হাসান হাফিজকে তাঁর জন্মদিনে আন্তরিক অভিনন্দন ও অজস্র শুভেচ্ছা। হাসানের অনেক গুণ। প্রধান গুণ দায়িত্বকে সহজভাবে নেওয়া এবং সহজে বহন করা। তাঁর মূল কর্মক্ষেত্র দুটি; সাংবাদিকতা ও সাহিত্যচর্চা। উভয় ক্ষেত্রে তিনি অত্যন্ত সহজ এবং খুবই স্বাভাবিকভাবে কাজ করছেন। তাঁর সাফল্য ঈর্ষণীয়। দেখতে পাচ্ছি, সমসাময়িকদের অনেককেই তিনি ছাড়িয়ে, ছাপিয়ে উঠেছেন। সাহিত্যের সঙ্গে সাংবাদিকতার বিরোধটা খুবই স্বাভাবিক। সাহিত্য স্থায়ী ও গভীর; সাংবাদিকতা তাৎক্ষণিক ও অগভীর। সাংবাদিক হিসেবে হাসানকে কাজ করতে হয়েছে তাৎক্ষণিকতার ভিতরেই, কিন্তু সেখানেও তিনি বিশিষ্ট।
তাঁর আছে সংবাদের তাৎপর্য বোঝার এবং সংবাদকে সাহিত্যিকভাবে উপস্থাপন করার দক্ষতা। এটা সব সাংবাদিকের থাকে না এবং না থাকলে কাজটা যান্ত্রিক হয়ে পড়ে। হাসানের কাজ কখনোই যান্ত্রিক নয়। সব সময়েই প্রাণবন্ত। কারণ তাঁর ভিতরে একজন কবি আছে। সাহিত্যক্ষেত্রে তাঁর আরও কাজ আছে, কিন্তু মূলত তিনি একজন কবি। তাঁর কবিতায় কল্পনার সঙ্গে বক্তব্যের সজীব মিলন ঘটেছে। বক্তব্যের ক্ষেত্রে তাঁর সামাজিক অঙ্গীকার মোটেই অস্পষ্ট নয়, কিন্তু সেই অঙ্গীকার কাব্যিক হয়ে উঠেছে কল্পনা-শক্তির ব্যবহারে। রয়েছে সংযম। শব্দকে তিনি ভালোবাসেন, কিন্তু শব্দ তাঁকে মোহাচ্ছন্ন করতে পারেনি। সাংবাদিকতা তাঁর কবিতাকে দুর্বল করতে পারত, কিন্তু পারেনি, বরং সাংবাদিকতাই সমৃদ্ধ হয়েছে কবির হস্তক্ষেপে। হাসান হাফিজের আরেকটা গুণ কর্মস্পৃহা। আমি তাঁকে কখনো অলস হিসেবে দেখিনি। কাজের বাইরে তাঁকে ভাবা কঠিন। তাঁর কর্মস্পৃহা ও দায়িত্ব পালনের দক্ষতা স্থায়ী হোক জন্মদিনে এই কামনাটা বিশেষভাবে রইল।