স্বৈরাচার শেখ হাসিনার জুলুমের প্রতিবাদে গত জুলাই মাসে ছাত্ররা তাদের ন্যায়সঙ্গত দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছিল। সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ কয়েকজন মন্ত্রী উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে ছাত্র আন্দোলন দমনের অপচেষ্টা করেছিলেন। সব জুলুম-নির্যাতনের প্রতিবাদে মা তার দেড় মাসের শিশুকে কোলে নিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন। শিশু থেকে শুরু করে ৯০ বছরের বয়স্ক মানুষও ছাত্রদের আন্দোলনে শামিল হন। হাজারো ছাত্র-জনতার প্রাণ বিসর্জনের মাধ্যমে দেশের ঐতিহাসিক পরিবর্তন ঘটে। গণ অভ্যুত্থান পরবর্তী স্বাধীন বাংলাদেশে আমরা ওইসব শহীদকে স্মরণ করছি, যাদের তাজা রক্তের বিনিময়ে আমরা শান্তি-স্বস্তির পরিবেশে বসবাস করতে পারছি। তারা জাতিকে স্বস্তির নিঃশ্বাস এনে দিয়েছেন। যারা আন্দোলনে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন আল্লাহ তাদের শাহাদাতের মর্যাদা দান করুন। আল্লাহতায়ালা তাদের পরিবারগুলোকে এই শোক বহন করার তৌফিক দান করুন, তাদের উত্তম সবর করার তৌফিক দান করুন। যারা আহত হয়েছেন তাদের আল্লাহতায়ালা সুস্থতার নিয়ামত দান করুন।
গতকাল বিকালে পিরোজপুর উপজেলার ৭ নম্বর শংকরপাশা ইউনিয়নের নামাজপুরে ইউনিয়ন জামায়াত কর্তৃক আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে এসব কথা বলেন পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী। ইউনিয়ন সভাপতি মো. মনির হেসেন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পিরোজপুর জেলা আমির অধ্যক্ষ তাফাজ্জাল হেসেন ফরিদ, পৌর আমির মাওলানা আবদুর রাজ্জাক, সদর উপজেলা আমির মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান, বাংলাদেশ শ্রমিককল্যাণ ফেডারেশনের পিরোজপুর জেলা সভাপতি সিদ্দিকুল ইসলাম, চালনা নামাজপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা রেজাউল করিমসহ স্থানীয় ছাত্র ও যুব নেতৃবৃন্দ।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা মাসুদ সাঈদী বলেন, খুনি হাসিনা ক্ষমতার লোভে জেদের বশবর্তী হয়ে সুস্পষ্ট গণহত্যা চালিয়েছেন। সরকার শুধু স্থলভাগেই নয়, আকাশ থেকেও গুলি চালিয়ে নিজ দেশের নাগরিকদের হত্যা করেছে। স্বাধীন দেশে পরিচালিত এ গণহত্যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা বর্তমান সরকারের কাছে দাবি জানাই, খুনিদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। যিনি সুনির্দিষ্ট অপরাধ করেছেন, তার বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে এবং তাকে শাস্তি পেতে হবে। গণহত্যার বিচার করতে হবে এবং গত সাড়ে ১৫ বছরে যেসব অপরাধ করা হয়েছে তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে।
মাসুদ সাঈদী বলেন, দেশটা আমাদের সবার। ছাত্রদের আন্দোলনে আপামর জনতা অংশ নিয়েছেন। এ আন্দোলনের সব রাজনৈতিক দল, শ্রেণি-পেশার মানুষ শরিক হয়েছেন। প্রবাসী ভাইয়েরাও দেশবাসীর সঙ্গে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন। আন্দোলন করতে গিয়ে তারা নিগৃহের শিকার হয়েছেন। দেশের স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব ও অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে আওয়ামী লীগ। খুনি হাসিনা অসংখ্য মায়ের কোল খালি করে দিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন। এখন গণবিপ্লব-উত্তর এই দেশকে নতুন করে সাজাতে হবে। এখন এই দেশকে সত্যিকারের সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করতে হবে। তাই আসুন, জামায়াতে ইসলামীর হাতকে শক্তিশালী করুন। জামায়াতকে দেশ গঠনের সুযোগ দিন।
