বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার কোয়ার্টার ফাইনালে ম্যাচে বাজে আম্পায়ারিং নিয়ে যথন বাংলাদেশসহ ক্রিকেট বিশ্বে সমালোচনার ঝড় বয়ছে তখন সেই বিতর্কিত আম্পায়ার আলিম দার ও ইয়ান গোল্ডের পক্ষেই সাফাই গাইছে আইসিসি। ম্যাচ কর্মকর্তাদের নিয়ে আইসিসি প্রেসিডেন্ট আ হম ম মুস্তফা কামালের মন্তব্যকে দুভার্গ্যজনক বলে মন্তব্য করলেন আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভিড রিচার্ডসন। ম্যাচের একদিন পর আজ আইসিসির তরফে এক বিবৃতিতে একথা বলা হয়। সেইসঙ্গে ম্যাচে দীর্ঘচর্চিত নীতির বাইরে গিয়ে ম্যাচ কর্মকর্তারা 'কিছু একটা' করেছেন এমন পরোক্ষ অভিযোগকেও ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিলেন রিচার্ডসন। এছাড়া আম্পায়ারদের নিয়ে মুস্তফা কামালকে তার বক্তব্য দেওয়ার ক্ষেত্রে আরো 'বিবেচনাপ্রসূত' হওয়া উচিত ছিল বলেও তাকে এক প্রকার শাসিয়েই দেওয়া হলো।
আইসিসির ওই বিজ্ঞপ্তিতে রিচার্ডসন বলেন, 'আইসিসি জনাব মুস্তাফা কামালের মন্তব্যকে গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে। ওনার বক্তব্য খুবই দুঃখজনক। হতে পারে এটি তার ব্যক্তিগত মত, কিন্তু আইসিসির সভাপতি হিসেবে ম্যাচ কর্মকর্তাদের সমালোচনা করার ক্ষেত্রে তার আরো সচেতন হওয়া উচিত ছিল। কারণ তাদের অখণ্ডতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন করা যায় না।'
রুবেল হোসেনের বলে রোহিত শর্মা আউট হলেও সেই বলটি ‘নো বল’ ডেকে সমালোচনার মুখে পড়েছেন দুই আম্পায়ার ইয়ান গোল্ড ও আলিম দার। বলটির উচ্চতা কোমরের বেশি ছিল কি ছিল না, এ নিয়ে যখন বিতর্ক, আইসিসির প্রধান নির্বাহী তখন সিদ্ধান্তটিকে ‘৫০: ৫০’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বিবৃতিতে বলেন, 'নো বলের সিদ্ধান্ত ছিল ৫০: ৫০ সম্ভাবনা। খেলাটার চেতনা বলে, আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত এবং সেটাকে সম্মান করা উচিত।'
ম্যাচের আম্পায়ারিংকে 'বাজে আম্পায়ারিং' হিসেবে অভিহিত করেছিলেন মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছিলেন, 'অনেক সিদ্ধান্তই ভুলভাবে বাংলাদেশের বিপক্ষে গেছে। তবে সেটা ইচ্ছাকৃত নাকি অনিচ্ছাকৃত, তা আমি জানি না।' আইসিসি সভাপতির এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রিচার্ডসন বলেন, 'ম্যাচ অফিশিয়ালদের 'অ্যাজেন্ডা' ছিল কিংবা তাদের সামর্থ্যের বাইরে অন্য কিছু করেছেন, এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে।'
বিবৃতিতে আইসিসি প্রধান নির্বাহী অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে চলমান একাদশ বিশ্বকাপকে খুব সফল ও উজেজনায় ভরপুর বলেও জানিয়েছেন। ডেভিড রিচার্ডসন বলেন, 'এখন আমরা স্রেফ একাদশ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের শেষ কয়েকটি ম্যাচ আয়োজনের দিকেই দৃষ্টি দিচ্ছি। টুর্নামেন্টটি বেশ সফল হয়েছে ও আগ্রহ তৈরি করেছে।'
এদিকে, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সচিব অনুরাগ ঠাকুর বলেছেন, 'আমার মতে, তিনি (মুস্তফা কামাল) এসব ব্যাপার আইসিসি সভায় তুলতে পারতেন। বাস্তবতা হচ্ছে, আমরা বাংলাদেশের বিপক্ষে জিতেছি। লিগ পর্বেও ভারত সবগুলো ম্যাচ জিতেছে। এখন সময় সামনে তাকানোর...পরের সভায় (আইসিসি) এ বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আলোচনা, তর্ক-বিতর্ক করব।'
আইসিসিতে ভারতের প্রভাব ক্রমশই স্পষ্ট হয়ে উঠছে-এমন অভিযোগে বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী ও বিসিবির সাবেক সভাপতি মুস্তফা কামাল বলেছেন, 'আমি 'ইন্ডিয়ান' ক্রিকেট কাউন্সিলের প্রতিনিধিত্ব করতে পারি না। কেউ যদি এমন ফল আমাদের ওপর চাপিয়ে দেয়, কেউ তা মেনে নিতে পারে না।' খবর এএফপি, রয়টার্স ও আইসিসি-ক্রিকেটডটকম।
বিডি-প্রতিদিন/ ২০ মার্চ ২০১৫/শরীফ