অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের জন্য সাঈদ আজমলকে সব ধরনের ক্রিকেটে নিষিদ্ধ করেছে আইসিসি। প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা জানিয়েছে, নিরপেক্ষ বিশ্লেষণে স্পষ্ট হয়েছে পাকিস্তানের স্পিনার সাঈদ আজমলের বোলিং অ্যাকশন ত্রুটিযুক্ত ও অবৈধ। এ কারণেই এ মুহূর্ত থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার বোলিং নিষিদ্ধ করা হল।' অবশ্য আইসিসির এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে আপিল করবে জানিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। একইভাবে ২০১৫ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্নের কথা জানিয়েছেন ৩৫ টেস্ট খেলা আজমল।
আইসিসির বোলিং নীতিমালা অনুযায়ী একজন স্পিনার ১৫ ডিগ্রির বেশি হাত ভেঙে বোলিং করতে পারবেন না। যদি কোনো বোলার বোলিং করার সময় এরচেয়ে বেশি পরিমাণ হাত ভেঙে ফেলেন, তখন সেটা বেআইনি এবং অবৈধ। সে বিবেচনায় পরীক্ষা দেওয়ার পরও পাস করতে পারেননি আজমল। গত মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্ট চলাকালীন আজমলের বোলিং অ্যাকশনে ত্রুটি খুঁজে পান দুই আম্পায়ার ইয়ান গুল্ড ও ব্রুস অক্সনেফোর্ড। তাদের রিপোর্টের পরে পাকিস্তানের সেরা বোলারকে পরীক্ষা দিতে হয়। কিন্তু সেখানে পাস করতে ব্যর্থ হন। গত একমাসের মধ্যে বেশ কয়েকজন অফ স্পিনারের বোলিং অ্যাকশনে ত্রুটি খুঁজে পায় আইসিসি। বাংলাদেশের অফ স্পিনার সোহাগ গাজীকে অ্যাকশন শুধরে নেওয়ার জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। সোহাগের আগে জিম্বাবুয়ের প্রসপার উতসেয়ার বোলিং নিয়েও সন্দেহ পোষণ করে আইসিসি। এ বছরই বোলিং অ্যাকশনের জন্য নিষিদ্ধ হন নিউজিল্যান্ডের কেন উইলিয়ামসন ও শ্রীলঙ্কার সচিত্র সেনানায়েকে।