পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় যৌক্তিক কারণ ছাড়াই প্রবেশপত্র কেড়ে নিয়ে সাবরিনা ইয়াসমিন নামের এক পরীক্ষার্থীকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার সকাল ১১ টার দিকে পরীক্ষা শুরু সময় নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগে এই ঘটনা ঘটে। ওই পরীক্ষার্থী কক্ষ থেকে বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান করে ঘটনার প্রতিবাদ জানান।
পরীক্ষার্থী সাবরিনা ইয়াসমিন অভিযোগ করে বলেন, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ থেকে স্নাতক শেষ করে একই বিভাগে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে আবেদন করি। নির্ধারিত ফি এবং যথাযত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আবেদন করলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবেদেনর প্রেক্ষিতে প্রভাষক পদে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রবেশপত্র ইস্যূ করে। যার ক্রমিক নং ১৮। নির্ধারিত দিন শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনে ১ নং গ্যালারী কক্ষে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি। যথারীতি আমাকে পরীক্ষার খাতা এবং প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করা হয়। আকস্মিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. প্রীতম কুমার দাসসহ দুইজন পরীক্ষক এসে আমার প্রবেশপত্র ও খাতা কেড়ে নিয়ে পরীক্ষা কক্ষ থেকে বের করে দেন।
পরীক্ষার্থী সাবরিনা ইয়াসমিন বলেন, আমি কারণ জানতে চাইলে তারা প্রভাষক পদে আমার আবেদনের যোগ্যতা নেই বলে জানান। এছাড়া ভিসি স্যারের নির্দেশ আছে বলেও তারা জানান। যোগ্যতা না থাকলেও কেন প্রবেশপত্র ইস্যূ করা হয়েছে এবং ভিসি স্যার কেন পরীক্ষা কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জানতে চাইলে তারা কোন প্রকার সদুত্তর দিতে পারেন নাই। তবে বার বার পরীক্ষা দেওয়ার অনুরোধ জানালেও তারা বিষয়টি কর্নপাত করেননি।
পরীক্ষার্থীকে বের করে দেওয়ার বিষয়ে পাবিপ্রবি’র প্রক্টর ড. প্রীতম কুমার দাস এ বিষয়ে বলেন, আমি শিক্ষক নিযোগ পরীক্ষা কমিটির সদস্য নই। কমিটির সদস্যরাই এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন, তবে তাকে ভুল করে প্রবেশপত্র দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
পরীক্ষার্থী সাবরিনা ইয়াসমিনের ভাই রেজাউল হক বলেন, আমার বোন অত্যান্ত মেধাবী, বিষয়টি ওই বিভাগের সকল শিক্ষক জানেন। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় তাকে আটকানোর খুব কঠিন হতো। কর্তৃপক্ষ মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে নির্ধারিত পরীক্ষার্থীদের নিয়োগ দিতেই নিয়োগ পরীক্ষার নাটক সাজিয়েছেন। এ কারণেই আমার বোনকে অত্যান্ত অপমানজনকভাবে পরীক্ষা কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
এদিকে পাবিপ্রবি’র নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগে প্রভাষক নিয়োগ পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে এক পরীক্ষার্থীকে বের করে দেওয়ার সময় কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, উৎকোচের বিনিময়ে নির্ধারিত পরীক্ষার্থীকে নিয়োগ প্রদানের কৌশলে কয়েকজন ড্যামী পরীক্ষার্থীদের দিয়ে নামমাত্র পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছেন। যেহেতু মেয়েটির সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ হয়নি তাই ভিসি স্যারের নির্দেশে এই কাজটি করা হয়েছে। তারা আরো বলেন, যেহেতু যে কোন মুহূর্তে বাতিল করার ক্ষমতা রাখেন স্যার, তাই এমনটি হয়েছে, তবে বিষয়টি ভিসি স্যারে দূরদর্শীতার অভাবের কারণে এমনটি হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তারা।
এ বিষয়ে পাবিপ্রবি’র প্রো-ভিসি ড. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমি ভাইভা বোর্ডে আছি বিষয়টি নিয়ে পরে কথা বলছি। তবে ভিসি ড. রোস্তম আলীর মুঠোফোনে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করে বন্ধ করে দেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল