এবার আর ভুল করলো না বাংলাদেশ। চারটি ওয়ানডে টুর্নামেন্ট, দুটি টি-টোয়েন্টি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফাইনাল মানেই ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের আক্ষেপ। তবে ডাবলিনে সেই আক্ষেপ দূর হলো বাংলাদেশের। ফাইনালে ছয়বারের ব্যর্থতার উইন্ডিজকে ৫ উইকেটে হারিয়ে অবশেষে শিরোপার স্বপ্ন পূরণ হলো টাইগারদের।
২০০০ সালে টেস্ট আঙ্গিনায় প্রবেশের পর এই প্রথম কোনো টুর্নামেন্টের শিরোপা ঘরে তুলতে পারল বাংলাদেশ। সপ্তম ফাইনালে অর্জিত এই সাফল্য দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার যাত্রা শুরু হল জানিয়ে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা জানালেন, বাংলাদেশ এই সাফল্যযাত্রা অব্যাহত রাখবে। বিশ্বকাপের আগে এই সাফল্য নিশ্চিত বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে অনেক দূর এগিয়ে দেবে।
২০০৯ ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে উঠেছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে হয় এ ত্রিদেশীয় সিরিজ। ফাইনালে আগে ব্যাট করে ১৫২ রানে অলআউট হলেও, বল হাতে ঠিকই লঙ্কানদের চেপে ধরে বাংলাদেশ।
মাত্র ৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে প্রতিপক্ষ। কুমার সাঙ্গাকারা ৫৯ রানের ইনিংস খেললেও ১১৪ রানেই ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। তখনও তাদের জয়ের জন্য প্রয়োজন ৩৫ রান। এই ৩৫ রানের মধ্যে একাই ৩৩ রান করেন অফ স্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরন। মাত্র ১৬ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কার মারে খেলা এ ইনিংসে বাংলাদেশকে হতাশার সাগরে ডোবান তিনি।
২০১২ সালে এশিয়া কাপের ফাইনালে এসে ২ রানের আক্ষেপে পুড়তে হয় বাংলাদেশকে। ফাইলানে পাকিস্তানকে ২৩৬ রানে বেঁধে রাখে বাংলাদেশ। তামিম ইকবালের টানা চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরি এবং সাকিব আল হাসানের আসরে তৃতীয় ফিফটির পরেও মাত্র ২ রানের জন্য শিরোপা জিততে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ।
২০১৬ এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টির ফাইনালে উঠেও ব্যর্থ বাংলাদেশ।যেখানে প্রতিপক্ষ ছিল ভারত। তবে বৃষ্টির কারণে ১৫ ওভারে নেমে আসা সেই ম্যাচে দাপুটে ভয় পায় ভারত।
২০১৮ সালে ঘরের মাঠে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে উঠে শ্রীলঙ্কাকে হারাতে পারেনি টাইগাররা। এ সিরিজের শুরুর তিন ম্যাচে প্রতিপক্ষকে পাত্তাই দেয়নি বাংলাদেশ। অথচ শেষের দুই ম্যাচে হেরে গিয়ে হাতছাড়া হয় মাশরাফিদের।
এরপর লঙ্কানদের মাঠে নিদাহাস ট্রফির ফাইনালেও উঠে যায় বাংলাদেশ। ফাইনালে সাব্বির রহমানের ৫০ বলে ৭৭ রানের ইনিংসে ভর করে ১৬৬ রানের সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। যা তাড়া করতে নেমে সাকিব, মুস্তাফিজ, রুবেলদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে বেশ চাপেই পড়ে যায় তারা। তবে ইনিংসের ১৯তম ওভারে সেই রুবেলের ওভারেই ২২ রান তুলে বাংলাদেশের স্বপ্ন চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেন দিনেশ কার্তিক।
গত বছর এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলে বাংলাদেশ। যেখানে ফের তাদের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ায় ভারত। ২২২ রানের অল্প পুঁজি নিয়েও মুস্তাফিজ, রুবেল, মাশরাফিদের অসাধারণ বোলিংয়ে ভারতকে চাপে রাখে বাংলাদেশ। কিন্তু এবার টাইগারদের স্বপ্নের হন্তারক হিসেবে আবির্ভূত হন কেদার যাদভ। ব্যাট হাতে ম্যাচের শেষ বলে জিতিয়ে দেন দলকে। ফলে এক বছরে তৃতীয় এবং সব মিলিয়ে ষষ্ঠ ফাইনাল হারের তীব্র যন্ত্রণা পায় বাংলাদেশ।
বিডি-প্রতিদিন/তাফসীর