পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জিতে ভারতে যায় বাংলাদেশ দল। প্রত্যাশার পারদ স্বাভাবিকভাবেই ছিল বেশি। ক্রিকেটারদের ভেতরও ছিল তেমন প্রত্যয়। শুরুটা বাংলাদেশ ওরকমই করেছিল।
চেন্নাইতে টস জিতে শুরুতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক শান্ত। তার সিদ্ধান্তের যথার্থতা প্রমাণ করেন বোলাররা। ১৪৪ রানেই ৬ উইকেট তুলে নেন ভারতের। কিন্তু এরপর রবীচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজা ১৯৯ রানের জুটি গড়েন। ভারত থামে ৩৭৬ রানে। জবাবে ১৪৯ রানে প্রথম ইনিংস শেষ করে বাংলাদেশ। এরপর আরও ২৮৭ রান যোগ করে স্বাগতিকরা। গতকাল বাংলাদেশ ম্যাচ হারে ২৮০ রানে।
ভারত-বাংলাদেশ টেস্টে রানের বিচারে এটি সবচেয়ে বড় হার। নিজেদের প্রত্যাশা কোনোভাবেই পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। বোলিং বা ব্যাটিং কোনো বিভাগেই টাইগারদের খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্যে দেখা যায়নি। আর এই জয় দিয়ে ভারত নিশ্চিত করেছে ঘরের মাঠে টানা ১৮ টেস্ট সিরিজ অজেয় থাকছে তারা।
চেন্নাইয়ের উইকেট বিবেচনায় দুই দলই খেলিয়েছে ৩ পেসার, ২ স্পিনার। কমবেশি সফলও ছিলেন পেসাররা। ভারতের প্রথম ইনিংসে ৯ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন বাংলাদেশের পেসাররা। আবার বাংলাদেশের ইনিংসে ধস নামিয়েছিলেন তিন ভারতীয় পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ এবং আকাশ দীপ।
যদিও দ্বিতীয় ইনিংসে অশ্বিন-জাদেজার স্পিন জুটিই তুলে নিয়েছে বাংলাদেশের ৯ উইকেট। সামগ্রিক বিবেচনাতে কানপুর টেস্টের জন্য বাংলাদেশের একাদশে একজন পেসার কমিয়ে একজন স্পিনার বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন ভারতের জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জরেকার। তৃতীয় স্পিনার হিসেবে সাবেক এই ভারতীয় ব্যাটারের পছন্দ তাইজুল ইসলাম।
ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোর এক ভিডিওতে চেন্নাই টেস্টে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স নিয়ে কথা বলেছেন মাঞ্জরেকার। সেখানে তার মুখে শুরুতেই উঠে এলো বড় রান করতে না পারার কথা, ‘আমি কেবল ইতিবাচক দিকেই নজর দিতে চাই। ওপেনাররা ভালো অ্যাপ্রোচ, স্কিল দেখাতে পেরেছে। তবে যখনই তারা ৩০ রান করল, মনে হয়েছে যেন তাদের মানসিক শক্তি, জ্বালানি শেষ হয়ে গেছে। ফলে সেসব ৩০ রানকে সেঞ্চুরিতে পরিণত করতে হবে। যদি আপনাকে ভারতের মত দলকে চ্যালেঞ্জ জানাতে হয়।’
তাইজুল ইসলাম এবং সিনিয়র ক্রিকেটারদের প্রসঙ্গে মাঞ্জরেকারের বক্তব্য, ‘সাকিব, মুশফিকরা তরুণ নয়, তারা অনেক দিন ধরে খেলছে। ফলে এসব সিরিজে তাদের আরও শক্তপোক্ত হতে হবে মানসিকভাবে, সাথে লিটন দাসেরও। এসব জায়গায় তাদের উন্নতি লাগবে। এর বাইরে তাদের পেস ইউনিটে আশার আলো রয়েছে। তাদের ব্যাটারদেরও ভালো সামর্থ্য আছে, স্পিন তাদের জন্য কোনো সমস্যা হবে না।’
তাইজুলকে কেন কানপুরে দেখতে চান মাঞ্জরেকার তার ব্যাখ্যাও তিনি দিয়েছেন, ‘টার্নিং পিচে তাইজুল আসলে ভারতকে তারা বিপদে ফেলে দিতে পারে। ভারতে খেললে আসলে আপনি চাইবেন না ৩ পেসার খেলাতে। গ্রিন টপে খেললেও ৩য় বা ৪র্থ দিনে গিয়ে পিচ টার্ন করবে। ২ জন পেসারই যথেষ্ট। তাইজুলের ফেরা উচিত (একাদশে)।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘কারণ সাকিবকে দেখে মনে হচ্ছে সে ব্যাটিং অলরাউন্ডার হিসেবে খেলতে চায়। ফলে এক পেসার কমিয়ে এক স্পিনার বেশি খেলানো দরকার। ভারত এটা হয়ত পছন্দ করবে না, তারা চাইবে বাংলাদেশ বেশি পেসার খেলাক।’
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ