শিরোনাম
শুক্রবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

জমজমাট প্রচারণায় স্বাস্থ্যবিধি উধাও

রফিকুল ইসলাম রনি, নারায়ণগঞ্জ থেকে

জমজমাট প্রচারণায় স্বাস্থ্যবিধি উধাও

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় উধাও স্বাস্থ্যবিধি। করোনার তৃতীয় ঢেউ ওমিক্রন ঠেকাতে গতকাল থেকে সরকারিভাবে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু এর কোনো প্রভাব পড়েনি নাসিক নির্বাচনে। সিটি ভোটে হেভিওয়েট দুই প্রার্থী আওয়ামী লীগের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী এবং স্বতন্ত্র অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খোন্দকারসহ সাতজন মেয়র প্রার্থী এবং কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচারণায় এমন চিত্র চোখে পড়েছে। বিশাল বিশাল শোডাউন, জমজমাট প্রচারণা-মিছিলে ভরপুর ছিল বন্দরনগরী নারায়ণগঞ্জ।

গতকাল আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন ১৫ নম্বর ওয়ার্ড দেওভোগ এলাকা থেকে। এখানে দেখা গেছে, আইভীর কর্মী-সমর্থক ও দলীয় নেতা-কর্মীর অধিকাংশের মুখে মাস্ক ছিল না। প্রচারণায় নেতা-কর্মীর ঢল নামে। ব্যান্ডপার্টি, ঢাক-ঢোল ও নৌকা নিয়ে নেচে-গেয়ে প্রচারণা চালান নেতা-কর্মীরা। একইভাবে বিএনপি থেকে অব্যাহতি পাওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার নগরীর ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কিনারপুল ড্রেজার অধিদফতরের সরকারি কোয়ার্টার এলাকা থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। এরপর যান ২ নম্বর রেলগেট এলাকায়। এ দুই এলাকার প্রচারণাতে অংশগ্রহণকারী কর্মী-সমর্থকের মুখেও ছিল না কোনো মাস্ক। গায়ে গা লাগিয়ে হুমড়ি খেয়ে কে কার আগে দৌড়াবে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

দেওভোগ এলাকায় নির্বাচনে নৌকার পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেওয়া আওয়ামী লীগ কর্মী আবদুল্লাহ হেল বাকী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘নাসিক নির্বাচন আমাদের জন্য উৎসব। পুরো সিটিতে নৌকার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সে কারণে নৌকার প্রার্থী আইভী আপা যেখানেই যাচ্ছেন, সেখানেই গণজোয়ার সৃষ্টি হচ্ছে। এই গণজোয়ারই প্রমাণ করে ১৬ জানুয়ারি নৌকার পক্ষে ভোট বিপ্লব হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না, এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আর মাত্র দুই দিন আমরা প্রচারণায় অংশ নিতে পারব। আসলে সভা-সমাবেশ সরকারিভাবে নিষিদ্ধ করা হলে নির্বাচনী আমেজে কিছুটা ভাটা পড়েছে। নিজের মুখে মাস্ক নেই কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পকেটে রয়েছে।’ এরপর তিনি মুখে মাস্ক পরেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূরের পক্ষে নির্বাচনে অংশ নেওয়া আজিজুল হক বলেন, ‘এই সিটির মানুষ পরিবর্তন চায়। আইভীর বিরুদ্ধে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূরের পক্ষে মানুষের ঢল নেমেছে। সে কারণে কিছুটা স্বাস্থ্যবিধি মানতে পারছেন না কেউ কেউ।’ আজিজুল হকের মুখেও মাস্ক ছিল না। নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূরের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট এ টি এম কামাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছি। নির্বাচন কমিশন থেকেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে। আমরা সেটা মানার চেষ্টা করছি। কিন্তু গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সেটা ঠেকাতে পারছি না।’ তিনি অভিযোগ করেন, আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার চেষ্টা করলেও আমাদের প্রধান প্রতিপক্ষ সরকারি দলের প্রার্থী ও তার কর্মী-সমর্থকরা কেউ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন না।

নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি, নৌকার প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর নির্বাচন মনিটরিং সেলের অন্যতম সদস্য আবদুল হাই বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছ থেকে নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ পেয়েছি।  কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আমাদের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মেনে চলা সম্ভব হচ্ছে না।  তবে আমরা সতর্ক আছি।’

এক নজরে

আয়তন : ৭২.৪৩ বর্গকিলোমিটার

সাধারণ ওয়ার্ড : ২৭টি

সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড : ৯টি

মোট ভোটার : ৫ লাখ ১৭ হাজার ৩৬১ জন

পুরুষ ভোটার : ২ লাখ ৫৯ হাজার ৮৪৬ জন

নারী ভোটার : ২ লাখ ৫৭ হাজার ৫১১ জন

মোট ভোট কেন্দ্র : ১৯২টি

ভোট কক্ষ : ১ হাজার ৩৩৩টি

মেয়র প্রার্থী : ৭ জন

সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী : ১৪৮ জন

সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী : ৩২ জন

আইনশৃঙ্খলা  রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবেন : প্রায় ৬ হাজার

ভ্রাম্যমাণ আদালত : ২৮

পর্যবেক্ষক : ৪২ জন

সর্বশেষ খবর