যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকি রাজ্যের একটি হাসপাতালে ঘটে গেল এক বিস্ময়কর ঘটনা। সেখানে অঙ্গদানকারী ব্যক্তি অপারেশন টেবিলে হৃদযন্ত্র অপসারণের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে জেগে ওঠেন।
নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদন অনুসারে, এই ঘটনার মূল চরিত্র ছিলেন টমাস টি.জে. হুভার নামে এক ব্যক্তি। অতিরিক্ত মাদক গ্রহণের ফলে তার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। ২০২১ সালের অক্টোবরে কেনটাকির ব্যাপ্টিস্ট হেলথ রিচমন্ড হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা তাকে ব্রেন ডেড ঘোষণা করেন এবং তার অঙ্গগুলো সংগ্রহের পরীক্ষা শুরু করেন।
তবে যখন তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়, তখন চিকিৎসা কর্মীরা দেখতে পান, তিনি জীবনের কিছু লক্ষণ প্রদর্শন করছেন। অপারেশন থিয়েটারের কর্মী নাতাশা মিলার জানান, ‘তিনি নড়াচড়া করছিলেন, এমনকি তার চোখ থেকে অশ্রুও ঝরছিল। এটা দেখে আমরা বিস্মিত হয়ে যাই।’
এই অপ্রত্যাশিত ঘটনায় অপারেশন রুমের দুই চিকিৎসক অপারেশনে অংশগ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান। কিন্তু তার থেকেও বেশি বিস্ময়কর ছিল যখন কেনটাকি অর্গান ডোনর অ্যাফিলিয়েটস (KODA)-এর কেস সমন্বয়কারী নতুন চিকিৎসকদের দিয়ে অঙ্গগ্রহণের কাজ চালিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন।
নিকোলেটা মার্টিন নামে এক KODA কর্মী তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারেন, হুভার হৃদযন্ত্রের পরীক্ষা চলাকালে আগেই জীবনের লক্ষণ দেখিয়েছিলেন। তিনি জানান, সেইদিন সকালে যখন তার হৃদযন্ত্রের পরীক্ষা করা হচ্ছিল, তখনও তিনি নড়ছিলেন।
রেকর্ড অনুযায়ী, সেই সময় তাকে কেবল অবশ করে ফেলা হয় এবং অঙ্গ সংগ্রহের প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা হয়। অন্যদিকে, হুভারের বোন ডোনা রোরার জানান, তার ভাইকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট থেকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি চোখ খুলেছিলেন। কিন্তু চিকিৎসকরা এটাকে প্রতিক্রিয়া হিসেবে ব্যাখ্যা করেছিলেন এবং বলেছিলেন এটি জীবিত থাকার ইঙ্গিত নয়।
কিন্তু পরে পুরো প্রক্রিয়াটি বাতিল করা হয়। এই ঘটনার ফলে KODA দলের কয়েকজন সদস্য পদত্যাগ করেছেন। যদিও KODA কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে যে, তারা জীবিত একজন রোগীর অঙ্গ সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছে।
কেনটাকি রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল বিষয়টি তদন্ত করছে এবং ফেডারেল হেলথ রিসোর্সেস অ্যান্ড সার্ভিসেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনও এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
বর্তমানে হুভার তার বোনের সঙ্গে বসবাস করছেন। তিনি সম্পূর্ণরূপে সুস্থ হলেও এখনও তার স্মৃতি, হাঁটাচলা এবং কথা বলার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল