মৎস্য চাষকে সহজ করতে ২০২১ সালে একটি যন্ত্র উদ্ভাবন করেন চুয়াডাঙ্গার উদ্ভাবক আহমেদুল কবীর উপল। নাম দেন, ‘পন্ডগার্ড’। উদ্ভাবনের পর থেকে নিজ এলাকার কয়েকটি জলাশয়ে পরীক্ষামূলক ব্যবহার করা হয় যন্ত্রটির। তাতে ইতিবাচক ফলও মেলে। কিন্তু পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে খামার পর্যায়ে পৌঁছায়নি। তবে থেমে যাননি উদ্ভাবক। বর্তমানে ধীরগতিতে চলছে যন্ত্রটির আধুনিকায়ন। বাজারজাতেও রয়েছে প্রতিবন্ধকতা। এখন যন্ত্রটিতে নতুন নতুন ফিচার সংযোজনের কাজ করছেন তিনি। ‘পন্ডগার্ড’ মূলত মাছের খামারের নিরাপত্তায় ব্যবহার করা যাবে। বাড়িতে বসেই দূরের মৎস্য প্রকল্পে করা যাবে নজরদারি। ফলে কমে আসবে শ্রমিক নির্ভরতা। খরচ সাশ্রয়ের পাশাপাশি বাড়তি নিরাপত্তা দেবে যন্ত্রটি। উদ্ভাবক আহমেদুল কবীর উপল বলেন, ‘প্রথম পর্যায়ে যন্ত্রটিতে আইপি ক্যামেরা, ব্যাটারি, সোলার প্যানেলসহ বেশ কিছু যন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এসবের সমন্বয়ে তৈরি যন্ত্রটি একাধিক মৎস্য প্রকল্পে পরীক্ষামূলক ব্যবহার করা হয়েছে। নিজের সক্ষমতা ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে যন্ত্রটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেওয়া যায়নি।
নতুন প্রজন্মের যে ‘পন্ডগার্ড’ আসতে চলেছে তাতে স্মার্ট সেন্সর সংযোজনের মাধ্যমে জলাশয়ে তাৎক্ষণিক অনুপ্রবেশ শনাক্ত হবে এবং ব্যবহারকারীকে সতর্ক করা হবে। সময়মতো ও পরিমাণ অনুযায়ী মাছকে খাদ্য সরবরাহের কাজও করবে যন্ত্রটি। পাশাপাশি পানির মান পরীক্ষার জন্য তাপমাত্রা, পিএইচ, অক্সিজেন ও অ্যামোনিয়ার পরিমাণ তত্ত্বাবধান করতে পারবে যন্ত্রটি। এতে মাছচাষে ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যাবে। মোবাইল অ্যাপ বা ওয়েব ইন্টারফেসের মাধ্যমে ব্যবহারকারী সহজে যন্ত্রটি পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। স্থানীয় ভাষায় (যেমন- বাংলা) যাতে নির্দেশনা দিতে পারে বা নিয়ন্ত্রণ করা যায় সেটা নিয়েও কাজ চলছে। উপল বলেন, ‘মৎস্য খামারের নিরাপত্তা বিধানে ‘পন্ডগার্ড’ ব্যবহারে সরকারি বা স্থানীয় প্রশাসনের অংশীদারিত্বের আওতায় আনা গেলে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে। এ ধরনের যন্ত্রের চাহিদা আমাদের দেশে এখনো কম। আগামীতে আমাদের এ ধরনের যন্ত্রের ওপরই নির্ভরশীল হতে হবে।’