যদি সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি ও সহযোগিতা পাওয়া যায় তাহলে ছেলের স্বপ্ন পূরণ হবে। স্থানীয়রা জানান, আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে আলমগীর তার প্রতিভা বিকশিত করতে পারছেন না
অভাবের সংসার। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার স্বপ্ন পূরণ না হলেও দিনাজপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলের আলমগীর ইসলামের লক্ষ্য পূরণ থেমে থাকেনি। অনলাইন ও ইউটিউব থেকে ধারণা নিয়ে প্রায় ৩-৪ বছর ধরে বিভিন্ন মডেলের বিমান তৈরি করে উড্ডয়নের চেষ্টা করেন। অবশেষে ২০২৪ সালে সফল হন তিনি। বিমান তৈরি ও সেটি উড্ডয়নের পর সাড়া ফেলে দেন। দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার খামারপাড়া ইউপির ভান্ডারদাহ গ্রামের নুরল মেম্বারপাড়ার যুবক আলমগীর ইসলাম। তাঁর তৈরি বিমানটি প্রায় এক কিলোমিটার দূরত্বে আধাঘণ্টা উড়তে পারে। স্থানীয় খেলার মাঠে ছোট বিমান উড্ডয়ন দেখতে ভিড় করেন আশপাশের গ্রামের মানুষ। খানসামার ভান্ডারদাহ গ্রামের আবদুল মজিদ ও জাহানারা বেগম দম্পতির ছোট ছেলে আলমগীর ইসলাম। ২০১৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিকেই থেমে যায় তার পড়াশোনা। বাড়ির কাজের পাশাপাশি চুক্তিভিত্তিক শ্যালোমেশিন দিয়ে পানি দেওয়া ও বিভিন্ন কাজ করেন তিনি। তিন ভাইয়ের মধ্যে ছোট তিনি। প্রাইমারি স্কুলে পড়ার সময় থেকেই বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস পণ্য তৈরির কাজে সময় ও অর্থ ব্যয় করেছেন। গত ৩-৪ বছর ধরে বিভিন্ন মডেলের বিমান তৈরি করে উড্ডয়নের চেষ্টার পর সফল হন। এর আগে অনেক বিমান তৈরি করেছেন, ভেঙেছেন। আবার নতুন করে তৈরি করেছেন। বিমানটি ২০২৩ সালে ডিসেম্বরে চূড়ান্তভাবে তৈরি করে ২০২৪ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ হয়। এরপর বাড়ির পাশে খেলার মাঠে পরীক্ষামূলকভাবে বিমানটি উড্ডয়ন করলে এলাকাজুড়ে হইচই পড়ে যায়।
বাবা-মা আবদুল মজিদ ও জাহানারা বেগম জানান, ‘ছোটবেলা থেকেই সে বিভিন্ন প্রকার যন্ত্র তৈরির কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তার উপার্জিত অর্থ দিয়ে সে এসব তৈরি করে। যদি সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি ও সহযোগিতা পাওয়া যায় তাহলে ছেলের স্বপ্ন পূরণ হবে।’ স্থানীয়রা জানান, ‘আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে আলমগীর তার প্রতিভা বিকশিত করতে পারছে না।’ বিমান নির্মাতা আলমগীর ইসলাম জানান, ‘প্রথমে প্রায় ১২ হাজার টাকা দিয়ে তৈরি এই ছোট বিমানের মূল বডি ককশিট দিয়ে তৈরি করেছেন। এ ছাড়া ট্রান্সমিটার, রিসিভার, ব্যাটারি, শক্তির জন্য ব্রাসলেস মোটর এবং ছোট ফ্যান ও চাকা রয়েছে। একটি রিমোট দিয়ে বিমানটি আকাশে উড়িয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলার স্বপ্ন ছিল বিমান তৈরির, সেটি পূরণ হয়েছে। তবে আমার একটি ল্যাপটপ ও আর্থিকভাবে সক্ষমতা থাকলে এই ছোট বিমানটি আরও উন্নত করা যেত।’