সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে দর্শনার্থী দম্পতির ওপর হামলা, মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে ঘটনার ১১ দিন পর কাস্টোডিয়ানসহ ১০ স্টাফের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার উপজেলার রূপপুর নতুনপাড়ার শাহনেওয়াজের স্ত্রী ছাবরিনা আক্তার সুইটি শাহজাদপুর আমলি আদালতে মামলাটি করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। আসামিরা হলেন- কাছারিবাড়ির কাস্টোডিয়ান হাবিবুর রহমান, গ্রন্থাগার পরিচালক শরীফুজ্জামান সরকার, বিদ্যুৎ ও বাগান পরিচালক সিরাজুল ইসলাম, মালি শফিকুল ইসলাম, কাউন্টার ও বাগান পরিচালক মজিবুর রহমান, নিরাপত্তা প্রহরী আবদুল মমিন, নুহ শেখ, বাবলু সরকার, আনিসুর রহমান ও রেজাউল। মামলার নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ৮ জুন বাদী তার স্বামী ও ভাতিজাকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে ঘুরতে যান। প্রবেশের সময় টিকিটের টাকা দিলেও কাউন্টার থেকে কোনো টোকেন দেওয়া হয়নি। বের হওয়ার সময় টোকেন দেখাতে বললে বাদী জানায় তাকে কোনো টোকেন দেওয়া হয়নি। তখন আসামিরা গালিগালাজ শুরু করেন। বাধা দিলে কাছারিবাড়ির গেট বন্ধ করে কাস্টোডিয়ানের নির্দেশে শাহনেওয়াজকে লোহার রড ও পাইপ দিয়ে মারধর করা হয়। ওই সময় ছাবরিনা আক্তারের শ্লীলতাহানি এবং তার গলায় থাকা সোনার চেইন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এরপর শাহনেওয়াজকে একটি কক্ষে আটকে রেখে আবারও মারধর এবং মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলা হয়। স্বজনরা এসে তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
এরপর শাহজাদপুর থানায় অভিযোগ দিলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দর্শনার্থীকে মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে ১০ জুন মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করা হয়। এ সময় কিছু লোক কাছারিবাড়িতে হামলা, অডিটোরিয়াম ভাঙচুর এবং স্টাফদের মারধর করে। এ ঘটনার পর কর্তৃপক্ষ কাছারিবাড়িতে দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ ঘোষণা করে। দুই দিন পর কাছারিবাড়ি খুলে দেওয়া হয়। হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় কাস্টোডিয়ান হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে ১১ জুন শাহজাদপুর থানায় মামলা করেন। এ মামলায় ইতোমধ্যে সেনাবাহিনী ও পুলিশের অভিযানে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনার তদন্তে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।