যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থি সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিসের মধ্যে তুমুল তর্কযুদ্ধ হয়েছে। এ সাক্ষাৎকার নেন ব্রেট বেয়ার। অভিবাসন এবং লিঙ্গ রূপান্তরজনিত অস্ত্রোপচার প্রসঙ্গে কথা বলার সময় দুজনের মধ্যে তর্ক বেধে যায়। কমলা প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় সঞ্চালককে বারবারই মাঝপথে কথা বলতে হয়েছে। কমলা তখন তাঁকে বলেন, ‘আমাকে শেষ করতে দিন।’ সূত্র : রয়টার্স স্থানীয় সময় বুধবার আধা ঘণ্টার এ সাক্ষাৎকারের একটি উল্লেখযোগ্য অংশে কমলার কাছে তাঁর গত সপ্তাহে করা বিভিন্ন মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। প্রসঙ্গত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগ মুহূর্তে আলোচনায় দেশটির অভিবাসন সমস্যা। সীমান্তে অনুপ্রবেশকারীদের ঢল নিয়ে পাল্টাপাল্টি দোষারোপও করেন কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। সঞ্চালক বেয়ার ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলাকে অবৈধ অভিবাসন নিয়ে প্রশ্ন করলে সাক্ষাৎকারটি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের শাসন মেয়াদে মেক্সিকো সীমান্ত পার হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল। যদিও সাম্প্রতিক মাসগুলোয় এ সংখ্যা নাটকীয়ভাবে কমেছে।
জবাবে কমলা হ্যারিস বলেন, জো বাইডেন-কমলা হ্যারিস প্রশাসন সীমান্ত পারাপার নিয়ে একটি বিল প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু ট্রাম্পের পরামর্শে রিপাবলিকানরা বিলটি ঠেকিয়ে দেন। সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পকে জটিলতা তৈরিতে পারদর্শী হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছেন কমলা। আর ট্রাম্প বলেছেন, দেশের ভিতরের শত্রুরা চীন, রাশিয়ার চেয়েও বেশি বিপজ্জনক। সাক্ষাৎকারে জো বাইডেন মানসিকভাবে সুস্থ বলেও দাবি করেন কমলা হ্যারিস। অন্যদিকে অবৈধ অভিবাসী ইস্যুতে জো বাইডেন ও কমলা হ্যারিসের ব্যর্থতাকে দায়ী করেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প ডেমোক্র্যাটদের ‘স্বৈরাচার ও ক্ষতিকর’ বলে সম্বোধন করেন। এ সময় প্রেসিডেন্ট হলে ‘সজীব ও নতুন নতুন ধারণা’ নিয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন কমলা। তিনি বলেন, ‘আমি নেতৃত্বের নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব করছি।’ ট্রাম্প অভ্যন্তরীণ শত্রুর বিরুদ্ধে সামরিক শক্তি ব্যবহারের যে হুমকি দিয়েছেন, তা নিয়ে তাঁকে আক্রমণ করেন কমলা। ট্রাম্প সম্পর্কে ডেমোক্র্যাটিক এ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বলেন, ‘তিনিই মার্কিন জনগণকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য এবং হেয় করেন। তিনিই অভ্যন্তরীণ শত্রু সম্পর্কে কথা বলেন।’ প্রসঙ্গত, ট্রাম্পের প্রচারশিবির দ্রুতই কমলার সাক্ষাৎকারের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা সাক্ষাৎকারটিকে ‘লাইনচ্যুত’ বলে উল্লেখ করেছে। ট্রাম্পের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট বিবৃতিতে বলেন, ‘কমলা খেপে গিয়েছিলেন এবং আত্মপক্ষ সমর্থন করে কথা বলেছেন। মার্কিন নাগরিকরা যেসব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, তার দায় তিনি আবারও এড়িয়ে গেছেন।’ খবরে বলা হয়, ফক্সের সঙ্গে এটি কমলা হ্যারিসের প্রথম সাক্ষাৎকার ছিল। একই সঙ্গে হোয়াইট হাউসের দৌড়ে থাকা কমলার জন্য সাক্ষাৎকারটি গুরুত্বপূর্ণও। কারণ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর তিন সপ্তাহেরও কম সময় বাকি আছে এবং এখন পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হওয়ার আভাস আছে। সে অচলাবস্থা ভেঙে এগিয়ে যেতে চাইছেন কমলা হ্যারিস।