প্রত্যেককেই সাধ্যমতো মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত : ববিতা
এখন আর অভিনয়ে ব্যস্ততা নেই চিত্রনায়িকা ববিতার। ডিসিআইআইয়ের (ডিসট্রেসড চিলড্রেন অ্যান্ড ইনফ্যান্ট ইন্টারন্যাশনাল) শুভেচ্ছা দূতের দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য ও কানাডা ভ্রমণ করছেন। ডিসিআইআই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এ সংস্থার হয়ে ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় সম্মেলনেও যোগ দিয়েছিলেন ববিতা। সেখানে স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নের মাধ্যমে অধিকারবঞ্চিত শিশুদের উন্নয়নের নানা উপায় তুলে ধরেন। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে অধিকারবঞ্চিত নারী ও শিশুদের নিয়ে কথা বলেছিলেন তিনি। এ ছাড়া স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে এবং মহিলাদের এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতেও কাজ করছেন। ববিতা বলেন, ‘দেশের প্রত্যেক নাগরিককেই নিজের সাধ্যমতো মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত। শুধু অর্থ দিয়েই হয় না, যাদের অর্থ নেই তারা শারীরিক কিংবা মানসিকভাবেও গরিব-অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারেন। মানুষকে বিভিন্ন বিষয়ে সচেতন করতে পারেন। এতে অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি মানুষের চিন্তাভাবনা ও ধ্যান-ধারণারও উন্নতি ঘটে।’
সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে নিসচা শুরু করেছি : ইলিয়াস কাঞ্চন
‘সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই আমি নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন শুরু করি। আমার আপনজন দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। আমার মতো অন্য কারও আপনজন যেন অকালে দুর্ঘটনায় মারা না যান, সে ভাবনা থেকেই কাজটি শুরু করি। যত দিন বেঁচে থাকি এ আন্দোলন করেই যাব। আমার এ আন্দোলনের ফলে যদি একটি প্রাণ বেঁচে যায়, তাতে আনন্দের সীমা থাকে না। আমার এ আন্দোলনের সঙ্গে সরকারও একাত্মতা প্রকাশ করেছে। এ আন্দোলন নিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছতে পেরেছি বলে মনে করি। মানুষের কাছে থাকা অনেক বেশি আনন্দের। এ আনন্দ আমি উপলব্ধি করতে পারি, কারণ আমি আপনজন হারিয়েছি। আমি মনে করি, পৃথিবীর যে কোনো মানুষই তার নিজ অবস্থান থেকে সামাজিক বিভিন্ন কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে পারেন। আপন হারানোর বেদনায় কেউ জর্জরিত না হোক এটাই কামনা।’
মানবসেবার মতো আনন্দ আর নেই : রোজিনা
জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা রোজিনাকে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকতে দেখা যায়। যদিও তিনি প্রবাসে থাকেন, তথাপি ছুটিতে দেশে এলে বিভিন্ন বৃদ্ধাশ্রমে যান। পথশিশুদের সহযোগিতা করতেও দেখা যায় তাকে। নিজের গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ীতে মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা এবং মাদ্রাসা গড়ার কাজও করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, মানুষের সেবা করার মতো আনন্দ আর কিছুতে নেই।
ভেজালমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত করতে কাজ করছি : আমিন খান
‘আমরা ভেজালমুক্ত খাদ্য চাই’ নামে একটি সংগঠন নিয়ে অনেক আগে থেকে কাজ শুরু করেছেন জনপ্রিয় চিত্রনায়ক আমিন খান। ভেজাল খাদ্য পরিহারের পাশাপাশি যারা খাদ্যে ভেজাল দেয় তাদের সচেতন করার জন্যই এ সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। সময় পেলে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন করার জন্য ছুটে যান এই নায়ক। এর কার্যক্রম প্রসঙ্গে আমিন খান বলেন, ‘যারা খাদ্যে ভেজাল দেন তারা হয়তো সামান্য অর্থ লাভের আশায় তা করেন। কিন্তু ক্ষণিক সময়ের মুনাফা লাভের আশায় তারা সমাজের কত বড় ক্ষতি করেন তা হয়তো জানেন না। যারা খাদ্যে ভেজাল দেয় আমি ঠিক তাদেরই বোঝাতে চাই, যে খাদ্যে আপনি ভেজাল মেশান সে খাদ্য যদি আপনার সন্তান বা আপনার স্ত্রী কিংবা বাবা-মা খান এবং মৃত্যুবরণ করেন তখন আপনার কেমন লাগবে? ঠিক এভাবে চিন্তা করে খাদ্যে ভেজাল দেবেন না।’ আমিন খানের এ সংগঠনের সঙ্গে জড়িত আছে মার্সেল গ্রুপ। দেশের প্রতিটি জেলা ও থানা পর্যায়ে এ সংগঠনের শাখা খুলতে চান বলে জানিয়েছেন এবং সেভাবেই কাজ করছেন এ অভিনেতা।
সামাজিক দায়বোধ থেকেই কাজ করছি : মৌসুমী
অভিনয় আর পরিবার সামলানোর ফাঁকে মানবহিতৈষী কাজেও আত্মনিয়োগ করেছেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী। দেশের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য কিছু করার তাগিদে ইউনিসেফের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন এই তারকা। শিশুশ্রম, জন্মনিয়ন্ত্রণ, বাল্যবিয়ে, শিশুদের প্রতি সহিংসতা রোধ, শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য, এইচআইভি/এইডস, বস্তিতে বসবাসরত শিশুদের সামাজিক সুরক্ষা বিষয়ে প্রচার, জনসচেতনতা তৈরি এবং উন্নয়নমুখী সমাজ ও সামাজিক প্রথা পরিবর্তনের জন্য ইউনিসেফের সঙ্গে এক জোট হয়ে কাজ করছেন এই নায়িকা। মৌসুমী বলেন, ‘মানুষ মানুষের জন্য। যার যেভাবে সাধ্য আছে সেভাবেই মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত। বিশেষ করে সমাজে যারা উঁচু পর্যায়ে রয়েছেন তাদের দায়বোধ অনেক বেশি। এ বিষয়ে যদি আমরা একটু সচেতন হই তাহলে আমাদের দেশ ঠিকই সোনার বাংলাদেশ হয়ে গড়ে উঠবে।’
অসহায়ত্ব মোচনই আমার লক্ষ্য : অনন্ত
চিত্রনায়ক ও প্রযোজক অনন্ত জলিলের বদান্যতার কথা কারও অজানা নয়। কোনো অসহায় ব্যক্তি তার কাছে গিয়ে কখনো খালি হাতে ফিরে আসেননি। দানবীর হিসেবেই তিনি পরিচিত।
দেশের প্রাকৃতিক বিপর্যয় বন্যার সময় যেমন ছুটে যান বন্যাকবলিত অঞ্চলের দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে, তেমনই তার সুসজ্জিত অফিসে বসেও অসহায়দের নিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেন। তার প্রত্যক্ষ অর্থায়নে দুটি এতিমখানা ও একটি বৃদ্ধাশ্রম পরিচালিত হয়।
এ ছাড়া ঢাকার সাভারের কাছাকাছি একটি জায়গায় দেশের বৃহৎ বৃদ্ধাশ্রমও গড়ে তুলছেন তিনি। অনন্ত বলেন, দুনিয়াটা ক্ষণস্থায়ী। পৃথিবীর সব মানুষ মানুষেরই জন্য। তাই যারা বিত্তবান ও সচ্ছল তাদের প্রত্যেকে যদি অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়ায় তাহলে অসহায় শব্দটি আর থাকবে না। তাই মানুষের অসহায়ত্ব মোচনে আমি কাজ করে যাচ্ছি।
মানুষের মুখে হাসি ফোটানো খুবই আনন্দের : কনকচাঁপা
কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপা। গাওয়ার পাশাপাশি জনকল্যাণমূলক কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন বেশ আগে থেকে। একাধিক এতিমখানা, পথশিশুদের স্কুল ও বৃদ্ধাশ্রমসহ বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত তিনি। এ ছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা শীতে খেটে খাওয়া নিরীহ মানুষের পাশে দাঁড়ান এই শিল্পী। অনেক শিক্ষার্থী আছেন যারা মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও পড়ালেখার খরচ জোগাতে পারেন না, তাদের পাশেও দাঁড়ান তিনি। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই এসব কাজ করেন বলে জানিয়েছেন কনকচাঁপা।
তিনি বলেন, ‘মানুষের মুখে হাসি ফোটানো যে কত আনন্দের তা শুধু তারাই বুঝবেন, যারা সুখে-দুঃখে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। যত দিন বাঁচি মানুষের পাশে দাঁড়াব। এ জীবনে আমার আর পাওয়ার কিছু নেই। বাস্তব এ জীবন নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। আল্লাহ আমাকে যত দিন বাঁচিয়ে রাখেন ততদিন যেন মানুষের সেবা করতে পারি, এটাই কামনা করি।’
নিজের দায়িত্ববোধ থেকেই এ কাজ করি : জেমস
নগর বাউল জেমস। জনপ্রিয় এই ব্যান্ড তারকা বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে অসহায় মানুষের জন্য কাজ করে থাকেন। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ইউএনডিপি ও ইউনিসেফ। সংস্থাগুলো সাধারণ নারী ও শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করেন।
এ ছাড়া জেমসের ‘দুষ্ট ছেলের দল’ নামে একটি ফ্যান ক্লাব রয়েছে। সেখান থেকে বছরের বিভিন্ন সময়ে সাধ্যের মধ্যে সামাজিক সহায়তামূলক কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়ে থাকেন। শীত মৌসুমে শীতার্তদের সহযোগিতা করেন। এ ছাড়াও অনেক শিল্পীর বিপদের সময় কনসার্টের মাধ্যমে অর্থ তুলে তাদের সহায়তাও করে থাকেন। তিনি বলেন, ‘নিজের দায়িত্ববোধ থেকেই কাজগুলো করে থাকি। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারলে নিজের কাঁধের বোঝাটাও একটু হালকা হয়। আগামীতেও এ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’