টানা কয়েকদিন মেকআপ, রোদের মধ্যে ঘোরাঘুরির কারণে ঠিকমতো ত্বকের যত্নও নেওয়া হয়ে ওঠেনি। ক্লান্তির কারণে ত্বক পরিষ্কার না করেই ঘুমিয়ে যাওয়া এবং রিচ ফুড খাওয়ার কারণে প্রভাব পড়েছে ত্বকের ওপর। হারানো উজ্জ্বলতা ও কোমলতা ফিরিয়ে আনতে আজ থেকেই ত্বকের যত্নে লেগে যাওয়া উচিত। তবে এর উপশম লুকিয়ে আছে রান্নাঘরেই। আসুন, জেনে নেই কীভাবে তৈরি করবেন।
মুখত্বকের যত্ন
আমাদের মুখত্বক যেহেতু বেশ নরম এবং কোমল, তাই কড়া কোনো প্যাক ব্যবহার না করাই ভালো। এতে অন্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। মুখের ট্যান দূর করার কয়েকটি কার্যকর উপায় নিচে দেওয়া হলো।
► রোদে পোড়া ত্বকের জন্য খুব ভালো টকদই। রোদ থেকে ঘরে ফিরে টকদই মুখে ম্যাসাজ করতে পারেন, তাহলে ট্যান ত্বকে বসে যাবে না। দুই টেবিল চামচ পেঁপের পেস্ট ও দুই টেবিল চামচ টকদই একটি পাত্রে মিশিয়ে তৈরি করতে পারেন এই প্যাক। ত্বকে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। পেঁপে ত্বকের মরা কোষ দূর করে এবং দই উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
► ট্যানিং দূর করতে চাইলে কিংবা ত্বক উজ্জ্বল করে তুলতে ভরসা করতে পারেন পেঁপের ওপর। পেঁপে ত্বক নরম এবং উজ্জ্বল করে তুলতে অব্যর্থ। আধকাপ পাকা পেঁপের ক্বাথের সঙ্গে এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। মধুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বককে নরম এবং যৌবনোচ্ছ্বল রাখতে সাহায্য করবে। ত্বকের ট্যানও দূর হবে এবং ত্বক নরমও হবে।
► টমেটোর রস ট্যান পড়া ত্বকের জন্য খুব ভালো। এক টেবিল চামচ মসুর ডাল গুঁড়া, এক টেবিল চামচ টমেটোর রস এবং এক চা-চামচ অ্যালোভেরা জেল একসঙ্গে মিশিয়ে ত্বকের রোদে পোড়া অংশে লাগান। আধঘণ্টা রেখে ঠান্ডা পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
► শুধু ট্যানের জন্যই নয়, বরং রোদে পোড়া ত্বকের উপশম হিসেবেও কাজে লাগাতে পারেন দুধ। এর সঙ্গে ব্যবহার করুন স্ট্রবেরি। চার-পাঁচটা স্ট্রবেরি এবং ২ টেবিল চামচ দুধ একসঙ্গে ব্লেন্ড করে নিন। ত্বক পরিষ্কার করে এই প্যাক মুখে লাগাতে পারেন। স্ট্রবেরি প্রাকৃতিক এক্সফোলিয়েটর হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি ত্বক উজ্জ্বল এবং কোমল করতেও উপকারী।
► ত্বকের বিভিন্ন দাগছোপ দূর করতে যেমন পাতিলেবু কার্যকর, তেমনই ট্যানিংয়ের প্রতিকার হিসেবেও পাতিলেবু অব্যর্থ। এতে থাকা অ্যাসিড ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। পাতিলেবু স্লাইস করে কেটে ট্যান পড়া অংশে আলতো করে ঘষুণ। কয়েক মিনিট রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
হাত-পায়ের ট্যান
মুখত্বকের ট্যানের তুলনায় হাত-পায়ের ট্যানিং অনেক বেশি হয়। কারণ, আমরা বরাবরই হাত-পায়ের ট্যান নিয়ে অতটা মাথা ঘামাই না। ফলে ট্যান ত্বকে বসতে শুরু করে। তাই হাত-পায়ে জমে থাকা জেদী ট্যান দূর করতে হলে নিয়মিত স্ক্রাবিং এবং প্যাক ব্যবহার করা প্রয়োজন।
► ট্যানিং কমাতে বেসনের জুড়ি নেই। বছরের পর বছর ধরে রোদে পোড়া ত্বকের উপশম হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে বেসন। বেসন, তেল, অল্প পরিমাণ চালের গুঁড়া এবং পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে হাত ও পায়ের ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। ১৫ মিনিট পর পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে ফেলুন।
► সমপরিমাণ টমেটোর রস, আলুর রস এবং শসার রস মিশিয়ে রেখে দিন। পাতিলেবু অর্ধেক করে কেটে তার ওপরে খানিকটা চিনি দিয়ে গোসলের আগে প্রতিদিন হাত-পায়ে স্ক্রাবিং করুন। চিনি গলে গেলে আলু-টমেটোর রসে কটন প্যাড ডুবিয়ে তা ব্যবহার করুন। সব রস শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
খেয়াল রাখুন
উচ্চমাত্রার ক্ষারীয় সাবান বা ডিটারজেন্ট পাউডার নিয়ে কাজ করতে হলে গ্লাভস ব্যবহার করুন। বাইরে বেরোলে অবশ্যই ফুলহাতা পোশাক পরুন। পা ভালোভাবে ঢেকে থাকে, এমন জুতা বেছে নিন। রাসায়নিক উপাদানসমৃদ্ধ লোশন, ক্রিম বা অন্যান্য সামগ্রী এড়িয়ে চলুন।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ