ভারতের উত্তর কেরলের ছোট্ট একটি গ্রাম। নাম কালপেট্টা। সেখানকার একটা হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে ও.পি জয়সা। মেয়েটি সারাদিন খেলাধূলা করতো। একদিন রেসে অংশ নিয়ে প্রথম হয়। সেইদিনের পর কেটে গেছে ১৬টি বছর। আজ সেই মেয়ে ভারতের হয়ে রিও অলিম্পিকে অংশ নিচ্ছে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
কালপেট্টা থেকে রিও পর্যন্ত পৌঁছাতে জয়সাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। তার পাঁচ বছর বয়সে বাবা এক মারাত্মক দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন। চরম অর্থকষ্টে জয়সার মা মানসিক রোগী হয়ে যান। শৈশব নিয়ে জয়সা বলেন, “এমন একটা সময় ছিল, যখন ক্ষুধার জ্বালায় মাটি খেয়ে থাকতাম। ভাত খাওয়াটা ছিল আমার কাছে স্বপ্নের মতো।”
গ্রামের এক ছটাক জমিটাও বন্ধক দিতে হল। জীবনধারণের জন্য একটা সময় অন্যের বাড়িতে কাজ করার পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু আত্মসম্মান কখনও হারাননি জয়সা। জমি বন্ধকের টাকায় গরু কেনেন। এরপর মাইলের পর মাইল হেঁটে বাড়ি বাড়ি বিক্রি করতে যেতেন গরুর দুধ। ফেরার সময় পুরো রাস্তাটাই ফিরতেন দৌড়ে। এটাই ছিল তাঁর ‘প্র্যাকটিস’।
জীবনের দৌড়ে ছুটতে ছুটতে এই ভাবেই একদিন ভালবেসে ফেলেন দৌড়কে। এই সময়ই একটি প্রতিযোগিতায় জিতে স্থানীয় কোচ গিরীশের চোখে পড়েন জয়সা। এরপর গিরীশ স্যারের তত্ত্বাবধানে চাঙ্গাচেরীর কলেজে ভর্তি হন তিনি। শুরু হয় তাঁর আসল দৌড়।
২০০৫ সালে ইউনিভার্সিটি গেমস-এ ৫০০ মিটার, ১০ হাজার মিটার এবং ১,৫০০ মিটার দৌড়ে সোনা জেতেন জয়সা।
২০০৬ সালে এশিয়ান গেমস-এ ব্রোঞ্চ পদক আসে তাঁর হাতে।
২০১৪ সালে এশিয়ান গেমস-এ ১,৫০০ মিটার থেকে ব্রোঞ্চ পদক আনেন ৩২ বছরের জয়সা। আর এ বার তাঁর পাখির চোখ রিও অলিম্পিক। একসময়ের মাটি খাওয়া সেই মেয়ে রিও অলিম্পিকের ট্র্যাকে যাবে তেরঙ্গা জার্সিতে।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৯ জুন, ২০১৬/ আফরোজ