ড্যারেন ব্র্যাভোর লড়াকু সেঞ্চুরির পর দুবাই টেস্ট বাঁচাতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মধ্য প্রাচ্যে প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত দিবা-রাত্রির টেস্টে শেষ পর্যন্ত ৫৬ রানে জয়ী হয়েছে স্বাগতিক পাকিস্তান।
দীর্ঘ ৪১০ মিনিট ক্রিজে থেকে ১১৬ রান করে ব্র্যাভো শুধুমাত্র ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি তুলে নেননি পাকিস্তানের জয়ে একাই বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত লেগ স্পিনার ইয়াসির শাহ’র দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরে গেলে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত হয়।
দিনের ১২ ওভার বাকি থাকতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস ২৮৯ রানে শেষ হয়। ড্রয়ের এত কাছাকাছি গিয়েও শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা হাতাছাড়া হওয়ায় দারুন হতাশ হয়েছেন ব্র্যাভো। আউটের পরে বেশ কিছুক্ষণ তিনি ক্রিজে দাঁড়িয়ে ছিলেন। অষ্টম সেঞ্চুরির পথে তিনি ১০টি বাউন্ডারি ও একটি ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন।
৩৪৬ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ব্র্যাভোর সেঞ্চুরিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে ২৭ ওভারে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় মাত্র ৮৩ রান। বাঁহাতি মোহাম্মদ নাওয়াজ দেভেন্দ্র বিশুকে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে ফেলার পরে শেষ দুই ব্যাটসম্যান মিগুয়েল কামিন্স ও শ্যানন গ্যাব্রিয়েল দুজনেই মাত্র ১ রানে রান আউটের শিকান হন।
পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ আমির ৬৩ রানে ৩ ও ইয়াসির ১১৩ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট।
দুবাইয়ের দিবা-রাত্রির টেস্ট ম্যাচটি বেশ কয়েকটি কারণে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আজহার আলীর ট্রিপল সেঞ্চুরির (৩০২*) পরে লেগ স্পিনার বিশুর ৪৯ রানে ৮ উইকেট ও ব্র্যাভোর দুর্দান্ত দুটি লড়াকু ইনিংস।
ইনিংসের প্রথম বলেই মারলন স্যামুয়েলসের উইকেট তুলে নেবার পরে পাকিস্তান কখনই চিন্তা করেনি জয়টা এতটা ধীরে আসবে। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে ব্র্যাভোর কারনে পাকিস্তানকে ততই হতাশ হতে হয়েছে। গত বছর নভেম্বরে এডিলেডে অস্ট্রেলিয়া বনাম নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচের পরে টেস্ট ইতিহাসে এটা দ্বিতীয় গোলাপী বলের ম্যাচ। পাকিস্তানের কাছে ম্যাচটা আরো বেশী স্মরণীয় এই কারনে যে ১৯৫২ সালে পাঁচদিনের ফর্মেটে আত্মপ্রকাশ করার পরে এটা তাদের ৪০০তম ম্যাচ ছিল।
রস্টন চেসকে (৩৫) সাথে নিয়ে ব্র্যাভো পঞ্চম উইকেটে ৭৭ রান ও অধিনায়ক জেসন হোল্ডারকে সাথে নিয়ে সপ্তম উইকেটে ৬৯ রান যোগ করেন। হোল্ডার ৪০ রানে অপরাজিত ছিলেন।
৬ উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান যখন ২২৪ তখনই পাকিস্তান নতুন বল হাতে নেয়। সেঞ্চুরি পূর্ণ করতে ব্রাভোর তখন মাত্র চার রান প্রয়োজন ছিল। আমিরের প্রথম বলেই ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ব্রাভো সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। ব্রাভোকে সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন চেস। জুলাইতে চেসের ১৩৭ রানের অপরাজিত ইনিংসের উপর ভর করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ভারতের বিপক্ষে জ্যামাইকা টেস্ট ড্র করেছিল।
সিরিজের বাকি দুটি ম্যাচ ২১-২৫ অক্টোবর আবু ধাবীতে ও ৩০ অক্টোবর-৩ নভেম্বর পর্যন্ত শারজাহতে অনুষ্ঠিত হবে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
পাকিস্তান প্রথম ইনিংস ৫৭৯-৩ ডিক্লেয়ার (আজহার আলী ৩০২*, সামি আসলাম ৯০, বাবর আজম ৬৯, আসাদ শফিক ৬৭)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস ৩৫৭ (ড্যারেন ব্র্রাভো ৮৭, স্যামুয়েলস ৭৬, ইয়াসির শাহ ৫-১২১)
পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংস ১২৩ (সামি আসলাম ৪৪, বিশু ৮-৪৯)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংস ২৮৯ (ব্র্যাভো ১১৬, জনসন ৪৭, হোল্ডার ৪০, চেস ৩৫, আমির ৩-৬৩)
ফল : পাকিস্তান ৫৬ রানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : আজহার আলী (পাকিস্তান)।
বিডি প্রতিদিন/ ১৮ অক্টোবর ২০১৬/ এনায়েত করিম