ভারতের নৌবাহিনীর বহরে আইএনএস হিমগিরি ও আইএনএস উদয়গিরি নামে দুটি রণতরি যুক্ত হয়েছে। গতকাল দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানে ওই দুই রণতরি নৌবাহিনীতে কমিশন করা হয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি নীলগিরি-ক্লাসের স্টিলথ রণতরি দুটি প্রোজেক্ট ১৭ আলফার (পি-১৭এ) অংশ। এর আগে, চলতি বছরের শুরুর দিকে দেশটির নৌবাহিনীর বহরে প্রথম রণতরি আইএনএস নীলগিরিকে যুক্ত করা হয়। হিমগিরি ও উদয়গিরি রণতরি প্রায় পুরোপুরি দেশীয় প্রযুক্তিনির্ভর। এই রণতরির ৭৫ শতাংশের বেশি সরঞ্জাম দেশে উৎপাদিত বলে দেশটির নৌবাহিনী জানিয়েছে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে প্রথমবারের মতো দুটি জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের তৈরি করা রণতরি একসঙ্গে কমিশন করা হয়েছে। দেশটির পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স ও মুম্বাইয়ের মাজাগন ডক শিপবিল্ডার্স ওই দুটি রণতরি তৈরি করেছে। দেশটির একাধিক সামরিক সূত্র বলেছে, নৌবাহিনীর অস্ত্রের বহরে একসঙ্গে দুই রণতরির কমিশনের মাধ্যমে ভারতীয় জাহাজ নির্মাণ সক্ষমতা ও প্রধান প্রতিরক্ষা কারখানাগুলোর পারস্পরিক সমন্বয়ের প্রতিফলন ঘটেছে। দেশটির সামরিক কর্মকর্তারা বলেছেন, নৌবাহিনীর বহরে নতুন করে দুটি রণতরি যুক্ত হওয়ায় বর্তমানে ভারত তিনটি ফ্রিগেটের একটি স্কোয়াড্রন পেল। এর মাধ্যমে দেশীয় শিল্প, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা আর আঞ্চলিক শক্তির ভারসাম্য ফুটে উঠেছে।
রণতরি উদয়গিরি ও হিমগিরিতে উন্নত প্রযুক্তির নকশা, স্টিলথ, অস্ত্র ও সেন্সর ব্যবস্থা ব্যবহার করা হয়েছে। এসব রণতরির মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ নৌ মিশন পরিচালনা করতে পারবে দেশটির নৌবাহিনী। নতুন দুই রণতরির কমিশনের মাধ্যমে নৌবাহিনীর যুদ্ধ-প্রস্তুতি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দেশটির সরকারি এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। দেশটির সামরিক সূত্রগুলো বলেছে, নীলগিরি-ক্লাসের রণতরি উদয়গিরি অত্যন্ত কম সময়ে নির্মাণ ও ভারতীয় নৌবাহিনীর বহরে কমিশন করা হয়েছে। ভারতীয় নৌবাহিনীর রণতরির নকশাকারক প্রতিষ্ঠান ওয়ারশিপ ডিজাইন ব্যুরোর (ডব্লিউডিবি) ১০০তম নকশাকৃত রণতরি আইএনএস উদয়গিরি। ভারতীয় নৌবাহিনীর বহরে তিন দশকেরও বেশি সময় নিয়োজিত থেকে সম্প্রতি অবসরে যাওয়া রণতরির নামে ওই দুই রণতরির নামকরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আইএনএস হিমগিরি ও আইএনএস উদয়গিরির প্রত্যেকটির পি-১৭এ ফ্রিগেটের ওজন প্রায় ৬ হাজার ৭০০ টন। উভয় জাহাজেই অতিরিক্ত অস্ত্র হিসেবে ভূপৃষ্ঠ থেকে ভূপৃষ্ঠে নিক্ষেপযোগ্য সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং সাবমেরিন-বিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবস্থা রয়েছে।