রাজধানীতে এখনো লক্কড়ঝক্কড় বাসেই চলছে যাত্রী পরিবহন। বেশির ভাগ যানেরই উঠে গেছে রং, নেই লুকিং গ্লাস। পেছনের গ্লাসও ভাঙা। ধুলা-ময়লা যেন নিত্যসঙ্গী আসনগুলোর। ফিটনেস নেই তবু সড়কে দিব্যি চলছে লক্কড়ঝক্কড় এসব গণপরিবহন। আইনের তোয়াক্কা না করে প্রশাসনের নাকের ডগায় চলাচলের অযোগ্য এসব গাড়ি দিয়ে চুটিয়ে ব্যবসা করছেন একশ্রেণির পরিবহন মালিক। সেবা তো দূরের কথা, যাত্রীরা ন্যূনতম নিরাপদ নন এসব ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহনে। বিভিন্ন সময় এসব পরিবহনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হলেও বন্ধ করা যায়নি চলাচল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সড়ক থেকে ফিটনেসবিহীন ও লক্কড়ঝক্কড় বাস সরিয়ে নিতে সরকারের ইচ্ছা আছে কি না আগে সেটা দেখতে হবে। যদি ইচ্ছা থাকে তাহলে সম্ভব। সড়ক থেকে লক্কড়ঝক্কড় বাস সরিয়ে কোম্পানিভিত্তিক বাস নামিয়ে রুট ভিত্তিতে পরিবহন ব্যবস্থা চালু করলে গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আসবে। রাজধানীতে চলছে ফিটনেসবিহীন ও লক্কড়ঝক্কড় বাস। বিভিন্ন সময় উদ্যোগ নিলেও সেটি কাজে আসেনি। সর্বশেষ গত ২ এপ্রিল বিআরটিএ থেকে বলা হয়েছে, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতিকে ৩১ মের মধ্যে রংচটা এবং ফিটনেসবিহীন বাস সরাতে হবে। এরপর ১ জুন ফিটনেসবিহীন ও লক্কড়ঝক্কড় বাসের বিরুদ্ধে অভিযানে নামার ঘোষণা দেয় সংস্থাটি। ঘোষণা অনুযায়ী কয়েক দিন অভিযান পরিচালনা হয়। এরপর বন্ধ হয়ে যায় বিআরটিএর রুটিনভিত্তিক কাজ। কিছুদিন পর সড়কে আবার পুরনো রূপে ফিরে আসে লক্কড়ঝক্কড় বাস। বিআরটিএর তথ্যমতে, চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত রাজধানীতে মোট পরিবহন নিবন্ধিত হয়েছে ২১ লাখ ৯১ হাজার ৭৮৩টি। এর মধ্যে গত অক্টোবর পর্যন্ত ফিটনেসবিহীন মোটরযানের মোট সংখ্যা ৪ লাখ ৪৪ হাজার ৬৯৩টি। রাজধানীতে বাসের সংখ্যা ৪২ হাজার ৪৫৪টি। যার মধ্যে ২৪ হাজার ২৬টি বাসের ফিটনেস নেই। এ ছাড়া মিনিবাস ১১ হাজার ৭৮৮টি, ট্রাক ৬৬ হাজার ২৬টি, কার্গো ভ্যান ২ হাজার ২৩৪টি, কাভার্ড ভ্যান ১০ হাজার ৯১২টি, হিউম্যান হলার ১৪ হাজার ৫৫০টি ও ৮২ হাজার ৮০৫টি পিকআপ ফিটনেস ছাড়াই চলছে। একই সঙ্গে স্পেশাল পারপাস ভেহিক্যাল ৬ হাজার ১১৮টি, ট্যাংকার ২ হাজার ৩৬৮টি, প্রাইভেট কার ৭৬ হাজার ৫৮টি, জিপ ১৬ হাজার ১৫৩টি ও ৩২ হাজার ১৫৬টি মাইক্রোবাসের ফিটনেস নেই। সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা যায়, ঢাকা মহানগরীতে চলমান বাস-মিনিবাসের মধ্যে প্রায় ৬৮ শতাংশের দরজা-জানালা ভাঙা। বসার সিট ছেঁড়া। ৮০ শতাংশ বাস-মিনিবাসের সিটে দুই স্তরের কাঠামো (স্টিল ও ফোম/কাপড়) নেই। আর যেসব বাসে স্টিলের কাঠামোর ভিতর ফোম বা কাপড়ের স্তর রয়েছে সেগুলোরও বেশির ভাগই ছেঁড়া। তা ছাড়া রাজধানীর অধিকাংশ বাসের পেছনের সিগন্যালিং লাইটগুলো অকেজো। কিছু কিছু বাস-মিনিবাসে পাখা থাকলেও বেশির ভাগই নষ্ট। রাজধানীতে চলাচলকারী প্রায় ৫০ হাজার বাস-মিনিবাসের মধ্যে অর্ধেকের বেশির অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল (২০ বছর) পেরিয়ে গেছে। সব মিলিয়ে রাজধানীতে চলাচলকারী ৬৫ শতাংশ বাস-মিনিবাসই ফিটনেসবিহীন। ২০১০ সালে রাজধানীতে ২০ বছরের অধিক পুরনো বাস-মিনিবাস চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়। ওই সময় একবার অভিযান চালানো হলে অনেকেই পুরনো বাস-মিনিবাস বন্ধ করে রাখেন। কিন্তু অভিযান শেষে আবারও পুরনো, ফিটনেসবিহীন বাস-মিনিবাস নামানো হয়। ডিটিসিএর তথ্যানুযায়ী, রাজধানীতে ঢাকা মেট্রোপলিটন রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট কমিটির অনুমোদিত রুটের সংখ্যা ৩৮৬টি। এর মধ্যে সর্বশেষ মাঠপর্যায়ে বিআরটিএ তদন্ত করে মাত্র ১২৮টি রুটে বাস-মিনিবাস চলাচলের প্রমাণ পেয়েছে। বর্তমানে ১২৮টি রুটে ৫ হাজার বাস-মিনিবাস চলাচল করে। এর মধ্যে রুট পারমিট ছাড়াই চলাচল করছে ১ হাজার ৬৪৬টি পরিবহন। জানতে চাইলে পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক ড. সামছুল হক বলেন, বিগত সরকার টাকার বিনিময়ে চালক ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি সড়কে যেভাবে নামিয়েছে এটা খুব ন্যক্কারজনক। এ অবৈধ চালকরা রাস্তায় বুক ফুলিয়ে গাড়ি চালিয়েছে। ঘটিয়েছে অনেক দুর্ঘটনা। আর এগুলোর সঙ্গে যুক্ত ছিল বিআরটিএর একদল দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ফিটনেসহীন গাড়িগুলো অন্যান্য ফিটনেস গাড়ির জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ। ঢাকায় পথচারীরা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এবং এ ধরনের ফিটনেসহীন গাড়ি তাদের ঝুঁকি বাড়ায়। এ বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে পুরনো গাড়ি (যেসব গাড়ির অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল শেষ হয়েছে) অপসারণ করা হবে। একই সঙ্গে রাজধানীতে পণ্যবাহী ট্রাক খোলা অবস্থায় যেন প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বায়ুদূষণ রোধে এমন কর্মপরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
শিরোনাম
- বন্ধ কারখানা চালুর দাবিতে শ্রমিকদের মানববন্ধন
- ৮১ দেশি পর্যবেক্ষকের সঙ্গে ইসির সংলাপ ২৫ নভেম্বর
- ‘ফ্যামিলি ম্যান থ্রি’: মনোজ নয়, জয়দীপের সিজন?
- টিকটক ইউজারদের জন্য চালু হলো টাইম অ্যান্ড ওয়েল-বিয়িং ফিচার
- পটুয়াখালীতে হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন
- বাংলাদেশের কাল ব্রুনাই চ্যালেঞ্জ
- বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের ভাতা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে : তারেক রহমান
- গাইবান্ধায় ফিস্টুলা নির্মূলে কাজ করছে ল্যাম্ব
- শাহবাগে ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার্থীদের অবস্থান, যান চলাচল বন্ধ
- সার কারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের দাম বাড়ল
- গণতন্ত্রের পথ থেকে বিচ্যুত হওয়ার সুযোগ নেই : আমীর খসরু
- চট্টগ্রাম কারাগারে কয়েদির মৃত্যু
- নিউক্যাসল বাংলাদেশ কমিউনিটির ১০ বছর পূর্তি উদযাপন
- বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী কানাডা
- শিশুদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে শিক্ষার পরিবেশ আনন্দদায়ক হতে হবে : গণশিক্ষা উপদেষ্টা
- রাজনীতিতে সহনশীলতা না থাকায় সমাজে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে : রিজভী
- শেরপুরের চরাঞ্চলে ব্রিজের অভাবে চরম ভোগান্তি
- মাদকের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আওয়াজ তুলতে হবে: এ্যানি
- রাতে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিএনপির বৈঠক
- নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে শপিং কমপ্লেক্সে অটোরিকশা, আহত ২
লক্কড়ঝক্কড় বাস চলছেই
দেখার কেউ নেই, চরম ঝুঁকিতে অন্যান্য পরিবহন ও পথচারী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট ভার্সন
টপিক
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের ভাতা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে : তারেক রহমান
৪০ মিনিট আগে | জাতীয়
‘সিইও অব দ্য ইয়ার–২০২৫’ পুরস্কারে ভূষিত সিটি ব্যাংকের এমডি মাসরুর আরেফিন
১ ঘণ্টা আগে | কর্পোরেট কর্নার