গাজীপুরের পাঁচ উপজেলায় মাঠজুড়ে শোভা পাচ্ছে সোনালি ধান। ইতোমধ্যে আগাম জাতের রোপা আমন ধান কাটা চলছে। জাতভেদে কাঁচা ধান বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা মণ দরে। ভালো ফলন ও মূল্য পেয়ে কৃষক বেশ খুশি।
জেলা কৃষি অফিস সূত্র বলছেন, এ বছর গাজীপুর জেলায় ৪২ হাজার ৮৬৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ হয়েছে। তার মধ্যে উফশী ৪০ হাজার ১৯০, হাইব্রিড ৮৯০ এবং স্থানীয় জাত ১ হাজার ৭৮৫ হেক্টর; যা থেকে ১ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। উপজেলাওয়ারি গাজীপুর সদরে ১০ হাজার ৬১৮, কাপাসিয়ায় ১১ হাজার ৬৩৫, শ্রীপুরে ১৩ হাজার ১৬০, কালিয়াকৈরে ৪ হাজার ৬২২ ও কালীগঞ্জে ২ হাজার ৮৩০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ হয়েছে। রোপা আমন ধানের আবাদ ও উৎপাদন বাড়াতে এ বছর জেলায় ৪ হাজার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মধ্যে বিনামূল্যে বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়েছে। রোপা আমন ও বোরোর মাঝখানে সরিষা আবাদের লক্ষ্যে স্বল্পজীবৎকালসম্পন্ন ব্রি ধান ৭১, ৭৫ এবং বিনা ধান ১৭ আবাদে কৃষককে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এ জাতগুলো শুরুতেই কর্তন হয়ে যাচ্ছে। বীজতলা তৈরি থেকে শুরু করে জমি প্রস্তুত, সুষম সার প্রয়োগ, বালাইদমন, সেচপ্রয়োগ, সঠিক সময়ে কর্তন ও বীজ সংরক্ষণের বিষয়ে কৃষককে সর্বদা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তা ছাড়া সরিষা, ভুট্টা, ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ শীতকালীন সবজি আবাদ চলছে।
কাপাসিয়ার চাঁদপুর ইউনিয়নের পাপলা গ্রামের কৃষক শারিকুল ইসলাম জানান, তিনি এবার ১ বিঘা জমিতে ব্রি ১০৩ জাতের রোপা আমন ধান চাষ করেছেন। এখনো ধান কাটা হয়নি। ফলন ভালো হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে ধান কাটতে পারবেন বলে জানান। ফলন ভালো হওয়ায় সামনের বছরও এ জাতের ধানই রোপণ করবেন।
গাজীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘এখানকার ভূমির ধরন বৈচিত্র্যময়। প্রায় ৫৮ হাজার হেক্টরে বোরো ও ৪৩ হাজার হেক্টরে রোপা আমন ধানের আবাদ হয়ে থাকে। উচ্চফলনশীল নতুন জাত আবাদে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করে যাচ্ছি। এ বছর প্রায় ৯০০ হেক্টরে হাইব্রিড জাতের ধানের আবাদ হয়েছে। উচ্চফলনশীল জাতের মধ্যে ব্রি ধান ৮৭, ৯৩, ৯৪, ১০৩; বিনা ধান ১৭ আবাদ বেড়েছে। আশা করা যাচ্ছে এ বছর ভালো ফলন কৃষক ঘরে তুলতে পারবেন।’