রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, ‘ছাত্রলীগের নানাবিধ কর্মকাণ্ডে আমি বিব্রত হয়েছি। এটা স্বীকার করতে আমার কোনো কুণ্ঠা নেই। আমি নিজেই নানা সময়ে তাদের নানা কর্মকাণ্ডে জাতীয়ভাবে ঢাকা অথবা চট্টগ্রাম অথবা অন্যান্য জায়গাতে বিব্রত হয়েছি।’
সোমবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে (টিএসসিসি) ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শিল্পকর্ম প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় শোক দিবস উদযাপন পরিষদ রাবি চারুকলা অনুষদ আয়োজিত এই চিত্রকর্ম প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহান।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং ছাত্রলীগের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের রাজশাহী নানা দিক দিয়ে একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে বাংলাদেশের সর্ব ক্ষেত্রে। সেরূপভাবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসমাজ এবং ছাত্রলীগ তোমরা নতুন আলোক বর্তিকা নিয়ে সমাজকে জাগ্রত করবে, নতুনভাবে নতুন চেতনাকে ধারণ করবে। তোমরাই বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত বাংলাদেশের উন্নয়নে কাজ করবে।’
চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে মেয়র লিটন বলেন, ‘মানুষকে বোঝানোর নানা ধারা আছে এবং থাকবে। মানুষ সহজেই চিত্রকর্ম বোঝে। সহজে মানুষ বুঝতে পারে এমন চিত্রকর্মের মাধ্যমে কিন্তু সমাজের মানুষকে আন্দোলিত করে ঐক্যবদ্ধ করা সম্ভব। আমরা কি আমাদের ছেলেদের কাছে এ ধরনের কিছু আশা করতে পারি না? মাদক একটি সমাজকে কি করে শেষ করে দিচ্ছে এই রকম কোনো ছবি কি আঁকা যায় না? সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ বা ভ্রান্ত ধারণায় বিশ্বাসী হয়ে নিজের, পরিবারের এবং দেশের কত বড় ক্ষতি হয় এটাও তো তোমাদের কাছে জানা এবং সেই মেধা আছে। তোমাদের চিত্রকল্পে এটা ফুটিয়ে তোলা সম্ভব।’
নগরের নানা উন্নয়নের দিক তুলে ধরে মেয়র লিটন বলেন, ‘এ শহরের উন্নয়নের অনেক কাজ বাকি এবং নগর ও নাগরিকের সুবিধার অনেক কিছু বাকি। যা আমি করতে চেয়েছিলাম। ২০১৩ সালে এসে তা তছনছ হয়ে গেছে। পাঁচটি বছর আমাদের বাণের জলে ভেসে গেছে, পদ্মার পানির মতো, কচুরিপানার মতো ভেসে গেছে। এ পাঁচটি বছর কিছু হয়নি রাজশাহীতে। সারাদেশ এগিয়ে গেছে আর রাজশাহী পিছিয়ে গেছে। সেই রাজশাহীর দায়িত্ব আমি আবার আপনাদের এবং তোমাদের মাধ্যমে পেয়েছি। তাই আমি রাজশাহীর নাগরিকদের আধুনিক নাগরিক সুবিধা দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করতে চাই।’
এ সময় মেয়র লিটন রাজশাহীতে আর্ট গ্যালারি নির্মাণ, সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে এগিয়ে নিতে ড্যান্স বা ফোকসং (লোকসঙ্গীত), বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য পৃথক পৃথক অবকাঠামো নির্মাণ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
উদ্বোধকের বক্তব্যে রাবি উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। বাংলাদেশ বললে বঙ্গবন্ধু এসে যায় আর বাংলাদেশ বললে বঙ্গবন্ধুকেই বোঝায়। আর চারুকলা অনুষদ এমনই একটি আয়োজন করেছে। তার জন্য আমি চারুকলা অনুষদকে ধন্যবাদ জানাই।’
অনুষ্ঠানে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিদ্ধার্থ শংকর তালুকদার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা ও চৌধুরি মো. জাকারিয়া, টিএসসিসি পরিচালক অধ্যাপক হাসিবুল আলম প্রধান, সাবেক ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/ আব্দুল্লাহ সিফাত তাফসীর