গত কয়েক বছর ধরে বিশ্ব জুড়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফর্ম করছেন টিম ডেভিড। বিস্ফোরক এই ব্যাটসম্যানকে আসছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অস্ট্রেলিয়া দলে তাকে চান দেশটির সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিং। বিশ্বকাপ জয়ী সাবেক এই অজি অধিনায়কের দৃঢ় বিশ্বাস, সুযোগ পেলে বিশ্ব মঞ্চে বড় প্রভাব রাখবেন ডেভিড।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে এখনও অভিষেক হয়নি ডেভিডের। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলার স্বাদ তিনি পেয়ে গেছেন তিনি। জন্মভূমি সিঙ্গাপুরের হয়ে এখন পর্যন্ত ১৪ টি-টোয়েন্টি খেলে ৪৬.৫০ গড় ও ১৫৮.৫২ স্ট্রাইক রেটে তার রান ৫৫৮। ফিফটি আছে ৪টি।
ডেভিড আগেই বলেছেন, আপাতত সিঙ্গাপুরের হয়ে খেললেও ভবিষ্যতে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলার লক্ষ্যেই ছুটছেন তিনি। কারণ ক্রিকেটে হাতেখড়ি, ক্রিকেটার হিসেবে বেড়ে ওঠা, সবই তার অস্ট্রেলিয়ায়। অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে এখন নিয়মিত মুখ ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। গত নভেম্বরে তাসমানিয়ার হয়ে খেলেছেন লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেট। বিগ ব্যাশে খেলেছেন হোবার্ট হারিকেন্সের হয়ে।
নিয়মিত ব্যাট হাতে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছেন ডেভিড। পাকিস্তান সুপার লিগের সবশেষ আসরে লাহোর কালান্দার্সের হয়ে ১১ ম্যাচ খেলে ১৯৪ স্ট্রাইক রেটে রান করেন ২৭৮। এরপর পেয়ে যান আইপিএলেও খেলার সুযোগ। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে প্রথম দুই ম্যাচে মাত্র ১২ রান করে বাদ পড়েন ডেভিড। শেষ দিকে তাকে আবারও ফেরানো হয় একাদশে। তখন তিনি দেখান ঝলক। সব মিলিয়ে ৮ ম্যাচ খেলে করেন ১৮৬ রান।
টুর্নামেন্টে ডেভিডের স্ট্রাইক রেট ছিল ২১৬.২৭। আইপিএলের এক আসরে ২৫ এর বেশি বল খেলা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। ১৮৩.৫১ স্ট্রাইক রেটে ১ হাজার ২ রান করে এই বছরে টি-টোয়েন্টিতে এখন পর্যন্ত তৃতীয় সর্বোচ্চ স্কোরার ২৬ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান।
গত মাসে হোবার্ট হারিকেন্সের ‘হেড অব স্ট্র্যাটেজি’ হিসেবে নিয়োগ পাওয়া পন্টিং মনে করেন, গত কয়েক বছরে ডেভিডের খেলায় অসাধারণ পরিবর্তন এসেছে। এই কিংবদন্তি বলেন, নির্বাচকদের উচিত বিশ্বকাপে ডেভিডকে দলে রাখা। আমি যদি অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচক হতাম, আমার দলে এমন একজনকেই পেতে চাইতাম। সে একজন পুরোদস্তুর ম্যাচ উইনার। সে গড়পড়তা কোনো খেলোয়াড় নয় যে, শুধুমাত্র স্কোয়াডে থাকতে পারে। সে আসলেই বিশ্বকাপ জিতিয়ে দিতে পারে।
ডেভিডকে দেখে পন্টিংয়ের মনে পড়ছে তার সাবেক এক সতীর্থের কথা, অস্ট্রেলিয়ার ২০০৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ে যার ছিল বড় অবদান। তিনি বলেন, সে আসলে আমাকে ২০০৩ (ওয়ানডে) বিশ্বকাপের অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের কথা মনে করিয়ে দেয়। তাদের মতো খেলোয়াড়দের বিশ্বকাপে নিয়ে গেলে এবং সুযোগ দিলে, তারা টুর্নামেন্ট জেতার সুযোগ করে দেবে। আমি জানি, অস্ট্রেলিয়ার মিডল অর্ডারে আরও কিছু মানসম্পন্ন খেলোয়াড় আছে, তবে তাদের কেউই সম্ভবত গত দুই বছরে টিমের মতো প্রভাব ফেলতে পারেনি।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার শিরোপা ধরে রাখার অভিযানের অংশ হওয়ার ইচ্ছার কথা গত সপ্তাহে বলেছিলেন ডেভিড। দেশের হয়ে অভিষেকের আগে তাকে দলে তো জায়গা পেতে হবে। আগামী ২২ অক্টোবর শুরু হতে যাওয়া বিশ্বকাপের আগে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি ভারতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ আছে অস্ট্রেলিয়ার। অক্টোবরে ঘরের মাঠে তারা সিরিজ খেলবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। তবে বিশ্বকাপের জন্য স্কোয়াড টুর্নামেন্টের অন্তত এক মাস আগে আইসিসির কাছে জমা দিতে হয়।
ডেভিড নির্বাচকদের ভাবনায় থাকবেন বলেই মনে করেন পন্টিং। নির্বাচকদের প্রধান তার সাবেক সতীর্থ জর্জ বেইলি। তিনি বলেন, ডেভিড খুব, খুব ভালো এবং বিপজ্জনক টি-টোয়েন্টি খেলোয়াড়। আমি নিশ্চিত, অস্ট্রেলিয়ান নির্বাচকরা বিশ্বকাপের জন্য দীর্ঘ সময় নিয়ে এবং খুব ভালোভাবে চিন্তাভাবনা করছে। কয়েক মৌসুম আগেও সে পার্থ স্কোর্চার্সের লাইন-আপে সুযোগ পেতে লড়াই করছিল। সেখানে গত ১২ থেকে ১৪ মাসে সারা বিশ্বে খেলা প্রায় প্রতিটি টুর্নামেন্টেই সে ছিল অবিশ্বাস্য।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ