টোকিওর মোড়ে মোড়ে জায়ান্ট স্ক্রিনের সামনে দর্শকদের ভিড়। গভীর রাতেও এই ভিড় কমেনি। সুদূর নিউইয়র্কের আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামের নিশিকুরি-চিলিচ ম্যাচ দেখার অপেক্ষায় ছিল সবাই। ইউএস ওপেনের ফাইনাল ম্যাচ। কেবল টোকিও নয়, পুরো এশিয়াই জেগেছিল গতকাল ভোর পর্যন্ত। প্রথম এশিয়ান হিসেবে গ্র্যান্ডস্লামে পুরুষ এককের শিরোপা জয়ের উৎসবে মেতে উঠার অপেক্ষায় ছিল সবাই। তবে এশিয়ানদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারেননি জাপানি তারকা কেই নিশিকুরি। ক্রোয়েশিয়ান তারকা মারিন চিলিচের কাছে ইউএস ওপেনের ফাইনালে ৬-৩, ৬-৩, ৬-৩ গেমে হেরে গেছেন নিশিকুরি।
দুজনের একজনও এর আগে কখনোই গ্র্যান্ডস্লাম ওপেনের ফাইনাল খেলেননি। দুজনের জন্যই ফাইনালটা ছিল বিশেষ কিছু। ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম শিরোপা জয়ের স্বাদ পাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন দুজনেই। তবে ব্যর্থ হলেন কেই নিশিকুরি। সেমিফাইনালে নোভাক জকোভিচকে হারিয়ে এলেও ফাইনালে হেরে গেলেন ১৪তম বাছাই মারিন চিলিচের কাছে। অবশ্য হেরে যাওয়ার পরও জাপানি মিডিয়া নিশিকুরির প্রশংসায় পঞ্চমুখ। ভক্তরা তাকে সাধুবাদ জানিয়েছে। ২৪ বছর বয়সী এক জাপানি হুতারু শোডা এএফপিকে বলেছেন, 'আমি নিশিকুরির জন্য গর্বিত। সব জাপানিই তাকে নিয়ে গর্ব করা উচিত।' সাবেক জাপানি টেনিস তারকা কিমিকো বলছেন, 'আমি তাকে মেসেজ লিখেছি। বলেছি, মন খারাপ কর না। এটাই অনেক বড় সফলতা। এবার সামনে এগিয়ে যাও।' নিশিকুরি গ্র্যান্ডস্লাম জয় করতে পারেননি তবে ভবিষ্যতে তাকে প্রথম এশিয়ান ফাইনালিস্ট হিসেবেই আখ্যায়িত করা হবে। আর কে জানে ২৮ বছরের এই জাপানি ক্যারিয়ার শেষ করার আগে গ্র্যান্ডস্লাম জয় করতেও পারেন!
প্রশংসায় ভাসছেন ক্রোয়েশিয়ান তারকা মারিন চিলিচও। ক্রোট পত্রিকাগুলো চিলিচকে নিয়ে প্রধান শিরোনাম করেছে। সবচেয়ে প্রচলিত পত্রিকা প্রথম পৃষ্ঠাজুড়ে শিরোনাম করেছে, 'গর্বিত দেশ'। পত্রিকায় লিখেছে, 'মারিন চিলিচ নিশিকুরিকে হারিয়েছেন এবং নিজেকে অমর করে তুলেছেন।' মারিন চিলিচ গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্টে এর আগে সর্বোচ্চ সেমিফাইনাল পর্যন্ত খেলেছেন। ২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সেমিফাইনাল খেলেছিলেন তিনি। উইম্বলডনে খেলেছেন কোয়ার্টার ফাইনাল। তবে প্রথমবারের মতো ফাইনাল খেলতে এসেই শিরোপা নিয়ে বাড়ি ফিরলেন মারিন চিলিচ। নিজেকে নিয়ে গর্বিত এই ক্রোট বলছেন, 'আমি ২০, ২৫ এবং ১৫ র্যাঙ্কিংয়ের আশেপাশেই ঘুরছিলাম। মাঝে মধ্যে উন্নতি করেছি আবার পতন হয়েছে আমার। তবে অবশেষে আমার স্বপ্ন সত্যি হলো।' আত্দবিশ্বাসের কারণেই চিলিচ সফল হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। 'আমার সফল হওয়ার প্রধান কারণ হলো আমার মানসিক শক্তি। আমি মনে করতাম মজা করে খেলাটাই সবচেয়ে ভালো। এভাবেই আমি মানসিকভাবে শক্তিশালী হয়েছি।'