একসময় ফসলের খেত, ঝোপ-ঝাড়সহ বিভিন্ন স্থানে অজস্র পরিবেশবান্ধব ঘাস ফড়িং দেখা যেত। ক্ষতিকর কীট-পতঙ্গ খেয়ে ফসল বাঁচিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করা ঘাসফড়িংয়ের বিচরণ আগের চেয়ে কমে গেছে।
খেতসহ বিভিন্ন চাষাবাদে রাসায়নিক সার ও বিভিন্ন প্রকার কীটনাশক ব্যবহারের কারণে বিলুপ্তির পথে যাচ্ছে ঘাস ফড়িং। অথচ ঘাস ফড়িং শুধু পতঙ্গ নয়, এটি ক্ষতিকর পোকার প্রজাতি ধ্বংস করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে।
এ দেশের অধিকাংশ মানুষ গ্রামে শৈশবের দিন অতিবাহিত করেছেন। দুরন্ত শৈশবে পাখি ধরে পোষ মানার চেষ্টা করেছেন অনেকে। আবার সেই পোষা পাখিটি প্রভু ভক্ত হয়ে, শেখানো কথা আয়ত্ব করারও নজির রয়েছে। বিশেষ করে শালিক পাখিকে খুব সহজেই পোষ মানানো যায়। বাচ্চা শালিক পাখির প্রিয় খাদ্য ঘাস ফড়িং। শুধু শালিক নয় প্রায় সবপাখিই ফড়িং খাদ্য হিসেবে খেতে পছন্দ করে। ফড়িং মানে সার্বক্ষণিক তিড়িং-বিড়িং করে বেড়ানো পত্যঙ্গের নাম। শখের পোষা পাখিটি দ্রুত বড় করে তুলতে এ মাঠ ও মাঠ ফড়িংয়ের পেছনে ছোটাছুটির অভিজ্ঞতা অনেকের আছে। কিন্তু কালের বির্বতনে মানুষের অতিরিক্ত খাদ্য উৎপাদনের জন্য জমিতে রাসায়নিক ও বিভিন্ন প্রকার কীটনাশক ব্যবহারে ঘাস ফড়িং প্রায় বিলুপ্ত হতে চলেছে।
বিরলের মোকসেদপুর গ্রামের কৃষক সফিকুল ইসলামসহ অনেকে জানান, কয়েক বছর আগে মাঠে গেলেই ছোট বড় নানান আকৃতির ফড়িং দেখা যেত, এখন আর তেমন ফড়িং চোখে পড়ে না।
বিরল কৃষি অফিসের উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার শাহজাহান আলী জানান, ঘাস ফড়িং শুধু পতঙ্গ নয়, এটি ক্ষতিকর পোকার প্রজাতি ধ্বংস করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। কিছু কিছু ফড়িং মাজরা পোকা, গান্ধি পোকার মতো ক্ষতিকর কীটের ডিম খেয়ে ফেলে, এতে ক্ষতিকর পোকার বংশ বিস্তার রোধ হয়। যেহেতু ফড়িং ঘাসজাতীয় লতা পাতা খেয়ে বেঁচে থাকে তাই আবাদী জমিতে কীট-নাশকের ব্যবহারে বিষক্রিয়ায় ফড়িংয়ের প্রজাতি বিলুপ্ত হতে চলেছে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ