সিলেটে গত কয়েকদিন ধরে টানা খরতাপে মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত। এরকম পরিস্থিতি শনিবার দুপুরে নামে প্রশান্তির বৃষ্টি। কিন্তু বৃষ্টির সময়ে সিলেটের তিন উপজেলায় পৃথক বজ্রপাতে নারীসহ ৬ জন নিহত হয়েছেন। জেলার জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলায় এসব ঘটনা ঘটেছে।
নিহতরা হলেন- জৈন্তাপুর উপজেলার জৈন্তাপুর ইউনিয়নের আগফৌদ গ্রামের নুরুল হকের ছেলের নাহিদ আহমদ (১৩), একই উপজেলার ভিত্রিখেল বরবন্দ গ্রামের কালা মিয়ার ছেলে আবদুল মন্নান মনই (৪৫), কানাইঘাট উপজেলার লক্ষ্মীপ্রসাদ ইউনিয়নের কেওটিহাওরের কালা মিয়া (২৮), কানাইঘাট পৌর এলাকার দলইমাটি এলাকার নুর উদ্দিন (৬০), গোয়াইনঘাটের ভিত্তিখেল হাওর গ্রামের রাজ্জাক মিয়ার স্ত্রী রুকসানা বেগম (৪৭) ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় নিজামুল হক (২১)।
জানা গেছে, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জৈন্তাপুর উপজেলার সারিঘাট এলাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতের শিকার হন নাহিদ আহমদ। তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। একই সময়ে উপজেলার ভিত্রিখেল বরবন্দ গ্রামে নিজ জমিতে চাষাবাদের সময় বজ্রপাতের শিকার হন মন্নান।
পরে স্থানীয়রা তাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন। জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালিক রুমাইয়া এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে শনিবার বিকাল ৪টার দিকে কানাইঘাট উপজেলার লক্ষ্মীপ্রসাদ ইউপির কেওটিহাওরে মাছ ধরছিলেন কালা মিয়া। এ সময় বজ্রপাত হলে তিনি হাওরেই লুটিয়ে পড়েন।
পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রায় একই সময়ে কানাইঘাট পৌর এলাকায় মাঠে কাজ করার সময় নুর উদ্দিনও বজ্রপাতের কবলে পড়ে মারা যান।
কানাইঘাট থানার ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ উদ্ধার করে আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
এর আগে বেলা সোয়া একটার দিকে গোয়াইনঘাট উপজেলার ভিত্তিখেল হাওরে বজ্রপাতে রুকসানা বেগম নামে এক নারী নিহত হন। তিনি নিজ বাড়ির পাশে কাজ করার সময় বজ্রপাতের শিকার হন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোয়াইনঘাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘নিহতের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা হিসেবে দেওয়া হয়েছে। এর আগে বেলা একটার দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ইছাকলস ইউনিয়নের পুটামারা (পশ্চিম পাড়া) গ্রামে বজ্রপাতে নিহত হন নিজামুল হক। নিজামুল বাড়ির পাশের হালছাবড়া হাওর থেকে হাঁস তাড়িয়ে বাড়িতে নিয়ে আসছিলেন। এসময় বজ্রপাত হলে তিনি গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ বদিউজ্জামদান।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল