ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় আহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তরিকুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। সর্বশেষ এক্স-রে রিপোর্ট দেখে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেছেন, তরিকুলের ডান পা আড়াআড়িভাবে ভেঙেছে। ভাঙা পায়ে অস্ত্রোপচার লাগবে।
চিকিৎসক ড. সাঈদের পরামর্শে তরিকুলের পা, বুক, মেরুদণ্ডের এক্স-রেসহ সাতটি পরীক্ষা করানো হয় রাজশাহীর মেডিপ্যাথ নামক রোগ নির্ণয় কেন্দ্রে।
রিপোর্ট দেখে ড. সাঈদ জানান, তরিকুলের মেরুদণ্ডের হাড় পুরোপুরি ভাঙ্গেনি। বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শক্ত কোনোকিছুর আঘাতে এরকম হয়েছে। তরিকুল স্বাভাবিকভাবে বসতেও পারছেন না। এ বিষয়ে সঠিক কিছু এখনই বলা যাচ্ছে না। পায়ের অস্ত্রোপচার করতে হবে। তবে ক্ষত শুকানো ও ফোলা কমার আগে তা সম্ভব নয়।
তরিকুলের একাধিক সহপাঠী জানান, তরিকুলের অবস্থা আশঙ্কাজনক। রোগীর শারীরিক ও মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে চিকিৎসকের পরামর্শেই তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হচ্ছে। ঢাকায় কোনো একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। তবে কোন হাসপাতালে ভর্তি করা হবে তা জানাতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন তারা।
চিকিৎসা-ব্যয়ের বিষয়ে সহপাঠী মতিউর বলেন, এককভাবে কারো টাকায় তরিকুলের চিকিৎসা হচ্ছে না। বন্ধু-বান্ধব, ছাত্র-শিক্ষক, শুভাকাঙ্খি সবার সহযোগিতায় তার চিকিৎসা চলছে। আমরা ঢাকায় যাই, তারপর বাকি সব বলতে পারব। চিকিৎসা ব্যয়ের বিষয়ে তরিকুলের বোন ফাতেমা খাতুন একই কথা জানান।
উল্লেখ্য, ২ জুলাই সোমবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তরিকুলকে মারাত্মকভাবে আহত করেন। ওইদিন সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা পতাকা মিছিল বের করেছিলেন। মিছিলটি প্রধান ফটকের সামনে এলে ছাত্রলীগ হামলা করে। ভয়ে শিক্ষার্থীরা দৌড়াতে থাকেন। এ সময় মাটিতে পড়ে যান তরিকুল। তখন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা রামদা, লোহার রড, হাতুড়ি ও বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন তরিকুলকে।
বিডি-প্রতিদিন/ই-জাহান