আজ বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারসহ পার্বত্য তিন জেলায় জামায়াতের আহূত সকাল-সন্ধ্যা হরতালকে কেন্দ্র করে নগর ও নগরের বাইরের বিভিন্ন স্থানে নাশকতার আশঙ্কা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জামায়াত হরতাল চলাকালে মিছিলসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোয় সভা-সমাবেশ করার প্রস্তুতিও নিয়েছে। তবে যে কোনো ধরনের নাশকতা এড়াতে সিএমপিসহ চট্টগ্রামের প্রশাসন প্রস্তুত এবং সতর্ক অবস্থানে থাকবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা যায়। দলীয় নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদ ও আজকের হরতালের সমর্থনে গতকাল মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ করেছে জামায়াত। এদিকে হরতালের আগেই নাশকতার আশঙ্কায় গতকাল চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজ এবং বাকলিয়ায় অভিযান চালিয়ে জামায়াত-শিবিরের কয়েকজন নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে। সোমবার নগর জামায়াতের আমিরসহ ২১ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতারের পর গতকাল দুপুরে কারাগারে পাঠানো হয় এবং একই সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পুলিশের সাত দিনের রিমান্ডের আবেদনের ওপর শুনানির জন্য ১৮ মে সময় নির্ধারণ করেছেন আদালত। মহানগর হাকিম রহমত আলীর আদালত এসব আদেশ দেন। চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মুহাম্মদ রেজাউল মাসুদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সাবেক সংসদ সদস্য শামসুল ইসলামসহ ২১ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। তাদের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদনের শুনানি হবে ১৮ মে। এর আগে গতকাল বিকাল পৌনে ৩টার দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে তাদের কোতোয়ালি থানা থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মহানগর হাকিম রহমত আলীর আদালতে নেওয়া হলে জামায়াত নেতাদের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (দক্ষিণ) মনজুর মোরশেদ বলেন, জামায়াতের ডাকা হরতালে সম্ভাব্য নাশকতা এড়াতে জামায়াত-শিবিরের দুর্গ চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজে বিশেষ অভিযান চালানো হয়েছে। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম ও মহসিন কলেজ দুটি হচ্ছে ছাত্রশিবির নিয়ন্ত্রিত। হরতালে নাশকতা মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবেই অভিযান চালানো হয়েছে।
অভিযানে সন্দেহভাজন তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে এবং বাকলিয়া থেকে শিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ, গাড়ি ভাঙচুরসহ যত নাশকতার ঘটনা ঘটেছে এর অধিকাংশই নাজমুলের পরিকল্পনায় এবং নেতৃত্বে হয়েছে। দীর্ঘদিন তিনি আত্দগোপনে ছিলেন।
চট্টগ্রাম নগর জামায়াতের প্রচার বিভাগের তারিফ চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর আমিরসহ ২১ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে এবং হরতালের সমর্থনে নগরসহ থানায় থানায় বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ করা হয়েছে। আজ হরতাল চলাকালে নগরের বিভিন্ন পয়েন্টে মিছিল-সমাবেশ করা হবে। এইচএসএসি পরীক্ষার্থীদের হরতালের আওতামুক্ত রাখা হবে।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অব্যাহত হত্যা, গুম, খুন, অপহরণ ও গ্রেফতার অভিযানের প্রতিবাদে আজ সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। গতকাল এক বিবৃতিতে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে খুন ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের জন্য ১৬ মে শুক্রবার 'দোয়া দিবস' পালনের কর্মসূচি দেওয়া হয়।