ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী আহনাফ বিন আশরাফ নাবিল। কাজ করছেন গার্ডিয়ান এঞ্জেল প্লাস নামে এআই ভিত্তিক বহুমাত্রিক অ্যাপস উদ্ভাবন নিয়ে। ইতিমধ্যে অ্যাপস ডেভেলপিংয়ের কাজ মধ্যম পর্যায়ে রয়েছে। এতে রয়েছে হেল্প বাটন ও লাইভ লোকেশন শেয়ারিং, মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা ও আত্মহত্যা প্রতিরোধ ফিচার, রক্তদাতার নেটওয়ার্ক ও জরুরি তথ্য, এআই ভিত্তিক আবেগ বিশ্লেষণ এবং পরিবেশ ও ক্যারিয়ার সচেতনতামূলক কনটেন্ট।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার শহরের কলেজপাড়ার চাকুরীজীবী মতিউল আশরাফ সুমন ও স্কুল শিক্ষিকা নায়না আক্তার তৃণা দম্পতির ছেলে নাবিল। ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞানের প্রতি তার ছিলো অন্যরকম আকর্ষণ। ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়া অবস্থাতেই সে বিভিন্ন বিজ্ঞানভিত্তিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে শুরু করে। এখন পর্যন্ত সে জাতীয় ও স্কুল পর্যায়ে দুইশত সনদ অর্জন করেছে। এছাড়া উদ্ভাবনি চিন্তায় নাসা থেকে প্রাপ্ত একাধিক স্বীকৃতি তার অর্জনের ঝুলিকে করেছে সমৃদ্ধ। সম্প্রতি বাংলাদেশের হয়ে দুটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রতিনিধিত্ব করতে ডাক পেয়েছেন নাবিল। আগস্টে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে Istanbul International MUN 2025 ও অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অনুষ্ঠিতব্য Neoteric Summit 2025 এ অংশ নিতে চিঠি পেয়েছেন এই কিশোর।
তুরস্কের আয়োজনে অংশ নিতে নাবিলকে প্রায় তিন লাখ প্রতিযোগীর সঙ্গে লড়াই করতে হয়। আমেরিকার বাছাইয়ে টিকতে প্রায় ছয় লাখ প্রতিযোগীর সঙ্গে লড়াই হয়। সারা বিশ্ব থেকে ইস্তাম্বুলে ১৫০ জন ও আমেরিকায় যাবে ১০০ জন ক্ষুদে বিজ্ঞানী।
সেখানে তিনি শিশু ও মানবাধিকার, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রযুক্তিনির্ভর সামাজিক পরিবর্তন বিষয়ে আলোচনায় অংশ নিবেন। পাশাপাশি তার উদ্ভাবিত অ্যাপ গার্ডিয়ান এঞ্জেল প্লাস উপস্থাপন করবেন, যা শিশু ও নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত, জলবায়ুর পরিবর্তন রোধসহ ১৯টি বিষয়ের ডিজিটাল সমাধান হিসেবে কাজ করবে। তার এ অর্জন সাড়া ফেলেছে সকলের মাঝে।
আহনাফ বিন আশরাফ নাবিল জানায়, দুটি সম্মেলনে সে অ্যাপটিকে উত্থাপন করবেন। এটিকে একটি প্রযুক্তি-নির্ভর মানবিক উদ্যোগ হিসেবে তুলে ধরা হবে। সম্মেলনের মাধ্যমে নিজের দেশকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরতে চান।
নাবিলের মা নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক নায়েনা আক্তার জানান, ছেলের এ প্রাপ্তিতে তিনি খুশি। অপেক্ষার প্রহর গুনছেন কখন ছেলের উদ্ভাবন বিশ্বমঞ্চে প্রদর্শিত হয়ে দেশের সুনাম বয়ে আনবে। অ্যাপস উপস্থাপনের পাশাপাশি একজন বাংলাদেশি হিসেবে সেখানে আলোচনায় অংশ নিতে পারাটাকেও গর্বের বলে মনে করছেন তিনি। পাশাপাশি ছেলের বাইরে যাওয়া ও উদ্ভাবন কাজে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ সাহিদুল ইসলাম জানান, নাবিল এ বয়সেই গবেষণা কাজে ভূমিকা রেখে অনেক সনদ ও পুরস্কার পেয়েছে। নাসা থেকেও সে স্বীকৃতি পেয়েছে। বিষয়টি অবশ্যই সবার জন্য খুব আনন্দের। তার এই সাফল্যে সবাই গর্বিত।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল