রোবটটি দিয়ে ভাইরাস সংক্রমিত কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শে না গিয়েও তাকে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি যেমন ওষুধ, খাদ্য সরবরাহ করা যাবে। এর সেন্সরের সামনে রোগীর মাথা রাখলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণকারী মনিটরে দেখা যাবে। এতে বিশেষ ক্যামেরা, মাইক্রোফোন ও স্পিকার সংযুক্ত করা ছিল...
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সেবার জন্য রোবট ‘ক্যাপ্টেন সেতারা বেগম’ তৈরি করেছিলেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) একদল সাবেক শিক্ষার্থী। রোবটটি রোগীর পাশে গিয়ে শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয়, চিকিৎসকের পরামর্শ পৌঁছানোসহ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে নিয়ে আসতে সক্ষম ছিল। ২০২০ সালে এটি তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে সেটি হারিয়ে গেছে। রোবটটি তৈরির উদ্যোক্তাদের একজন প্রকৌশলী শাহিদা আফরিন জানিয়েছেন, করোনার সময় তারা রোবটটি তৈরি করেছিলেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সেটির পরীক্ষামূলক ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছিলেন। সে সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের অনুমতি দেয়নি। পরে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে সেটির গবেষণা চালানো হয়। সেখান থেকে ইতিবাচক রিপোর্ট আসে। শাহিদা আরও বলেন, ‘সরকারি সহযোগিতা পাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম আমরা।
সেটিও পাওয়া যায়নি। আরও রোবট তৈরি বা উৎপাদনে যেতে অর্থ লাগবে। আমরা চেষ্টা করেছিলাম। আইসিটি মন্ত্রণালয়ের উদ্ভাবনী তহবিল থেকেও সহযোগিতা পাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। আবেদনপত্রও দিয়েছিলাম। তারা সহযোগিতা করেনি। শেষ পর্যন্ত আমাদের প্রজেক্টটা (উদ্যোগটা) আর এগোয়নি।’ রুয়েট সূত্রে জানা যায়, রুয়েটের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বাংলাদেশ’-এর ৭ সদস্য দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে তিন মাসের চেষ্টায় রোবটটি বানিয়েছিলেন। বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন সেতারা বেগমের নামানুসারে নারীর অবয়বে তৈরি রোবটটির নাম রাখা হয়েছিল ‘ক্যাপ্টেন সেতারা বেগম’। এটি ৫-১০ কেজি ওজন বহন করতে সক্ষম এবং টানা এক থেকে দেড় ঘণ্টা কাজ চালিয়ে যেতে সক্ষম ছিল। রুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক বশির আহমেদ জানান, করোনা আক্রান্ত রোগীর কাছে না গিয়ে ওষুধ সরবরাহ ও তথ্য সংগ্রহের কাজে রোবটটি তৈরি করা হয়েছিল। হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে যন্ত্রটি বড় ভূমিকা রাখত। রোবটটি চিকিৎসক ও নার্সদের সহযোগী হিসেবে কাজ করতে পারত। চিকিৎসক তার কক্ষে বা অন্য কোথাও বসে কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রোবট নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন। তবে সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এটি এখন হারিয়ে গেছে। উদ্ভাবক দলের সদস্য ফারজাদুল ইসলাম বলেন, ‘ভাইরাস সংক্রমিত কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শে না গিয়েও তাকে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি যেমন ওষুধ, খাদ্য সরবরাহ করা যাবে। এর সেন্সরের সামনে রোগীর মাথা রাখলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণকারী মনিটরে দেখা যাবে। এতে বিশেষ ক্যামেরা, মাইক্রোফোন ও স্পিকার সংযুক্ত করা ছিল। যার মাধ্যমে রোগীর সঙ্গে যোগাযোগ ও তথ্য আদান প্রদান করা যাবে। ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে যে কোনো স্থান থেকে একে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব ছিল।’