চট্টগ্রামে গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে ১০৭ জন। ওই বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত ছিল ১৪ হাজার ৮৭ জন। ওই বছর জুন থেকে বাড়তে থাকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা এবং কমতে শুরু করে অক্টোবরের দিকে। বিপরীতে চলতি বছরে গত ৭ মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ছিল ৩৯৬ জন। চলতি মাসের তিনদিনে নতুন আক্রান্ত হয়েছে ২১ জন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অন্যান্য বছরে জুন জুলাইতে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও চলতি বছরে আগস্ট-সেপ্টেম্বর থেকে বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে নগরীর ডেঙ্গুর হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত এলাকাগুলোতে বিশেষ নজরদারির পরামর্শ সংশ্লিষ্টদের।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, বৃষ্টি থামার পর মশা বাড়ে। জমে থাকা পানিসহ বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গুবাহী এডিস মশা জন্মায়। এ সময়টাতে ডেঙ্গু রোগী বাড়তে শুরু করে। সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। আক্রান্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। তিনি বলেন, আমরা ডেঙ্গু নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করেছি এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ জন রোগীর মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭ জন, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ২ জন ভর্তি হয়েছেন। এ ছাড়া একজন রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে বলে জানায় সিভিল সার্জন কার্যালয়। এসময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত কেউ মারা যাননি। এ বছর চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৪১৭ জন। এ ছাড়া এ বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের।
গত বছর চট্টগ্রামে ১৪ হাজার ৮৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। এ সময়ে ১০৭ জন মারা যান। ওই বছরের জুনে ২৮৩ জন, জুলাইয়ে ২ হাজার ৩১১ জন, আগস্টে ৩ হাজার ১১ জন, সেপ্টেম্বর মাসে সবচেয়ে বেশি ৩ হাজার ৮৯২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিলেন। এরপর অক্টোবর মাসে ২ হাজার ৭৭৯ জন, নভেম্বরে ১ হাজার ২৫৪ জন ও ডিসেম্বরে ৩৭৫ জন আক্রান্ত হয়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৬৯ জন, ফেব্রুয়ারিতে ২৫ জন, মার্চে ২৮ জন, এপ্রিলে ১৮ জন, মে’তে ১৭ জন, জুনে ৪১ জন ও জুলাই মাসে ১৯৮ জন আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জুন থেকে ডেঙ্গু মৌসুম শুরু হয়; সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যায়। চলতি ববছল বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি শুরু হয়েছে জুলাই মাস থেকে। যার কারণে বৃষ্টি হওয়ার পর বিভিন্ন স্থানে পানি জমে ডেঙ্গু মশার জন্ম হবে। যার কারণে এখন থেকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে সবাইকে। গত বছর আক্রান্ত চট্টগ্রামে ডেঙ্গু রোগীদের ৬০ শতাংশ পাঁচটি এলাকায় বাস করে। যেগুলোকে গবেষকরা হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। সেগুলো হলো, নগরীর বাকলিয়া, চকবাজার, কোতোয়ালি, ডবলমুরিং ও বায়েজিদ বোস্তামী। আর নগরীর বাইরে কর্ণফুলী, পটিয়া, সীতাকুণ্ড, হাটহাজারী উপজেলা। তাই ডেঙ্গু মশা জন্ম নেওয়ার আগে থেকে এসব এলাকায় বিশেষ নজরদারি রাখতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই